একটি পত্রের জওয়াব

‘জামা’তে ইসলামী’তে আমার যোগদান অসম্ভব কেন?[1]

(একখানা পত্রের জওয়াব)

 -মোহাম্মদ আব্দুল্লাহেল কাফী আল-কোরায়শী

রংপুর গাইবান্ধা মহকুমার জনৈক মওলবী ছাহেব আমাকে মওলানা মওদুদীর ‘‘জামা’তে ইছলামী’’তে দীক্ষাগ্রহণ করার অনুরোধ জানাইয়া একখানা সুদীর্ঘ পত্র প্রেরণ করিয়াছেন। পত্রের ভাষা অত্যধিক ভ্রান্তিপূর্ণ না হইলে আর ইহার দৈর্ঘ সীমা লঙ্ঘন করিয়া না গেলে তর্জুমানের পৃষ্ঠায় আমরা ইহা হু-বহু উধৃত করিয়া দিতাম। এই পত্রের মর্মের সহিত আহলেহাদীছ আন্দোলনের পটভূমিকা, নীতি, আদর্শ ও কর্মসূচীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রহিয়াছে বলিয়া জনসাধারণের অবগতির জন্য ইহার জওয়াব প্রকাশ্যভাবে প্রদান  করাই আমি সংগত মনে করিতেছি। লেখক যখন আমাকে মওদুদী ছাহেবের জামাতে দাখেল হইবার উপদেশ দিয়াছেন এবং তজ্জন্য তাঁহার ও তদীয় জামাতের গুণগান করিতে গিয়া আহলেহাদীছ আন্দোলনের ত্রুটি বিচ্যুতির প্রতিও কটাক্ষ করিয়াছেন, তখন প্রাসংগিক ভাবে আমাকেও তাঁহাদের জামাত সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় প্রবৃত্ত হইতে হইতেছে। ইহা ‘তর্জুমানে’র পরিগৃহীত নীতির অনুকূল না হইলেও ইহার জন্য দায়ী কে, শরীআত অভিজ্ঞ আলিমগণ তাহার বিচার করিবেন। তথাপি পত্র-লেখক সম্পর্কে আমি আমার এই জওয়াবে ব্যক্তিগত আলোচনায় হস্তক্ষেপ করিব না। আল্লাহ যেন আমাকে আর সমুদয় ব্যক্তিকে সত্য কথা বলার আর অজানা বিষয়ে প্রগলভতা না করার তওফীক দান করেন।

وما توفيقى إلا بالله، عليه توكلت و إليه أنيب-

পত্রলেখকের দাবী ও প্রশ্নগুলি আমি যথাক্রমে উল্লেখ করিব এবং সংগে সংগে জওয়াব প্রদান করিয়া যাইব।

১। তিনি লিখিয়াছেন- আপনার প্রচেষ্টায় (রংপুর) হারাগাছে অনুষ্ঠিত আহলেহাদীছ কনফারেন্সে জম্ঈয়তে আহলেহাদীছ নামে ‘‘আহলেহাদীছ আন্দোলনে’’র গোড়া পত্তন হয়।

আমি বলিব, এই দাবীর একটি বর্ণও সত্য নয়। ‘‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’’ যে নূতন ও অর্বাচীন,  ইহা  প্রতিপন্ন  করার  জন্যই  এরূপ  কথা  রচনা  করা  হইয়াছে। প্রকৃতপ্রস্তাবে রছূলুল্লাহর (দঃ) অভ্যুদয়ের সময়েই ‘‘আহলেহাদীছ’’ আন্দোলনের গোড়া পত্তন হয় এবং হযরতের (দঃ) ওফাতের অনতিকাল পরেই

