আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ
আহলেহাদীছ আন্দোলন

 সাংগঠনিক বই সমূহ

  • গঠনতন্ত্র (ডাউনলোড লিংক)
  • কর্ম পদ্ধতি (ডাউনলোড লিংক)
  • ইহতিসাব (ডাউনলোড লিংক)
  • মানোন্নয়ন সিলেবাস (ডাউনলোড লিংক)
  • পরিচিতি  (ডাউনলোড লিংক)
  • প্রাথমিক সদস্য ফরম (ডাউনলোড লিংক)
  • প্রাথমিক সদস্যা ফরম (ডাউনলোড লিংক)
  • সাধারণ পরিষদ সদস্য/সদস্যা ফরম (ডাউনলোড লিংক)
  • কেন্দ্রীয় পরিষদ সদস্য/সদস্যা ফরম (ডাউনলোড লিংক)

  • আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীলবৃন্দের তালিকা

    ক্রঃ নং

    দায়িত্ব

    নাম

    আমীর

    প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব

    সাধারণ সম্পাদক

    অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম (মেহেরপুর)

    সাংগঠনিক সম্পাদক

    অধ্যাপক মুহাম্মাদ সিরাজুল ইসলাম (যশোর)

    সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক

    মুহাম্মাদ আব্দুর রশীদ আখতার (কুষ্টিয়া)

    অর্থ সম্পাদক

    বাহারুল ইসলাম (কুষ্টিয়া)

    প্রচার সম্পাদক

    ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন (কুমিল্লা)

    প্রশিক্ষণ সম্পাদক

    মাওলানা মুহাম্মাদ আলতাফ হোসাইন (সাতক্ষীরা)

    গবেষণা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক

    অধ্যাপক মুহাম্মাদ আব্দুল লতীফ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ)

    শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক

    অধ্যাপক মাওলানা মুহাম্মাদ দুররুল হুদা (রাজশাহী)

    ১০

     সমাজকল্যাণ সম্পাদক

    মুহাম্মাদ গোলাম মোক্তাদির (খুলনা)

    ১১

    যুব বিষয়ক সম্পাদক

    অধ্যাপক আমীনুল ইসলাম (রাজশাহী)

    ১২

    দফতর সম্পাদক

    ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম (গোপালগঞ্জ)

    আস-সালামু আলায়কুম ওয়া রহমাতুল্লা-হি ওয়া বারাকাতুহু তাং ১১.০৪.২০১৩ ইং

     

প্রিয় মুছল্লীগণ !

যুদ্ধ বা বিশেষ কোন বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আল্লাহর নিকটে ছালাতরত অবস্থায় রাসূল (ছাঃ) বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তি বা শক্তির বিরুদ্ধে এমনকি একমাস যাবৎ কুনূতে নাযেলাহ পাঠ করেছেন। সেই সুন্নাত অনুসরণে দেশে ক্রমবর্ধমান নাস্তিক্যবাদ এবং স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিরোধী তৎপরতা নস্যাতে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করে ফজর বা যেকোন ফরয ছালাতের শেষ রাক‘আতে রুকূ থেকে উঠে সামি‘আল্লা-হু লিমান হামিদাহ ও রব্বানা লাকাল হাম্দ পড়ার পর দু’হাত তুলে ইমামদের সরবে কুনূতে নাযেলাহ পাঠের অনুরোধ রইল। এসময় মুক্তাদীগণ আমীন আমীন বলবেন (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/১২৯০)।

কুনূতে নাযেলাহ

اَللَّهُمَّ اغْفِرْلَنَا وَلِلْمُؤْمِنِيْنَ وَالْمُؤْمِنَاتِ وَالْمُسْلِمِيْنَ وَالْمُسْلِمَاتِ، وَأَلِّفْ بَيْنَ قُلُوْبِهِمْ وَأَصْلِحْ ذَاتَ بَيْنِهِمْ ، وَانْصُرْهُمْ عَلَى عَدُوِّكَ وَعَدُوِّهِمْ، اَللَّهُمَّ الْعَنِ الْكَفَرَةَ الَّذِيْنَ يَصُدُّوْنَ عَنْ سَبِيْلِكَ وَيُكَذِّبُوْنَ رُسُلَكَ وَيُقَاتِلُوْنَ أَوْلِيَاءَكَ، اَللَّهُمَّ خَالِفْ بَيْنَ كَلِمَتِهِمْ وَزَلْزِِلْ أَقْدَامَهُمْ وَأَنْزِلْ بِهِمْ بَأْسَكَ الَّذِيْ لاَ تَرُدُّهُ عَنِ الْقَوْمِ الْمُجْرِمِيْنَ-

