জিহাদ ও কিতাল

জিহাদ ফরযে আয়েন

(১) মুসলমানদের বাড়ীতে বা শহরে শত্রুবাহিনী উপস্থিত হ’লে : এই সময় সকল শহরবাসীর উপরে ফরয হ’ল ঘর থেকে বেরিয়ে এসে শত্রুকে প্রতিহত করা। আল্লাহ বলেন,يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا قَاتِلُوا الَّذِينَ يَلُونَكُمْ مِنَ الْكُفَّارِ وَلْيَجِدُوا فِيكُمْ غِلْظَةً وَاعْلَمُوا أَنَّ اللهَ مَعَ الْمُتَّقِينَ  ‘হে ঈমানদারগণ!  তোমরা যুদ্ধ কর ঐসব কাফেরের বিরুদ্ধে যারা তোমাদের দুয়ারে হানা দিয়েছে। তারা তোমাদের কঠোরতা অনুভব করুক। আর জেনে রেখো আল্লাহ মুত্তাক্বীদের সাথে রয়েছেন’ (তওবাহ ৯/১২৩)

তিনি বলেন,اِنْفِرُوا خِفَافًا وَثِقَالاً وَجَاهِدُوا بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنْفُسِكُمْ فِي سَبِيلِ اللهِ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ- ‘যুবক হও বৃদ্ধ হও, একাকী হও বা দলবদ্ধভাবে হও, তোমরা বেরিয়ে পড় এবং তোমাদের মাল ও জান দ্বারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ কর। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা  বুঝ’ (তওবাহ ৯/৪১)।

(২) শাসক যখন কাউকে যুদ্ধে বের হবার নির্দেশ দেন : يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا مَا لَكُمْ إِذَا قِيلَ لَكُمُ انْفِرُوا فِي سَبِيلِ اللهِ اثَّاقَلْتُمْ إِلَى الْأَرْضِ أَرَضِيتُمْ بِالْحَيَاةِ الدُّنْيَا مِنَ الْآخِرَةِ فَمَا مَتَاعُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا فِي الْآخِرَةِ إِلاَ قَلِيلٌ ‘তোমাদের কি হয়েছে যে, যখন তোমাদেরকে আল্লাহর পথে জিহাদে বের হবার জন্য বলা হয়, তখন তোমরা মাটি কামড়ে পড়ে থাক। তোমরা কি আখেরাতের বদলে দুনিয়ার জীবনের উপরে তুষ্ট হয়ে গেলে? অথচ আখেরাতের তুলনায় দুনিয়াবী জীবনের উপকরণ অতীব নগণ্য’ (তওবাহ ৯/৩৮)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘মক্কা বিজয়ের পরে আর হিজরত নেই। কিন্তু জিহাদ ও নিয়ত বাকী রইল। এক্ষণে যখন তোমাদেরকে যুদ্ধে বের হবার নির্দেশ দেয়া হবে, তখন তোমরা বেরিয়ে পড়বে’।[1]

(৩) যুদ্ধের সারিতে উপস্থিত হ’লে : আল্লাহ বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا لَقِيتُمْ فِئَةً فَاثْبُتُوا وَاذْكُرُوا اللهَ كَثِيرًا لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ ‘হে মুমিনগণ! যখন তোমরা (কাফির) বাহিনীর মুখোমুখি হবে, তখন দৃঢ়ভাবে কায়েম থাক এবং আল্লাহকে বেশী বেশী স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হ’তে পার’ (আনফাল ৮/৪৫)। অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا لَقِيتُمُ الَّذِينَ كَفَرُوا زَحْفًا فَلاَ تُوَلُّوهُمُ الْأَدْبَارَ ‘হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা কাফির বাহিনীর সাথে যুদ্ধের ময়দানে মুখোমুখি হবে, তখন তাদের থেকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করো না’ (আনফাল ৮/১)

(৪) যখন কেউ বাধ্য হয়। যেমন রাসূল (ছাঃ) বলেন, مَنْ قُتِلَ دُونَ مَالِهِ فَهُوَ شَهِيدٌ وَمَنْ قُتِلَ دُونَ دِينِهِ فَهُوَ شَهِيدٌ وَمَنْ قُتِلَ دُونَ دَمِهِ فَهُوَ شَهِيدٌ وَمَنْ قُتِلَ دُونَ أَهْلِهِ فَهُوَ شَهِيدٌ ‘যে মুসলমান (১) তার সম্পদ রক্ষার্থে নিহত হয়, সে শহীদ (২) যে তার দ্বীন রক্ষার্থে নিহত হয়, সে শহীদ  (৩) যে তার জীবন রক্ষার্থে নিহত হয়, সে শহীদ (৪) যে তার পরিবার রক্ষার্থে নিহত হয়, সে শহীদ।[2]



[1]. মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/২৭১৫, ৩৮১৮; ফিক্বহুস সুন্নাহ ৩/৮৫।

[2]. তিরমিযী হা/১৪২১, আবুদাঊদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৩৫২৯ ‘ক্বিছাছ’ অধ্যায়।