যে সকল হাদীছ বিরোধী আন্দোলন খারেজী, রাফেযী, জহ্মিয়া ও মু’তাযিলা প্রভৃতি নামে গজাইয়া উঠিয়াছিল, তাহাদেরই প্রতিপক্ষ স্বরূপ হাদীছী আন্দোলনের ধারকগণ ‘‘আহলেহাদীছ’’ নামে সুপরিচিত হইয়া উঠেন। কোন আন্দোলন বিশেষকে পরিচালিত ও প্রতিষ্ঠিত করার জন্যই জামাআত বা জম্ঈয়তের প্রয়োজন হয়। ‘রাম না হইতে রামায়ণে’র কিংবদন্তি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। হারাগাছে আহলেহাদীছ আন্দোলনের গোড়া পত্তন হয় নাই। পাক ভারতেও এই আন্দোলন সর্বাপেক্ষা প্রাচীন, কখনও ইহা প্রবলাকারে আত্মপ্রকাশ করিয়াছে, কখনওবা ইহার গতি মন্দিভূত হইয়াছে। আধুনিকভাবেও হারাগাছ কনফারেন্সের অন্ততঃ ষাট বৎসর পূর্ব হইতে হযরত আল্লামা ছানাউল্লাহর (রহঃ) নেতৃত্বে এই আন্দোলন নিখিল পাক ভারত আকারে ‘‘অল ইন্ডিয়া আহলেহাদীছ কন্ফারেন্স’’র ভিতর দিয়া চালিত হইত। অবিভক্ত বাঙলায় ইহার প্রাদেশিক শাখা কলিকাতার মিছ্রীগঞ্জে ছিল। পাঞ্জাব ও বাংলায় যথাক্রমে উর্দু ও বাংলা সাপ্তাহিক আহলেহাদীছ পরিচালিত হইত। পশ্চিম ভারত ও পাঞ্জাবে আহলেহাদীছ মতবাদ[2] ও রীতি সম্পর্কে সহস্র সহস্র পুস্তক বিরচিত হইয়াছে। হাদীছ, শর্হে আহাদীছ, তফ্ছীর, ফিক্হ, অছূলে দ্বীন, সাহিত্য, ইতিহাস ও মুনাযরায় আরাবী, ফার্ছী ও উর্দুতে যে গ্রন্থসম্ভার এই আন্দোলন সৃষ্টি করিতে পারিয়াছে, কোন আহলেহাদীছ মওলবী ছাহেবের পক্ষে তাহা অজ্ঞাত থাকা আমি লজ্জার কারণই মনে করি। বাঙলাদেশে কুফর, শির্ক ও বিদ্আতের বিরুদ্ধে একমাত্র আহলেহাদীছরাই এযাবৎ সংগ্রাম চালাইয়া আসিতেছেন। রাজনীতি ক্ষেত্রে আহলেহাদীছ আন্দোলনের অবদান স্বরূপ পাকিস্তান জন্মগ্রহণ করিয়াছে। কিন্তু যাহারা ধারণা করে, হারাগাছ রংপুরে মাত্র বার বৎসর পূর্বে আহলেহাদীছ আন্দোলন ভূমিষ্ট হইয়াছিল, তাহাদিগকে এ সকল কথা শুনাইয়া কোন লাভ হইবে কি? রাজনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের সংগে আহলেহাদীছ আন্দোলনকে বাঙলায় কি উপায়ে রক্ষা ও শক্তিশালী করা যায়, তাহারই পরামর্শের উদ্দেশ্যে হারাগাছ আহলেহাদীছ কন্ফারেন্সের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হইয়াছিল এবং এই আন্দোলনকে চালাইয়া যাওয়ার জন্যই সর্বসম্মতিক্রমে ‘‘নিখিল বংগ ও আসাম জম্ঈয়তে আহলেহাদীছ’’ গঠিত হইয়াছিল।পশ্চিম বাংলা ও আসাম পাকিস্তানে প্রবেশ করিতে না পারায় উক্ত প্রতিষ্ঠান এখন ‘‘পূর্ব পাকিস্তান জম্ঈয়তে আহলেহাদীছ’’ (বর্তমানে বাংলাদেশ) নামে পরিচালিত হইয়া আসিতেছে।

২। পত্রলেখক একবার বলিয়াছেন যে, তাঁহাকে পথ দেখাইবেন কে? আর তাঁহার নিকট হইতে কাজ বুঝিয়া লইবেন কে? এরূপ কোন ব্যক্তি দেখিতে না পাইয়া তিনি হতাশ হইয়া পড়িয়াছিলেন। আবার পরক্ষণেই লিখিয়াছেন, অর্থাভাব, সাহায্যকারীর অভাব আর শারীরিক অসুস্থতার জন্য ‘‘আপনার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব হইতেও একরূপ বঞ্চিত হইয়াছি।’’