১. হে আল্লাহ! তুমি আমাদেরকে এবং সকল মুমিন-মুসলিম নর-নারীকে ক্ষমা কর। তুমি তাদের অন্তর সমূহে মহব্বত পয়দা করে দাও ও তাদের মধ্যকার বিবাদ মীমাংসা করে দাও। তুমি তাদেরকে তোমার ও তাদের শত্র“দের বিরুদ্ধে সাহায্য কর। হে আল্লাহ! তুমি কাফেরদের উপরে লা‘নত কর। যারা তোমার রাস্তা বন্ধ করে, তোমার প্রেরিত রাসূলগণকে অবিশ্বাস করে ও তোমার বন্ধুদের সাথে লড়াই করে। হে আল্লাহ! তুমি তাদের দলের মধ্যে ভাঙ্গন সৃষ্টি করে দাও ও তাদের পদসমূহ টলিয়ে দাও এবং তুমি তাদের মধ্যে তোমার প্রতিশোধকে নামিয়ে দাও, যা অপরাধী সম্পদায় থেকে তুমি ফিরিয়ে নাও না’।

اللَّهُمَّ لاَ تُسَلِّطْ عَلَيْنَا مَنْ لاَ يَرْحَمُنَا- اللَّهُمَّ اشْدُدْ وَطْأَتَكَ عَلَى القَوْمِ الْمُجْرِمِيْنَ- اَلَّلهُمَّ أَعِزِّ الْإِسْلاَمَ وَالْمُسْلِمِيْنَ وَاخْذُلِ الْكَفَرَةَ وَالْفَجَرَةَ وَالْمُبْتَدِعَةَ وَالْمُشْرِكِيْنَ-

২. হে আল্লাহ! যারা আমাদের উপর দয়া করেনা, তুমি তাদেরকে আমাদের উপর আধিপত্যশীল করো না। হে আল্লাহ! তুমি পাপী সম্প্রদায়ের উপর তোমার শাস্তি কঠোর কর। হে আল্লাহ! তুমি ইসলাম ও মুসলমানকে সম্মানিত কর এবং কাফের, পাপাচারী, বিদ‘আতী ও মুশরিকদের লাঞ্ছিত কর।

أَللَّهُمَّ شَتِّتْ شَمْلَهُمْ وَمَّزِّقْ جَمْعَهُمْ وَفَرِّقْ بُنْيَانَهُمْ وَدَمِّرْ دِيَارَهُمْ- اَللَّهُمَّ سَلِّطْ عَلَيْهِمُ الْعَذَابَ كَمَا أَرْسَلْتَ فِيْمَنْ قَبْلَهُمْ –

৩. হে আল্লাহ! তুমি তাদের ঐক্য ছিন্নভিন্ন করে দাও, তাদের দল টুকরা টুকরা করে দাও, তাদের প্রাচীর গুঁড়িয়ে দাও এবং তাদের আশ্রয়স্থলগুলি ধ্বংস করে দাও। হে আল্লাহ! তুমি তাদের উপর তোমার আযাব পাঠিয়ে দাও। যেমন ইতিপূর্বে অন্যদের উপর পাঠিয়েছিলে।

أَللَّهُمَّ انْصُرْ مَنْ نَصَرَ دِيْنَ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاجَعَلْنَا مِنْهُمْ وَاخْذُلْ مَنْ خَذَلَ دِيْنَ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلاَ تَجْعَلْنَا مِنْهُمْ-

৪. হে আল্লাহ! তুমি তাকে সাহায্য কর যে মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর দ্বীনকে সাহায্য করে এবং আমাদেরকে তাদের অন্তর্ভুক্ত কর। আর তাদেরকে লাঞ্ছিত কর, যারা মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর দ্বীনকে লাঞ্ছিত করে এবং আমাদেরকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করো না।

اَللَّهُمَّ إِنَّا نَجْعَلُكَ فِيْ نُحُوْرِهِمْ وَنَعُوْذُ بِكَ مِنْ شُرُوْرِهِمْ-

৫. হে আল্লাহ! আমরা তোমাকে ওদের মুকাবিলায় পেশ করছি এবং ওদের অনিষ্ট সমূহ হ’তে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি।

رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أَنْتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ وَتُبْ عَلَيْنَا إِنَّكَ أَنْتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ- وَالْحَمْدُ للهِ رَبِّ العَالَمِيْنَ- آمين

৬. হে আল্লাহ! তুমি আমাদের প্রার্থনা কবুল কর। নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ। তুমি আমাদের তওবা কবুল কর। নিশ্চয়ই তুমি তওবা কবুলকারী ও দয়াময়। আর যাবতীয় প্রশংসা বিশ্বপালক আল্লাহর জন্য। আমীন (হে আল্লাহ তুমি কবুল কর )!

