بسم الله الرحمن الرحيم
প্রকাশকের কথা
আল্লাহ্কে রাযী-খুশী করিবার নেক নিয়তে ইসলামের প্রচার ও প্রসার যিনি যতটুকু করিবেন তিনি সে অনুযায়ী আল্লাহর নিকট হইতে পারিতোষিক লাভ করিবেন। সে কারণ অন্যের আন্দোলনের ব্যাপারে সময় ব্যয় না করিয়া নিজেদের আন্দোলনের প্রতি যথাসম্ভব মনোনিবেশ করাই আমাদের গৃহীত নীতি। কিন্তু সম্প্রতি রাজশাহী গোদাগাড়ী হইতে প্রকাশিত ২৪ পৃষ্ঠার একটি বই আমাদের হাতে আসিয়াছে, যাহার লেখক ও প্রকাশক উভয়েই আহ্লেহাদীছ ঘরের সন্তান। বইটির নাম ‘জামায়াতে ইছলামী বাংলাদেশ একটি খাঁটি ইছলামী দল’। জামায়াতে ইছলামী বাংলাদেশ-এর আমীর অধ্যাপক গোলাম আযম শত ব্যস্ততার মধ্যেও বইটি দেখিয়া সহযোগিতা করিয়াছেন বলিয়া প্রকাশকের আরয-এ উল্লেখ করা হইয়াছে। বইয়ের ভিতরে যেসব অহমিকতা ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য রহিয়াছে, তাহার কিছু নমুনা পেশ করা যাইতে পারে। যেমন- ‘‘যাদের সামান্যতম ঈমান আছে তাদের উচিত আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠাকারী রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইছলামী বাংলাদেশ-এর সাথে একাত্মতা ঘোষণা করা’’ ... (পৃঃ ১৯)। ‘‘আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারলেই তখন আমরা পূর্ণ ঈমানওয়ালা হতে পারবো’’ (পৃঃ ২০)। ‘আল্লাহ যেমন সুন্দর তেমনই সুন্দর, সৎ ও যোগ্য নাগরিক গড়ে তোলাই জামায়াতে ইছলামী বাংলাদেশ-এর উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য’ (পৃঃ ২১)। সবশেষে ‘‘হে আল্লাহ! জামায়াতে ইছলামী বাংলাদেশকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করে জনগণের প্রকৃত কল্যাণ ও সুখ-শান্তির পথ সুগম কর এবং দেশ হ’তে অন্যায়, অনাচার, অবিচার ও দুর্নীতির মূলোৎপাটন কর। আমীন!’’ (পৃঃ ২৪)। মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন।
প্রকাশক-এর বক্তব্য অনুযায়ী লেখক নাকি ‘জমঈয়তে আহ্লেহাদীছের বিশিষ্ট আলেম ও ইছলামী চিন্তাবিদ’। সম্মানিত লেখক জমঈয়তে আহ্লেহাদীছের সদস্য কি-না মাননীয় জমঈয়ত নেতৃবৃন্দ তাহা বলিতে পারিবেন। তবে জমঈয়তে আহ্লেহাদীছের প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি মাওলানা আব্দুল্লাহেল কাফী আল-কোরায়শী (রহঃ) জামায়াতে ইছলামী ও তার প্রতিষ্ঠাতা সম্পর্কে কি মত পোষণ করিতেন তাহা আমরা তাঁহার অমর লেখনী দ্বারা এখানে পেশ করিবার চেষ্টা পাইয়াছি মাত্র। উক্ত বইয়ের লেখক ও প্রকাশকের ন্যায় ১৯৫৭ সালে গাইবান্ধার জনৈক আহ্লেহাদীছ মওলবী ছাহেব মাওলানা আব্দুল্লাহেল কাফী (রহঃ)-কে জামায়াতে ইছলামীতে যোগদানের উপদেশ খয়রাত করিয়া পত্র লিখিয়া যে জওয়াব পাইয়াছিলেন, তাহাই আমরা আজিকার উক্ত আহ্লেহাদীছ লেখক ও প্রকাশক এবং অন্যান্য আহ্লেহাদীছ ভাইদের উদ্দেশ্যে সবিনয়ে পেশ করিলাম।
‘একটি পত্রের জওয়াব’ অংশটি মাওলানা আব্দুল্লাহেল কাফী সম্পাদিত অধুনালুপ্ত মাসিক তর্জুমানুল হাদীছ ফেব্রুয়ারী ১৯৫৭, ৭ম বর্ষ ৩য় সংখ্যা (ফাল্গুন ১৩৬৩) পৃঃ ১৪৩-১৪৮ হইতে এবং ‘ইছলামী জামাআত বনাম আহ্লেহাদীছ আন্দোলন’ অংশটি একই পত্রিকার ৬ষ্ঠ বর্ষ ১ম সংখ্যা (শ্রাবণ ১৩৬২) পৃঃ ৪১-৪৫ হইতে হুবহু উদ্ধৃত হইল। আল্লাহপাক মাননীয় লেখককে জান্নাতুল ফেরদৌস নছীব করুন-আমীন!!