আমি বলিতেছি যে, এই দুই উক্তি পরস্পরের বিরোধী। সকলেই জানেন যে, আমি কোন দলের আমীর বা পথ প্রদর্শক নই। আহলেহাদীছ আন্দোলনের যে অংশটুকু আমার প্রতিষ্ঠান আমাকে চালাইয়া যাইবার নির্দেশ দিয়াছেন, আমি জম্ঈয়তের সভাপতি রূপে আমার অযোগ্যতা ও অক্ষমতা সত্ত্বেও সাধ্যপক্ষে শুধু ততটুকু চালাইয়া যাইতে চেষ্টা করিতেছি। আহলেহাদীছ জামাআত এরূপ কোন সাময়িক নিছক রাজনৈতিক বা সামাজিক পার্টি বিশেষ নয় যে, সকল সময় পার্টির কৌশল ও টেক্নিক বাতলাইবার জন্য আন্দোলনের পরিচালকের সহিত সর্বক্ষণ যোগাযোগ রক্ষা করা ফর্য বা ওয়াজিব হইবে। বিশেষতঃ যাহারা কোরআন ও ছুন্নাহর বিদ্যায় ডিগ্রি লাভ করার দাবী রাখে, তাহাদিগকে সকল সময়ে পথ দেখাইবার ও তাহাদের নিকট হইতে কাজ বুঝিয়া লইবার প্রয়োজন রহিয়াছে এরূপ কথার অর্থ আমি বুঝিতে সক্ষম নই। অবশ্য গুরুতর ও সাময়িক প্রয়োজনে পরামর্শ একান্ত আবশ্যক কিন্তু শরীর বা মনের পীড়ার জন্য যদি কেহ জম্ঈয়তে আহলেহাদীছের পরিচালক বা কর্মীদের সাথে এক যুগের মধ্যেও কিছু বলার বা শ্রবণ করার সুযোগ করিয়া উঠিতে না পারে, তার জন্য ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’ দায়ী হইবে কেন?

৩। পত্রলেখক বলিতে চাহিয়াছেন, এই-রূপ অন্ধকার পরিবেশে তিনি আকস্মাৎ আলোকের  সন্ধান পাইলেন। পাক পাঞ্জাবের সামরিক আদালত মওলানা মওদুদীকে ফাঁসির হুকুম দেওয়ায় দেশব্যাপী যে আন্দোলন সৃষ্টি হইয়াছিল এবং পূর্ব পাকিস্তান জম্ঈয়তে আহলেহাদীছের মুখপত্র ‘‘তর্জুমানের পৃষ্ঠায় সম্পাদকের জোরাল মুক্তি দাবী’’ দর্শন করিয়া এবং ‘‘তর্জুমান সম্পাদকের কাঁদ কাঁদ সুরে ‘মওদুদীকে বর্ত্তমান যুগের মুজাদ্দিদ বলা চলে’ শ্রবণ করিয়া ‘‘এবং পাঞ্জাবের কারাগারে অন্যান্য বর্ষীয়ান উলামার লাঞ্ছনার বিবরণ অবগত হইয়া তিনি মওদুদী ছাহেবের আন্দোলনের প্রতি আকৃষ্ট হইয়া পড়িলেন।’’

আমার বক্তব্য এই যে, কোন ব্যক্তি ফাঁসির আসামী হইলে এবং তজ্জন্য দেশে তোলপাড় ঘটিলেই তাঁহার প্রবর্তিত দলে প্রবেশ করিতে হইবে এবং নিজের জামাআতকে পরিত্যাগ করিতে হইবে এরূপ কথা আলেম দূরে থাক, সাধারণ  বুদ্ধিবিবেচনা-সম্পন্ন লোকও উচ্চারণ করিতে পারেনা। কোন মানুষের সৎসাহস বা বিদ্যাবত্তা প্রশংসার উপযুক্ত হইলে তাহার প্রশংসা করা উচিত, কোন ব্যক্তি কোন ভাল কথা বা কাজ করিলে তাহার সেই উত্তম কথা ও কার্যের সমর্থন করা কর্তব্য। ইহাই কোরআনের নির্দেশ। সুতরাং আহলেহাদীছের নীতি-

تَعَاوَنُواْ عَلَى الْبرِّ وَالتَّقْوَى وَلاَ تَعَاوَنُواْ عَلَى الإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ- (المائدة ২)

‘‘তোমরা সৎ ও সাধু কর্মের সহায়তা কর এবং পাপ ও অত্যাচারে সহায়তা করিওনা।’’