আরযগুযার
সেক্রেটারী জেনারেল
আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ

প্রাথমিক সদস্য ও সাধারণ পরিষদ সদস্যদের জন্য মানোন্নয়ন
পরীক্ষার সিলেবাস :

১. সূরা ছফ (অনুবাদ সহ মুখস্ত)।
২. ৫টি হাদীছ (অনুবাদ সহ মুখস্ত)।
৩. আক্বীদা মুখস্ত ।
৪. আহলেহাদীছ আন্দোলন কি ও কেন।
৫. নির্দেশিকা।
৬. গঠনতন্ত্র।
৭. সমাজ বিপ্লবের ধারা।
৮. ফিরক্বা নাজিয়াহ-এর পরিচয়।
৯. ইক্বামতে দ্বীন।
১০. জিহাদ ও ক্বিতাল।
১১. হাদীছের প্রামাণিকতা।
১২. তাফসীরুল কুরআন (সূরা ফাতিহা অংশ) ।
১৩. জীবন দর্শন।

বিশেষ দ্রষ্টব্য : ১ নং হ’তে ১০ নং পর্যন্ত প্রাথমিক সদস্যদের জন্য এবং ১ নং হ’তে ১৩ নং পর্যন্ত সাধারণ পরিষদ সদস্যদের জন্য।

সিলেবাসঃ সূরা ছফ

মদীনায় অবতীর্ণ; সূরা ৬১ আয়াত ১৪

বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম

পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)


- سَبَّحَ لِلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيْزُ الْحَكِيْمُ-

(১) আকাশসমূহে ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, সবই আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করে। বস্ত্ততঃ তিনি মহা পরাক্রান্ত ও প্রজ্ঞাময়।

- يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا لِمَ تَقُوْلُوْنَ مَا لاَ تَفْعَلُوْنَ-

(২) হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা এমন কথা কেন বল যা তোমরা কর না?

- كَبُرَ مَقْتاً عِنْدَ اللَّهِ أَنْ تَقُوْلُوْا مَا لاَ تَفْعَلُوْنَ-

(৩) আল্লাহর নিকটে বড় ক্রোধের বিষয় এই যে, তোমরা বল এমন কথা যা তোমরা কর না?

- إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الَّذِيْنَ يُقَاتِلُوْنَ فِيْ سَبِيْلِهِ صَفًّا كَأَنَّهُمْ بُنْيَانٌ مَّرْصُوْصٌ-

(৪) নিশ্চয় আল্লাহ ভালবাসেন তাদেরকে, যারা তাঁর পথে লড়াই করে সারিবদ্ধভাবে, যেন তারা সীসাঢালা প্রাচীর।

- وَإِذْ قَالَ مُوْسَى لِقَوْمِهِ يَا قَوْمِ لِمَ تُؤْذُوْنَنِيْ وَقَدْ تَّعْلَمُوْنَ أَنِّيْ رَسُوْلُ اللَّهِ إِلَيْكُمْ فَلَمَّا زَاغُوْا أَزَاغَ اللَّهُ قُلُوْبَهُمْ وَاللَّهُ لاَ يَهْدِيْ الْقَوْمَ الْفَاسِقِيْنَ-

(৫) স্মরণ কর, যখন মূসা তার কওমকে বলেছিল, হে আমার কওম! তোমরা কেন আমাকে কষ্ট দিচ্ছ? অথচ তোমরা জানো যে, আমি তোমাদের নিকটে আল্লাহর প্রেরিত রাসূল। অতঃপর যখন তারা বক্রতা অবলম্বন করল, তখন আল্লাহ তাদের অন্তরসমূহকে বক্র করে দিলেন। আল্লাহ পাপাচারী সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেন না।

- وَإِذْ قَالَ عِيْسَى ابْنُ مَرْيَمَ يَا بَنِيْ إِسْرَائِيْلَ إِنِّيْ رَسُوْلُ اللَّهِ إِلَيْكُمْ مُّصَدِّقاً لِّمَا بَيْنَ يَدَيَّ مِنَ التَّوْرَاةِ وَمُبَشِّراً بِرَسُوْلٍ يَأْتِيْ مِنْ بَعْدِي اسْمُهُ أَحْمَدُ، فَلَمَّا جَاءَهُمْ بِالْبَيِّنَاتِ قَالُوْا هَذَا سِحْرٌ مُّبِيْنٌ-

(৬) স্মরণ কর, যখন মারিয়াম-পুত্র ঈসা বলেছিল, হে ইস্রাঈল বংশধরগণ! আমি তোমাদের নিকট আল্লাহর প্রেরিত রাসূল। আমার পূর্বে প্রেরিত তাওরাতের আমি সত্যায়নকারী এবং এমন একজন রাসূলের সুসংবাদ দানকারী, যিনি আমার পরে আগমন করবেন, যার নাম ‘আহমাদ’। অতঃপর যখন সে স্পষ্ট প্রমাণাদি নিয়ে আগমন করল, তখন তারা বলল, এটি প্রকাশ্য জাদু।

- وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرَى عَلَى اللَّهِ الْكَذِبَ وَهُوَ يُدْعَى إِلَى الْإِسْلاَمِ وَاللَّهُ لاَ يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِيْنَ-

