বাদশাহ ও তার চামচা
এক বাদশাহ সর্বদা নীচুমনা ও ভীরুদের সাথে বসবাস করতো। তারাও তার চামচামি করে সব সময় তার আশেপাশে ঘুর ঘুর করত। ওদের মধ্যে আবীর নামে একজন একেবারে বাদশার মাথায় চড়ে বসেছিল। একদিন বাদশাহ নির্জনে ওকে বলল, আমি তোর কাছে একটি গোপন কথা বলছি, কিন্তু সাবধান! কেউ যেন জানতে না পারে। আবীর গোপন কথা না বলার জন্য হাযার রকমের কিরা-কসম কাটল। বাদশাহ খুশী হয়ে বলল, আমার ভাই আমাকে হত্যা করবে বলে আমার সন্দেহ হচ্ছে। তুই সর্বদা আমার দিকে লক্ষ্য রাখবি, যেন ভাই কিছু করার আগেই আমি ওকে শেষ করে দিতে পারি।
খারাপ লোকের পেটে গোপন কথা হজম হয় না। আবীর সুযোগ পেয়েই সব কথা বাদশাহর ভাইয়ের কাছে প্রকাশ করে দিল। এজন্য সে তার বিনিময়ে আবীরকে অনেক উপঢৌকন প্রদান করল। ফলে সে কৌশলে বাদশার নিকট থেকে দূরে সরে থাকল এবং গোপনে তাকে শেষ করার উপায় খুঁজতে লাগল। বাদশার ভাগ্য ছিল মন্দ, তাই ভায়ের হাতেই সে খুন হ’ল। ভাই সিংহাসনে বসে প্রথমেই বিশ্বাসঘাতক আবীরের মৃত্যুদন্ড ঘোষণা করল। সে কেঁদে গড়াগড়ি খেয়ে বলল, আমার সদ্ব্যবহারের প্রতিদান বুঝি এই শাস্তি? বাদশাহ বলল, গোপন কথা প্রকাশ করা হ’ল সবচেয়ে বড় অপরাধ। আমার ভাই তোকে এতো বিশ্বাস করত, আর তার কথাই যখন তুই হজম করতে পারলি না, তখন আমি কোন বিশ্বাসে তোকে জীবিত রাখতে পারি? অবশেষে বাদশাহর আদেশে তাকে ফাঁসি দেয়া হ’ল।
শিক্ষা : কারো গোপন কথা প্রকাশ করা চরম অন্যায়। এর পরিণামও ভয়াবহ।