এই আয়তটি পত্রলেখক বোধ হয় কোরআনে পাঠ করিয়া থাকিবেন। কিন্তু তিনি ইহা লক্ষ্য করিয়াছেন কি যে, এই আয়তে কর্মে র সহায়তা করিতে বলা হইয়াছে, কর্মীর দলে ভিড়িয়া যাইবার আদেশ করা হয় নাই? কারণ কর্মীর দৃষ্টিভংগী ও সমুদয় কার্যকলাপ সাহায্য ও সহানুভূতির উপযুক্ত নাও হইতে পারে। লক্ষ্য করিলে বুঝা যায়, এই আয়তে ‘দলপরস্তী’র নিষিদ্ধতা প্রতিপন্ন হইতেছে।

‘‘মওলানা মওদুদীকে আমি ‘মুজাদ্দিদ’ বলিয়াছি’’ এরূপ কথা আমি স্মরণ করিতে অসমর্থ। আর কেহ মুজাদ্দিদ হইতে পারে, এরূপ সম্ভাবনা এমনকি নিশ্চয়তা প্রকাশ করিলেই যে তাঁহাকে ইমামতের একচ্ছত্র সিংহাসন প্রদান করিতে হইবে, ইহাও মূর্খতাব্যঞ্জক উক্তি! ইমাম শাফেয়ী কি মুজাদ্দিদ ছিলেন না? শায়খ আহ্মদ ছরহন্দী কি দ্বিতীয় হাজার সনের মুজাদ্দিদরূপে আখ্যাত নন? শাহ্ ওলীউল্লাহ দেহলভী কি স্বয়ং মুজাদ্দিদ বলিয়া দাবী করেন নাই? নবুওতের দাবীর পূর্বে মীর্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীকে কি অনেক বিশ্বস্ত ব্যক্তি মুজাদ্দিদ বলেন নাই? সুতরাং সকল বিষয়েই কি ইমাম শাফেয়ী, মুজাদ্দিদে আলফুছ্ছানী অথবা ওলীউল্লাহ দেহলভীর অনুসরণ করিয়া চলিতে হইবে? আর নবুওতের দাবীর পরও মীর্যা গোলাম আহমদকে কি মুজাদ্দিদ মানিতে হইবে? কাহাকেও মুজাদ্দিদ স্বীকার করা বা না করা কি নবুওতের মত ঈমানীয়াতের অংগ?

বেরাদরম, আমরা আহলেহাদীছ! আমরা ইমামে আ’যম আবু হানীফা কুফীর (রহঃ) মত পৃথিবীর অপ্রতিদ্বন্দ্বী ফকীহ আর ইমাম আহমদের (রহঃ) মত দুনিয়ার শ্রেষ্ঠতম মুহাদ্দিছেরও তকলীদ করা পছন্দ করিনাই, আমরা শুধু একজনের হাতেই আমাদের দ্বীন ও আবরু সমর্পণ করিয়াছি। তাঁহার নাম হযরত মোহাম্মদ মুছ্তফা (দঃ)! একচ্ছত্র ইমামতের আসন আমরা শুধু তাঁহার জন্যই সুরক্ষিত রাখিয়াছি। এই জন্যই আমরা মোহাম্মদী। এই নামের নেশা আর তাঁহার দলের গৌরবের বিকার আমাদের পক্ষে কোনক্রমেই পরিত্যাগ করা সম্ভবপর হইবে না।

 

كسيكه محرم  باد صباست مى  داند

كه باوجود خزاں بوئے  ياسمن  باقى ست

(প্রভাত সমীরের গন্ধ যাহার পরিচিত, সে জানে- হেমন্ত সমাগমেও বাগানে জেস্মিন পুষ্পের গন্ধ বাকী রহিয়াছে।)

সত্য কথা বলার অপরাধে শুধু ফাঁসির হুকুম নয়, বহু ব্যক্তি ফাঁসি কাষ্ঠে প্রাণ দান করিয়াছেন। এই সেদিনও মিছরের বহু খ্যাতনামা ইংরাজী ও আরাবী শিক্ষিত বিদ্বান সত্য কথা বলিতে গিয়া মৃত্যুবরণ করিলেন। আহলেহাদীছ আন্দোলনের জন্যও বহু প্রথিতযশা মনীষী ফাঁসী, কারাদন্ড ও সম্পত্তি বাজেয়াফ্তের ক্লেশ ভোগ করিয়াছিলেন, তবে কেন মওদুদী ছাহেব তাঁহাদের দলে ভিড়িয়া গেলেন না? একথা পত্রলেখক ভাবিয়া দেখিয়াছেন কি?