(৭) ঐ ব্যক্তির চাইতে বড় যালেম আর কে আছে যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর মিথ্যারোপ করে? অথচ ঐ ব্যক্তিকে ইসলামের দিকে আহবান করা হয়েছে। আল্লাহ যালেম সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেন না।

- يُرِيْدُونَ لِيُطْفِؤُوا نُوْرَ اللَّهِ بِأَفْوَاهِهِمْ وَاللَّهُ مُتِمُّ نُوْرِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُوْنَ-

(৮) তারা তাদের মুখের ফুৎকারে আল্লাহর নূরকে (অর্থাৎ তাঁর প্রেরিত সত্য দ্বীনকে) নিভিয়ে দিতে চায়। অথচ আল্লাহ তাঁর নূরকে পূর্ণরূপে বিকশিত করবেন। যদিও অবিশ্বাসীরা তা পসন্দ করেনা।

- هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُوْلَهُ بِالْهُدَى وَدِيْنِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّيْنِ كُلِّهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُشْرِكُوْنَ-

(৯) তিনিই সেই সত্তা, যিনি তাঁর রাসূল (মুহাম্মাদ)-কে প্রেরণ করেছেন পথনির্দেশ ও সত্য দ্বীন সহকারে। যাতে তিনি একে সকল দ্বীনের উপরে বিজয়ী করে দেন। যদিও অংশীবাদীরা এটা পসন্দ করেনা।

১০- يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا هَلْ أَدُلُّكُمْ عَلَى تِجَارَةٍ تُنْجِيْكُمْ مِّنْ عَذَابٍ أَلِيْمٍ-

(১০) হে বিশ্বাসীগণ! আমি কি তোমাদের এমন একটি ব্যবসায়ের সন্ধান দিব, যা তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে মুক্তি দেবে?

১১- تُؤْمِنُوْنَ بِاللَّهِ وَرَسُوْلِهِ وَتُجَاهِدُوْنَ فِيْ سَبِيْلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنفُسِكُمْ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ-

(১১) সেটা এই যে, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করবে তোমাদের মাল ও জান দিয়ে । এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বুঝ।

১২- يَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْ وَيُدْخِلْكُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِيْ مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ وَمَسَاكِنَ طَيِّبَةً فِيْ جَنَّاتِ عَدْنٍ ذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيْمُ-

(১২) (বিনিময়ে) তিনি তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দিবেন এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন এমন এক উদ্যানে, যার পাদদেশ দিয়ে নদীসমূহ প্রবাহিত হয় এবং (প্রবেশ করাবেন ‘আদন’ নামক) স্থায়ী জান্নাতের উত্তম বাসগৃহসমূহে। আর এটাই হ’ল মহা সাফল্য।

১৩- وَأُخْرَى تُحِبُّوْنَهَا نَصْرٌ مِّنَ اللَّهِ وَفَتْحٌ قَرِيْبٌ وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِيْنَ-

(১৩) তিনি আরও একটি অনুগ্রহ দান করবেন যা তোমরা পসন্দ কর: আল্লাহর সাহায্য ও আসন্ন বিজয়। আর বিশ্বাসীদেরকে তুমি সুসংবাদ দাও।

১৪- يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا كُوْنُوْا أَنْصَارَ اللَّهِ كَمَا قَالَ عِيْسَى ابْنُ مَرْيَمَ لِلْحَوَارِيِّيْنَ مَنْ أَنْصَارِيْ إِلَى اللَّهِ قَالَ الْحَوَارِيُّوْنَ نَحْنُ أَنْصَارُ اللَّهِ فَآمَنَتْ طَّائِفَةٌ مِّنْ بَنِي إِسْرَائِيْلَ وَكَفَرَتْ طَّائِفَةٌ، فَأَيَّدْنَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا عَلَى عَدُوِّهِمْ فَأَصْبَحُوْا ظَاهِرِيْنَ-

(১৪) হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহর (দ্বীনের) সাহায্যকারী হয়ে যাও। যেমন মারিয়াম-পুত্র ঈসা তার শিষ্যদের বলেছিল, কে আছ আল্লাহর পথে আমাকে সাহায্যকারী? শিষ্যরা বলেছিল, আমরাই আল্লাহর পথে (আপনার) সাহায্যকারী। অতঃপর বনু ইস্রাঈলের একদল বিশ্বাস স্থাপন করল ও একদল অবিশ্বাস করল। অতঃপর আমরা বিশ্বাসীদের সাহায্য করলাম তাদের শত্রুদের মোকাবিলায় , ফলে তারা বিজয়ী হ’ল।

পাঁচটি হাদীছ

১- عَنْ عُمَرَبْنِ الْخَطَّابِ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ : إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ وَ إِنَّمَا لِكُلِّ امْرِىءٍ مَّا نَوَى ، فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ إِلَى اللهِ وَرَسُوْلِهِ فَهِجْرَتُهُ إِلَى اللهِ وَ رَسُوْلِهِ وَ مَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ إِلَى دُنْيَا يُصِيْبُهَا أَوْ إِمْرَأَةٍ يَتَزَوَّجُهَا فَهِجْرَتُهُ إِلى مَا هَاجَرَ إِلَيْهِ- مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ-

