এক নযরে তিনটি মতবাদ
(النظرياة الثلاثة فى لمحة)
১ম মতবাদ : তাক্বলীদ (التقليد) : হিজরী চতুর্থ শতকে আবিষ্কৃত এই মতবাদটি ধর্মের নামে মানুষকে মানুষের গোলামে পরিণত করেছে। মুসলিম বিদ্বানদের জন্য ইজতিহাদের দরজা বন্ধ করেছে। মুসলিম উম্মাহকে বিভিন্ন বিদ্বানের নামে বিভিন্ন দল ও উপদলে (মাযহাব ও তরীক্বায়) বিভক্ত করেছে। মুসলমানদের কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক শক্তি বিনষ্ট করেছে। মুসলিম জনসাধারণকে নিঃশর্তভাবে কুরআন ও হাদীছের বিধান মানার বদলে নির্দিষ্ট মাযহাবী ফিক্বহের অনুসারী হ’তে বাধ্য করেছে। ফলে তাক্বলীদ বজায় রেখে কুরআন ও সুন্নাহর নিরপেক্ষ অনুসরণ যেমন অসম্ভব হয়েছে, নির্ভেজাল ইসলামী সমাজ কায়েম করাও তেমনি নিছক কল্পনা বিলাসে পরিণত হয়েছে।
২য় মতবাদ: ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ ( فصل الدين عن السياسة ) : এই মতবাদ দ্বীনকে দুনিয়াবী জীবন থেকে পৃথক করতে চেয়েছে এবং মানুষের বৈষয়িক ব্যাপারে ইসলামের কোন হেদায়াত নেই বলে বিশ্বাস করেছে, যা প্রকৃত অবস্থার সম্পূর্ণ বিপরীত। এই মতবাদে বিশ্বাসী হওয়ার ফলে ব্যক্তি জীবনে একজন সৎ ও দ্বীনদার মুসলমানও নিজেকে বা নিজের দেশকে পরিচালনার জন্য হাসিমুখে ইসলাম বিরোধী মতবাদসমূহ কবুল করে নেয়। এইভাবে নিজের অজান্তেই সে বিদেশীদের কলুর বলদে পরিণত হয়।
৩য় মতবাদ রাজনীতিই ধর্ম (والسياسة هي الدين) : এই মতবাদ মানুষের পুরো যিন্দেগীকে দ্বীনী যিন্দেগী গণ্য করেছে। এই মতবাদ দুনিয়া হাছিলের মাধ্যম হিসাবে দ্বীনকে ব্যবহার করেছে এবং প্রথমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে তার মাধ্যমে ইসলাম কায়েম করতে চেয়েছে। যা কেবল নবীদের তরীকা বিরোধী নয় বরং দুনিয়ার সকল আদর্শিক বিপ্লবের নিয়ম বিরোধী। অতি যুক্তিবাদকে প্রশ্রয় দিয়ে এই দর্শন ইসলামী আইনের দ্বিতীয় উৎস হাদীছ শাস্ত্রের প্রতি সন্দেহবাদ আরোপ করেছে।