[3]। মওলানা মওদুদীর পরিচয় দিতে গিয়া পত্রলেখক আমাকে জানাইয়াছেন, তাঁহার পুস্তকাদি পাঠ করিয়া তিনি জানিতে পারিয়াছেন যে, একজন মুছলমানের বিশেষতঃ একজন আহলেহাদীছের যাহা করা উচিত, মওলানা মওদুদী তাহাই করিতেছেন ও অন্যকে করিবার জন্য আহবান করিতেছেন। তিনি এই পথে সমস্ত দুনিয়াকে সাধারণভাবে আর মুছলমানদিগকে বিশেষভাবে ডাকিতেছেন।

পত্রলেখকের উক্তিতে প্রমাণিত হয় যে, মুছলমানদের বা আহলেহাদীছের বর্তমান সংকটপূর্ণ অবস্থায় কর্তব্য কি, তিনি তাহার দিশা হারাইয়াছিলেন, মওদুদী ছাহেবের পুস্তকগুলি তাহাকে চক্ষু দান করিয়াছে। উত্তম কথা! কিন্তু কোরআন হাদীছ যখন তাঁহাকে পথের সন্ধান দিতে পারে নাই, তখন মওদুদী ছাহেবের  পুস্তক তাঁহাকে যে সঠিক পথেরই সন্ধান দিয়াছে, এ বিষয়ে তিনি কৃতনিশ্চয় হইলেন কেমন করিয়া? বিশেষতঃ আহলেহাদীছদের কর্তব্য কি, তাহাই বা মওদুদী ছাহেব জানিলেন কিরূপে? তিনি আহলেহাদীছ আন্দোলনকে যদি সঠিক ও সত্য জানিতেন তাহা হইলে তিনি স্বয়ং আহলেহাদীছ দলের অন্তর্ভুক্ত হইয়া তাহাদের আন্দোলনকে যোরদার করিতে চেষ্টিত হইতেন না কি? এই আন্দোলনে তাঁহার আস্থা নাই বলিয়াই কি তিনি একটি স্বতন্ত্র আন্দোলন শুরু করেন নাই? যে ব্যক্তি আহলেহাদীছ মতবাদকে বিশ্বাস করেননা, তাঁহার নেতৃত্ব কোন ঈমানদার ও হায়া সম্পন্ন আহলেহাদীছের পক্ষে স্বীকার করা ও তাঁহার আন্দোলনে যোগ দেওয়া কি সম্ভবপর? ইসলামের পথে কি শুধু মওদুদী ছাহেব একাই জনগণকে ডাকিতেছেন? দ্বীনের অন্যান্য আহলেহাদীছ ও হানাফী সেবকগণ কি কিছুই করিতেছেন না? না তাঁহারা সকলেই ইছলাম বিরোধী পথেই মানব সমাজকে ডাকিয়া চলিয়াছেন? আমি মনে করি, পত্রলেখক এবং মওদুদী জামাআতের এই আপত্তিকর উদ্ধত মনোভাবের জন্যই আমাদের পক্ষে তাঁহাদের সহিত সহযোগ করার কোন পথ নাই।

৬। ‘দ্বীনের প্রতিষ্ঠা’ ও ‘বিভেদের পরিহার’ সম্পর্কে পত্রলেখক তাহার দলের ‘মটো’ স্বরূপ ছূরত আশ্ শূরার যে আয়ত উধৃত করিয়াছেন, আমি মনে করি, হয় তিনি ইহার অর্থ অবগত নন, অথবা তাঁহার দলপরস্তীর নূতন দীক্ষা তাঁহার চক্ষু অন্ধ করিয়া দিয়াছে। حُبُّكَ الشَّيْئَ يُعْمِىْ وَ يُصِمُّ কোন বস্ত্তর অতিরিক্ত অনুরাগ যে মানুষকে অন্ধ ও বধির করিয়া ফেলে,[4] ইহাই তাহার জ্বলন্ত প্রমাণ। আমি মওলবী ছাহেবকে হুশিয়ার করিয়া দিতে চাই যে, দুনিয়ার পিঠে কেবল তিনি ও তাঁহার জামাত ইকামতে দ্বীনের ঠিকা গ্রহণ করিয়াছে, যতশীঘ্র সম্ভব, এই অলীক ধারণা তাঁহার স্বীয় মস্তক হইতে বিদূরিত করা উচিত আর তাঁহার চিন্তা করা উচিত তিনি এবং তাঁহার জামাতই মুছলিম সংহতির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করিতেছে, না যাহারা স্ব স্ব সীমানার ভিতর থাকিয়া সাধ্যপক্ষে দ্বীনের সেবা করিয়া যাইতেছে, তাহারাই বিভেদ সৃষ্টিকারী?

