হিংসা ও অহংকার

উপসংহার

হাফেয যাহাবী (রহঃ) বলেন, অহংকারের সবচেয়ে নিকৃষ্টতম প্রকার হ’ল ইলমের অহংকার। কেননা তার ইলম তার কোন কাজে আসেনা। যে ব্যক্তি আখেরাতের জন্য জ্ঞানার্জন করে, জ্ঞান তার অহংকারকে চূর্ণ করে দেয় এবং তার অন্তর আল্লাহর ভয়ে ভীত থাকে। যে নিজেকে হীন মনে করে এবং সর্বদা নিজের হিসাব নিয়ে সন্ত্রস্ত থাকে। একটু উদাসীন হ’লেই ভাবে এই বুঝি ছিরাতে মুস্তাক্বীম থেকে বিচ্যুত হ’লাম ও ধ্বংস হয়ে গেলাম। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি ইলম শিখে গর্ব করার জন্য ও নেতৃত্ব লাভের জন্য, সে অন্যের উপর অহংকার করে ও তাদেরকে হীন মনে করে। আর এটিই হ’ল সবচেয়ে বড় অহংকার (أَكْبَرُ الْكِبْر)। আর ঐ ব্যক্তি কখনই জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যার অন্তরে কণা পরিমাণ অহংকার রয়েছে। লা হাওলা অলা কুউওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ[1]

পরিশেষে বলব, জাত-পাত, দল-মত ও যাবতীয় মিথ্যার অহংকার ছেড়ে আল্লাহ প্রেরিত মহাসত্যের দিকে ফিরে আসা এবং কুরআন ও সুন্নাহর অনুসরণ করা আল্লাহর সৃষ্টি হিসাবে প্রত্যেক মানুষের জন্য অবশ্য কর্তব্য। বান্দার কোন অহংকার থাকলে তা হবে কেবল সত্যের অহংকার। অন্য কিছুর জন্য নয়। আল্লাহ বলেন, إِنَّمَا يُؤْمِنُ بِآيَاتِنَا الَّذِينَ إِذَا ذُكِّرُوا بِهَا خَرُّوا سُجَّداً وَسَبَّحُوا بِحَمْدِ رَبِّهِمْ وَهُمْ لَا يَسْتَكْبِرُونَ ‘আমাদের আয়াত সমূহে কেবল তারাই (প্রকৃত) ঈমান আনে, যখন তারা উক্ত আয়াত সমূহ দ্বারা উপদেশপ্রাপ্ত হয়, তখন তারা সিজদায় লুটিয়ে পড়ে এবং তাদের প্রতিপালকের প্রশংসা জ্ঞাপন করে এমন অবস্থায় যে, তারা কোনরূপ অহংকার প্রদর্শন করে না’ (সাজদাহ ৩২/১৫)। অত্র আয়াতটি পাঠ করলে বা শ্রবণ করলে সাথে সাথে একটি সিজদা করা মুস্তাহাব। এটি কুরআনের ১০ম সিজদা। আল্লাহ আমাদেরকে মিথ্যা অহমিকা ও তার কুফল হ’তে রক্ষা করুন- আমীন!

 

--০--

سبحانك اللهم وبحمدك أشهد أن لا إله إلا أنت أستغفرك وأتوب إليك، اللهم اغفرلى ولوالدىّ وللمؤمنين يوم يقوم الحساب-

***



[1]. যাহাবী, আল-কাবায়ির (বৈরূত : দারুন নাদওয়াতিল জাদীদাহ পৃঃ ৭৮।