কচ্ছপ ও হাঁস
এক পুকুরে দু’টি হাঁস এবং একটি কচ্ছপ বাস করতো। তাদের মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব ছিল। পুকুরের পানি শুকিয়ে গেলে হাঁস দু’টি কচ্ছপকে বলল, বন্ধু! এখানে আর আমাদের থাকা সম্ভব নয়। কাজেই এবার আমাদের বিদায় নিতে হবে।
কচ্ছপ বলল, তা কি করে হয়? তোমাদেরকে বিদায় দিয়ে আমি একা এখানে থাকব কিভাবে? তোমাদের বিরহ-বেদনা সহ্য করার ক্ষমতা আমার নেই। তাই আমিও ভাবছি, পুকুরের পানি একেবারে শুকিয়ে গেলে আমি তোমাদের সাথে চলে যাব। হাঁস দু’টি বলল, কিন্তু আমাদের সাথে তুমি যাবে কি করে? কারণ আমরা উড়তে পারি, তুমি তো আকাশে উড়তে পারো না?
কচ্ছপ বলল, এর উপায়ও তোমরাই চিন্তা করো। হাঁস দু’টি কিছুক্ষণ চিন্তা করে বলল, ঠিক আছে। কিন্তু শর্ত হ’ল সর্বদা আমাদের কথা মেনে চলতে হবে। আমরা তোমাকে নিয়ে যখন উড়াল দিব, তখন তা দেখে নিচের লোকেরা চেঁচামেচি করবে, কিন্তু সাবধান! তুমি টুঁ শব্দটিও করতে পারবে না। কচ্ছপ এ শর্ত মেনে নিল। হাঁস দু’টি বুদ্ধি করে একটি কাঠি এনে কচ্ছপের মুখে দিয়ে বলল, একে শক্ত করে কামড় দিয়ে ধরে রাখবে। এ বলে দু’দিক থেকে দুই হাঁস কাঠিটি ঠোঁটে চেপে ধরে আকাশে উড়ল। যাওয়ার পথে ওরা এক শহরের উপর দিয়ে যাচ্ছিল। লোকেরা এভাবে তাদেরকে উড়তে দেখে চিৎকার করে বলতে শুরু করল, আরে কি মজার ব্যাপার, দেখো দু’টি হাঁস একটি কচ্ছপকে নিয়ে উড়ে যাচ্ছে। কচ্ছপ অনেকক্ষণ চুপ করেই ছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর ধৈর্য ধরতে পারল না। সে বলতে চাইল যে, তাতে তোদের কি? কিন্তু কথা শেষ হওয়ার আগেই মুখ থেকে কাঠি ছুটে গেল, আর সে মাটিতে পড়ে পটল তুলল। হাঁস দু’টি চিৎকার করে বলল, বন্ধুর কাজ হ’ল উপদেশ দেয়া আর যারা সৌভাগ্যবান, তারাই শুধু সে উপদেশ থেকে লাভবান হয়।
শিক্ষা : যারা হিতাকাঙ্খী বন্ধুর কথা শোনে না তারা বিপদে পড়ে।