(১) হযরত ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাযিয়াল্লাহু ‘আনহু) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লা-হু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয়ই সমস্ত আমল নিয়তের উপরে নির্ভরশীল এবং প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য তাই হবে যার সে নিয়ত করবে। কাজেই যার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে হবে, তার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকেই (গণ্য) হবে। আর যার হিজরত হবে দুনিয়া লাভের উদ্দেশ্যে কিংবা কোন নারীকে বিবাহ করার উদ্দেশ্যে তার হিজরত সেদিকেই (গণ্য) হবে, যার দিকে সে হিজরত করেছে। - বুখারী ও মুসলিম, মিশকাত হা/১­­

ব্যাখ্যা: ‘নিয়ত’ অর্থ হৃদয়ে সংকল্প করা। মুখে নিয়ত পড়া বিদ‘আত।

২- عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ : بُنِىَ الإِسْلاَمُ عَلَى خَمْسٍ شَهَادَةٍ أَنْ لاَّ إِلهَ إِلاَّ اللهُ وَ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ وَإِقَامِ الصَّلوَةِ وَإِيْتَاءِ الزَّكوةِ وَالْحَجِّ وَصَوْمِ رَمَضَانَ- مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ- 

(২) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাযিয়াল্লাহু ‘আনহুমা) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লা-হু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এরশাদ করেছেন, ইসলাম পাঁচটি স্তম্ভের উপরে দন্ডায়মান। (১) তাওহীদ ও রিসালাতের সাক্ষ্য প্রদান করা এই মর্মে যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ (ছাঃ) তাঁর বান্দা ও রাসূল (২) ছালাত কায়েম করা (৩) যাকাত আদায় করা (৪) হজ্জ সম্পাদন করা এবং (৫) রামাযানের ছিয়াম পালন করা’। -বুখারী ও মুসলিম, ঈমানঅধ্যায়, মিশকাত হা/৪

৩- عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ : اَلْإِيْمَانُ بِضْعٌ وَّسَبْعُوْنَ شُعْبَةً فَأَفْضَلُهَا قَوْلُ لآ إِلهَ إِلاَّ اللهُ وَأَدْنَاهَا إِمَاطَةُ الْأَذَى عَنِ الطَّرِيْقِ، وَالْحَيَاءُ شُعْبَةٌ مِّنَ الإِيْمَانِ- مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ- 

(৩) হযরত আবু হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু ‘আনহু) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লা-হু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এরশাদ করেছেন, ঈমানের সত্তরের অধিক শাখা রয়েছে। তন্মধ্যে সর্বোত্তম হ’ল তাওহীদের ­­­­ঘাষণা ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ অর্থাৎ আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই এবং সর্বনিম্ন হ’ল রাস্তা হ’তে কষ্টদায়ক বস্ত্ত দূর করা। আর লজ্জাশীলতা ঈমানের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা’। -বুখারী ও মুসলিম, মিশকাত হা/৫

৪. عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْروٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ "المُسْلِمُ مَنْ سَلِمَ المُسْلِمُوْنَ مِنْ لِّسَانِهِ وَيَدِهِ وَالْمُهَاجِرُ مَنْ هَاجَرَ مَا نَهَى اللهُ عَنْهُ" رواه البخارى-

৪. হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, মুসলমান তিনি যার যবান ও হাত হ’তে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে এবং মুহাজির তিনি, যিনি আল্লাহর নিষেধ সমূহ হ’তে হিজরত করেন। -বুখারী।

৫. عَنْ أَنَسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ "لَغُدْوَةٌ فِىْ سَبِيْلِ اللهِ أَوْ رَوْحَةٌ خَيْرٌ مِّنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيْهَا" متفق عليه-

৫. হযরত আনাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘একটি সকাল বা একটি সন্ধ্যা আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করা সমগ্র দুনিয়া ও তার মধ্যকার সকল কিছু হ’তে উত্তম’। -বুখারী ও মুসলিম।

সিলেবাস : আক্বীদা

১. মুমিনের বিশ্বাসের ভিত্তি ছয়টি যাকে ঈমানে মুফাছছাল বা বিস্তারিত ঈমান বলা হয়। যথা:

আ-মানতু বিল্লা-হি, ওয়া মালা-ইকাতিহী, ওয়া কুতুবিহী, ওয়া রুসুলিহী, ওয়াল ইয়াওমিল আ-খেরে, ওয়াল ক্বাদরে খায়রিহী ওয়া শাররিহী মিনাল্লা-হি তাআলা

