হাদীছের প্রামাণিকতা
যুগে যুগে হাদীছ অস্বীকারকারীগণ (منكرو الحديث في العصور)
আল্লামা ইসমাঈল গুজরানওয়ালা (১৩১৪-১৩৭৮/১৮৯৫-১৯৬৮) প্রদত্ত যুগে যুগে হাদীছ অস্বীকারকারীদের তালিকাটি নিম্নে প্রদত্ত হ’ল :
- খারেজী (خارجي) : এরা প্রধানতঃ রাসূল পরিবারের মর্যাদায় বর্ণিত হাদীছসমূহকে অস্বীকার করে। ২০০ হিজরীর পরে এদের আবির্ভাব ঘটে।
- শী‘আ (شيعہ ) : এরা ছাহাবীগণের মর্যাদায় বর্ণিত হাদীছসমূহকে অস্বীকার করে। ২০০ হিজরীর পরে এদের আবির্ভাব হয়।
- মু‘তাযিলা ও জাহ্মিয়া (معتزلہ و جهميہ ): এরা আল্লাহর গুণাবলী সংক্রান্ত হাদীছ সমূহকে অস্বীকার করে। ২২১ হিজরীর পরে এদের আবির্ভাব হয়।
- ক্বাযী ঈসা ইবনে আবান ও তার অনুসারীগণ এবং পরবর্তী ফক্বীহদের মধ্যে ক্বাযী আবু যায়েদ দাবূসী প্রমুখ। তাদের দৃষ্টিতে গায়ের ফক্বীহ ছাহাবীগণের বর্ণিত হাদীছকে তারা অস্বীকার করেন। ২২১ হিজরীর পরে এদের আবির্ভাব ঘটে।
- মু‘তাযিলা ও দার্শনিকদের সাথে ফক্বীহদের একটি ছোট দল। এরা উছূল ও ফুরূ‘ তথা মূল ও প্রশাখাগত সকল বিষয়ে খবরে ওয়াহেদ পর্যায়ের হাদীছসমূহের ব্যাপারে মতভেদ করেছেন। ৪০০ হিজরীর পর এদের আবির্ভাব হয়।
- পাশ্চাত্য সভ্যতায় ভীত ইসলামী পন্ডিতগণ। যেমন মৌলবী চেরাগ আলী, স্যার সৈয়দ আহমাদ খান ও তাদের অনুসারীবৃন্দ। এরা হাদীছ শাস্ত্রে আনকোরা। তাদের ধারণা মতে হাদীছ সমূহ মূলতঃ ইতিহাসের সমষ্টি মাত্র। অতএব সেখান থেকে চাহিদামত তারা কিছু গ্রহণ করেছেন ও কিছু বর্জন করেছেন। ১৩০০ হিজরীর কাছাকাছি সময়ে এদের আবির্ভাব ঘটে।
- মৌলবী আব্দুল্লাহ চকড়ালবী, মিস্ত্রী মুহাম্মাদ রামাযান গুজরানওয়ালা, মৌলবী হাশমত আলী লাহোরী, মৌলবী রফীউদ্দীন মুলতানী। ১৩০০ হিজরীর পরবর্তী এই সকল বিদ্বান হাদীছকে পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন।
- মৌলবী আহমাদ দ্বীন অমৃতসরী, মিষ্টার গোলাম আহমাদ পারভেয। এরা স্যার সৈয়দ আহমাদের দ্বারা প্রভাবিত। তবে এরা জাহিল ও লাগামহীন। ১৪শ শতাব্দীর এই ব্যক্তিগণের নিকটে কুরআন, হাদীছ ও পুরা দ্বীনটাই একটা খেলা মাত্র। তাদের মতে বেশীর বেশী এটাকে একটা রাজনৈতিক দর্শন মনে করা যেতে পারে। যাকে যখন-তখন বদলানোর অধিকার আমাদের আছে। তবে মৌলবী আহমাদ দ্বীন কোন কোন ‘মুতাওয়াতির’ আমলকে এগুলি থেকে পৃথক মনে করতেন।