ইবাদত ও ইত্বা‘আত:
ইবাদত ও ইত্বা‘আত তথা উপাসনা ও আনুগত্য সম্পর্কে এই দর্শন আর এক অভিনব ব্যাখ্যা পেশ করেছে। এই দর্শন আল্লাহর ইবাদত ও সরকারের আনুগত্যকে এক করে দেখেছে। বরং এর মতে রাষ্ট্রক্ষমতা অজর্নই হ’ল মূল ইবাদত। আর সেই ইবাদতের লক্ষ্যেই সকল কাজ করতে হবে। নইলে সব কিছুই ব্যর্থ হবে। যেমন বলা হচ্ছে,
يه جمله عبادات جو صرف ذرائع كى حيثيت ميں هيں گر اصول قيام حكومت كے واحد نصب العين سے عليحده هو كر كام كرتے هيں تو عند الله ان كا كوئى اجر نه هوگا-
‘এই সকল ইবাদত যা কেবল মাধ্যম হিসাবে গণ্য হ’তে পারে, যদি হুকূমত কায়েমের মূল লক্ষ্য হ’তে বিচ্যুত হয়, তাহ’লে আল্লাহর নিকট এ সবের কোন ছওয়াব মিলবে না’।[1]
বক্তব্য খুবই পরিষ্কার। যদি আপনার ছালাত-ছিয়ামের পিছনে বঙ্গভবন দখলের পরিকল্পনা না থাকে, তাহ’লে ঐ ছালাত-ছিয়ামে কোন ছওয়াব নেই। এ কারণেই তো এই দর্শনের অনুসারীগণ সুন্নাত-বিদ‘আত এমনকি শিরকের প্রসঙ্গ উঠলেও বলতে চান এসব ছোট-খাট ব্যাপার, মূল কথা হ’ল আপনি ইক্বামতে দ্বীনের (?) জন্য কি করছেন বা কত টাকা আমাদের ফান্ডে এয়ানত দিচ্ছেন সেটা বলুন। যেহেতু তাদের ধারণায় রাষ্ট্র ক্ষমতা অর্জনই হ’ল মূল ইবাদত। বাকী সবই এর ট্রেনিং কোর্স মাত্র। তাই যেনতেন প্রকারেণ ক্ষমতায় যাওয়াই করাই এদের প্রধান লক্ষ্য হ’য়ে দাঁড়ায়।
এই ধারণার অবশ্যম্ভাবী পরিণতি হয়েছে এই যে, যে সকল আলেম ও বিদ্বান রাজনৈতিক ক্রিয়াকান্ডে জড়িত নন, বরং ওসব হ’তে দূরে থেকে দারস-তাদরীস, ইবাদত বা অন্যান্য ধর্মীয় খিদমতে রত আছেন, তাঁরা এদের ধারণা মতে ইক্বামতে দ্বীনের কাজ করছেন না (?) বলে এই দর্শনের অনুসারী লোকদের নিন্দাবাদের শিকার হচ্ছেন। এমনকি মতবিরোধের কারণে কোন কোন ক্ষেত্রে হত্যাযোগ্য অপরাধী হিসাবেও বিবেচিত হচ্ছেন। এদের সশস্ত্র ক্যাডারদের হাতে ইতিমধ্যে বেশ কিছু জীবনও গিয়েছে।