অনুবাদ: আমি বিশ্বাস স্থাপন করলাম (১) আল্লাহর উপরে (২) তাঁর ফেরেশতাগণের উপরে (৩) তাঁর প্রেরিত কিতাব সমূহের উপরে (৪) তাঁর রাসূলগণের উপরে (৫) ক্বিয়ামত দিবসের উপরে এবং (৬) আল্লাহর পক্ষ হ’তে নির্ধারিত তাক্বদীরের ভাল-মন্দের উপরে।

২. ঈমানে মুজমাল বা বিশ্বাসের সারকথাল নিম্নরূপ:

আ-মানতু বিল্লা-হি কামা হুয়া, বি আসমা-ইহী ওয়া ছিফা-তিহী, ওয়া ক্বাবিলতু জামীআ আহকা-মিহী ওয়া আরকা-নিহী

অনুবাদ: আমি বিশ্বাস স্থাপন করলাম আল্লাহর উপরে যেমন তিনি, তাঁর যাবতীয় নাম ও গুণাবলী সহকারে এবং আমি কবুল করলাম তাঁর যাবতীয় আদেশ-নিষেধ ও ফরয-ওয়াজিব সমূহকে।

৩. ঈমানের অর্থ ও সংজ্ঞা: ‘ঈমান’ অর্থ নিশ্চিন্ত বিশ্বাস, যা ভীতির বিপরীত। সন্তান যেমন পিতা-মাতার কোলে নিশ্চিন্ত হয়, মুমিন তেমনি আল্লাহর উপরে ভরসা করে নিশ্চিন্ত হয়।

সংজ্ঞা: পারিভাষিক অর্থে ‘ঈমান’ হ’ল হৃদয়ে বিশ্বাস, মুখে স্বীকৃতি ও কর্মে বাস্তবায়নের সমন্বিত নাম, যা আনুগত্যে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় ও গোনাহে হরাসপ্রাপ্ত হয়। বিশ্বাস হ’ল মূল এবং কর্ম হ’ল শাখা। যা না থাকলে পূর্ণ মুমিন বা ইনসানে কামেল হওয়া যায় না।

ব্যাখ্যা: খারেজীগণ বিশ্বাস, স্বীকৃতি ও কর্ম তিনটিকেই ঈমানের মূল হিসাবে গণ্য করেন। ফলে তাদের মতে কবীরা গোনাহগার ব্যক্তি কাফের ও চিরস্থায়ী জাহান্নামী এবং তাদের রক্ত হালাল’। যুগে যুগে সকল চরমপন্থী ভ্রান্ত মুসলমান এই মতের অনুসারী। পক্ষান্তরে মুরজিয়াগণ কেবল বিশ্বাস অথবা স্বীকৃতিকে ঈমানের মূল হিসাবে গণ্য করেন। যার কোন হরাস-বৃদ্ধি নেই। তাদের মতে আমল ঈমানের অংশ নয়। ফলে তাদের নিকট কবীরা গোনাহগার ব্যক্তি পূর্ণ মুমিন’। আমলের ব্যাপারে সকল যুগের শৈথিল্যবাদী ভ্রান্ত মুসলমানরা এই মতের অনুসারী।

খারেজী ও মুরজিয়া দুই চরমপন্থী ও শৈথিল্যবাদী মতবাদের মধ্যবর্তী হ’ল আহলেহাদীছের ঈমান। যাদের নিকট বিশ্বাস ও স্বীকৃতি হল মূল এবং কর্ম হ’ল শাখা। অতএব কবীরা গোনাহগার ব্যক্তি তাদের নিকট কাফের নয় কিংবা পূর্ণ মুমিন নয়, বরং ফাসেক। সে তওবা না করে মারা গেলেও চিরস্থায়ী জাহান্নামী নয়। বস্ত্ততঃ এটাই হ’ল কুরআন ও সুন্নাহর অনুকূলে।

৪. তাওহীদের সংজ্ঞা ও প্রকারভেদ: উপাস্য হিসাবে আল্লাহর নির্ভেজাল একত্ববাদকে ‘তাওহীদ’ বলা হয়। যা তিন প্রকারঃ

(১) তাওহীদে রবূবিয়াত। অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তা হিসাবে আল্লাহর একত্ব। সেযুগের আবু জাহ্ল সহ সকল যুগের মুশরিকরা এই তাওহীদকে স্বীকার করে। কিন্তু এই স্বীকৃতির ফলে কেউ ‘মুসলিম’ হ’তে পারে না।

(২) তাওহীদে আসমা ওয়া ছিফাত। অর্থাৎ আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর একত্ব। মূল নাম ‘আল্লাহ’। এছাড়াও আল্লাহর শতাধিক গুণবাচক নাম রয়েছে। যাকে ‘আসমাউল হুস্না’ বলা হয়। আল্লাহর সত্তা ও গুণাবলী বান্দার সত্তা ও গুণাবলীর সাথে তুলনীয় নয়। পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছে আল্লাহর নাম ও গুণাবলী যেভাবে বর্ণিত হয়েছে, সে ভাবেই প্রকাশ্য অর্থে বিশ্বাস করতে হবে। কোন রূপক ও গৌণ কিংবা কল্পিত ব্যাখ্যা করা যাবে না বা অন্যের সদৃশ মনে করা যাবে না। আল্লাহ নিরাকার বা নির্গুণ সত্তা নন। তাঁর নিজস্ব আকার আছে। যা কারু সাথে তুলনীয় নয়। ক্বিয়ামতের দিন মুমিনগণ তাঁকে স্পষ্ট দেখবে। আর সেটাই হবে মুমিনের সবচেয়ে আনন্দঘন মুহূর্ত। কিন্তু কাফির-মুনাফিকগণ তাদের অবিশ্বাসের কারণে তাঁকে দেখতে পাবে না।

(৩) তাওহীদে ইবাদত। অর্থাৎ সর্ব প্রকার ইবাদত ও দাসত্বের জন্য আল্লাহকে একক গণ্য করা। আল্লাহর জন্য সর্বাধিক ভালোবাসা ও ভীতিসহ চরম প্রণতি পেশ করাকে ‘ইবাদত’ বলা হয়। অর্থাৎ বিশ্বাস ও কর্মজগতের সর্বত্র সর্বদা আল্লাহর দাসত্ব করা। যেমন আল্লাহ বলেন, وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنسَ إِلاَّ لِيَعْبُدُونِ ‘আমি জিন ও ইনসানকে সৃষ্টি করেছি কেবলমাত্র এজন্য যে, তারা আমার দাসত্ব করবে’ (যারিয়াত ৫৬)। অন্যেরা আল্লাহকে সৃষ্টিকর্তা হিসাবে স্বীকার করলেও তাঁর বিধানের দাসত্ব করতে অস্বীকার করে। বস্ত্ততঃ তাওহীদে ইবাদত না থাকলে কেউ প্রকৃত মুসলিম হতে পারে না। জিন ও ইনসান সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্য সেটাই।

v ‘ইক্বামতে দ্বীন’ অর্থ ‘ইক্বামতে তাওহীদ’। অর্থাৎ তাওহীদ প্রতিষ্ঠা করা। আক্বীদা ও আমলের সংশোধনের মাধ্যমে সমাজের সার্বিক সংস্কার সাধনের মাধ্যমেই কেবল তাওহীদের প্রতিষ্ঠা সম্ভব। নবীগণ সর্বদা সেকাজই করে গেছেন।

নির্দেশিকা

প্রাথমিক সদস্য/সদস্যাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য

১. দৈনিক কমপক্ষে ২টি আয়াত ও ১টি হাদীছ ব্যাখ্যাসহ পাঠ করবেন এবং কমপক্ষে ৫ পৃষ্ঠা সাংগঠনিক বই/ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়ন করবেন।

২. প্রথম এক বছরে অর্থসহ সূরায়ে ফাতিহা হ’তে আলাক্ব, সূরা ছফ এবং ৫টি হাদীছ অর্থ সহ মুখস্থ করবেন।

৩. মাসিক নির্ধারিত আয়ের কমপক্ষে ১% অথবা অনির্ধারিত আয়ের দৈনিক এক টাকা হিসাবে মাসে কমপক্ষে ৩০/= টাকা যেলায় এয়ানত দিবেন। এতদ্ব্যতীত বাড়ীতে কৌটা চালু রাখবেন ও মাস শেষে তাতে দানকৃত অর্থ নিজ শাখায়/যেলায় জমা দিবেন।

৪. ওশর, যাকাত ও সম্ভব হ’লে ফিৎরা ও কুরবাণীর সিকি অথবা বৃহদাংশ নিজ শাখায়/যেলায় জমা দিবেন। এতদ্ব্যতীত সাংগঠনিক বৈঠকের শুরুতে ‘বৈঠকী দান’ -এর অভ্যাস গড়ে তুলবেন।

৫. প্রতি মাসে কমপক্ষে ৩ জনকে ‘সমর্থক’ তৈরী করবেন।

৬. নিজস্ব শাখা/এলাকা/যেলা তাবলীগী ইজতেমা ও তা‘লীমী বৈঠকে শরীক হবেন এবং তাবলীগী সফরে গমন করবেন।

সাধারণ পরিষদ সদস্য/সদস্যাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য

১. দৈনিক কমপক্ষে ৩টি আয়াত ও ১টি হাদীছ ব্যাখ্যাসহ পাঠ করবেন এবং কমপক্ষে ১০পৃষ্ঠা সাংগঠনিক বই/ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়ন করবেন।

২. প্রথম এক বছরে অর্থসহ আম্মা পারা, সূরা ওয়াক্বি‘আহ, সূরা ছফ, সূরা নুহ, সূরা জুমু‘আ ও মুনাফিকুন এবং ১০টি হাদীছ অর্থ সহ মুখস্থ করবেন।

৩. মাসিক নির্ধারিত আয়ের কমপক্ষে ২% অথবা অনির্ধারিত আয়ের কমপক্ষে ৫০/= টাকা যেলায় এয়ানত দিবেন। এতদ্ব্যতীত বাড়ীতে কৌটা চালু রাখবেন ও মাস শেষে তাতে দানকৃত অর্থ নিজ শাখায়/যেলায় জমা দিবেন।

৪. ওশর, যাকাত ও সম্ভব হ’লে ফিৎরা ও কুরবাণীর সিকি অংশ সংগঠনের কেন্দ্রীয় বায়তুল মাল ফান্ডে জমা দিবেন। বাকী সিকি অথবা বৃহদাংশ নিজ শাখায়/যেলায় জমা দিবেন। এতদ্ব্যতীত সাংগঠনিক বৈঠকের শুরুতে ‘বৈঠকী দান’ -এর অভ্যাস গড়ে তুলবেন।

৫. প্রতি মাসে কমপক্ষে ৩ জনকে প্রাথমিক সদস্য/সদস্যা করবেন।

৬. নিজস্ব শাখা/এলাকা/যেলা তাবলীগী ইজতেমা ও তা‘লীমী বৈঠকে শরীক হবেন এবং তাবলীগী সফরে গমন করবেন।

৭. সাপ্তাহিক পারিবারিক তা‘লীমী বৈঠকের ব্যবস্থা করবেন।

৮. নিয়মিতভাবে ‘ব্যক্তিগত রিপোর্ট’ সংরক্ষণ করবেন।

কেন্দ্রীয় পরিষদ সদস্য/সদস্যাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য

১. দৈনিক কমপক্ষে ৫টি আয়াত ও ২টি হাদীছ ব্যাখ্যাসহ পাঠ করবেন এবং কমপক্ষে ১০পৃষ্ঠা সাংগঠনিক বই/ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়ন করবেন।

২. প্রথম এক বছরে অর্থসহ পবিত্র কুরআনের ১ম ও শেষ পারা এবং সূরা হুজুরাত, ক্বাফ, রহমান, সাজদাহ ও দাহর এবং ১০টি হাদীছ অর্থ সহ মুখস্থ করবেন।

৩. মাসিক নির্ধারিত আয়ের কমপক্ষে ২% অথবা অনির্ধারিত আয়ের কমপক্ষে ৬০/= টাকা কেন্দ্রে এয়ানত দিবেন। এতদ্ব্যতীত বাড়ীতে কৌটা চালু রাখবেন ও মাস শেষে তাতে দানকৃত অর্থ নিজ শাখায়/যেলায় জমা দিবেন।

৪. ওশর, যাকাত ও সম্ভব হ’লে ফিৎরা ও কোরবাণীর সিকি অংশ সংগঠনের কেন্দ্রীয় বায়তুল মাল ফান্ডে জমা দিবেন। বাকী সিকি অথবা বৃহদাংশ নিজ শাখায়/যেলায় জমা দিবেন। এতদ্ব্যতীত সাংগঠনিক বৈঠকের শুরুতে ‘বৈঠকী দান’ -এর অভ্যাস গড়ে তুলবেন।

৫. প্রতি মাসে কমপক্ষে ৩ জনকে প্রাথমিক সদস্য/সদস্যা করবেন।

৬. নিজস্ব শাখা/এলাকা/যেলা তাবলীগী ইজতেমা ও তা‘লীমী বৈঠকে শরীক হবেন।

৭. সাপ্তাহিক পারিবারিক তা‘লীমী বৈঠকের ব্যবস্থা করবেন।

৮. নিয়মিতভাবে ‘ব্যক্তিগত রিপোর্ট’ সংরক্ষণ করবেন।

Æ আখেরাতে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচার জন্য ৪ টি গুণ অর্জন করা অবশ্য কর্তব্য: (ইল্ম সহ) ঈমান, আমল, দাওয়াত, ছবর (সূরা আছর)

Æ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, আমি তোমাদেরকে পাঁচটি বিষয়ে নির্দেশ দিচ্ছি : (১) জামা‘আত বদ্ধ জীবন যাপন করা (২) আমীরের নির্দেশ শ্রবণ করা (৩) তাঁর আনুগত্য করা (৪) (প্রয়োজনে) হিজরত করা (৫) আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা ... (আহমাদ, তিরমিযী, সনদ ছহীহ; মিশকাত হা/ ৩৬৯৪)

Æ আল্লাহ বলেন, ‘হে বনু আদম ! (আমার রাস্তায়) খরচ কর, আমি তোমার জন্য খরচ করব’ (অর্থাৎ রহমত বর্ষণ করব)। = মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৮৬২

আমরা চাই এমন একটি ইসলামী সমাজ, যেখানে থাকবেনা প্রগতির নামে কোনবিজাতীয় মতবাদ; থাকবেনা ইসলামের নামে কোনরূপ মাযহাবী সংকীর্ণতা বাদ