ইয়াহুদ ও নাছারাদিগকে তওহীদের পথে আহবান করার জন্য আল্লাহ তদীয় রছূল (দঃ)-কে আদেশ দিয়াছিলেন, قُلْ يَا أَهْلَ الْكِتَابِ تَعَالَوْاْ إِلَى كَلَمَةٍ سَوَاء بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ أَلاَّ نَعْبُدَ إِلاَّ اللّهَ وَلاَ نُشْرِكَ بِهِ شَيْئاً- ‘আপনি বলুন- হে গ্রন্থধারী সমাজ, এস, আমরা সকলেই এমন একটি কথায় সমবেত হই, যাহা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে সর্বস্বীকৃত। সেই কথাটি হইতেছে এই যে, আমরা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাহারও ইবাদত করিব না এবং তাঁহার সহিত কোন বস্ত্তকে অংশী করিব না’ (আলে ইমরান ৬৪)। পত্রলেখক এই আয়তের সাহায্যে আমাদিগকে এবং অন্যান্য মুছলমানদিগকে তাঁহাদের জামাতে ইছলামীতে ভিড়িয়া যাইবার সৎপরামর্শ দিয়াছেন। আমি বলিব, ইহাও তাঁহার এবং তাঁহার দলের ধৃষ্টতা ছাড়া আর কিছুই নয়। তাঁহার জানিয়া রাখা উচিত যে, শির্ক ও কুফরের বিরুদ্ধে পাক ভারত উপমহাদেশে আহলেহাদীছগণ যে জদ্দ ও জিহাদ চালাইয়া আসিয়াছেন আর আজও তাঁহাদের আপামর জনসাধারণ কুফর ও শির্ক হইতে যতটা দূরে সরিয়া আছেন, তাহার দৃষ্টান্ত বিরল। তওহীদের শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য আহলেহাদীছগণ মওলানা মওদুদী ও তদীয় জামাতের আদৌ মুখাপেক্ষী নয়। প্রকাশ্য শির্ক ও কুফরের বিরুদ্ধে  এই  দলের আমীর আজ পর্যন্ত কি সংগ্রাম করিয়াছেন, পাক ভারতের আহলেহাদীছগণ তাহা অবগত নন। উল্লিখিত আয়ত উধৃত করার তাৎপর্য কি ইহাই নয় যে, আমরা এবং অন্যান্য সমুদয় মুছলমান ইয়াহুদ নাছারার পর্যায়ভুক্ত আর তাহাদিগকে তওহীদের পথে আহবানকারী হইতেছে জামাতে ইছলামী এবং উহার আমীর! আমি মনে করি, এই দুষ্ট মনোভাবের জন্যই ভারত রাষ্ট্রের অন্তর্গত মধ্য প্রদেশের মওলানা আব্দুল মাজেদ দরইয়াবাদী প্রমুখ বিদ্বানগণ মওদুদী আন্দোলনকে ‘খারেজী আন্দোলন’ বলিয়া অভিহিত করিয়া থাকেন।

৭। পত্রলেখক বলিয়াছেন, যাহাদের মধ্যে মৌলিক ইত্তিহাদ রহিয়াছে, তাহাদিগকে জামাতে ইছলামী একটি দলে মিলিত হইবার সুযোগ দিয়াছে আর সেই জন্যই নাকি পত্রলেখক নিজের জন্য এই ‘‘সর্বমুখী আন্দোলন’’ বাছিয়া লইয়াছেন।

পত্রলেখক নিজের জন্য কি বাছিয়া লইয়াছেন, তার জওয়াবদিহী তিনিই তাঁহার সৃষ্টিকর্তার কাছে করিবেন। আমি শুধু এইটুকুই বলিব যে, কুরআন ও সুন্নাতে ছহীহাই একমাত্র মর্মকেন্দ্র, যে স্থানে সমুদয় মুছলমান মিলিত হইতে পারে। মওদুদী দৃষ্টিভংগী তাঁহার এবং তাঁহার দলের মিলনকেন্দ্র হইতে পারে কিন্তু মুছলিম জাতির জন্য নয়! ‘জামাতে ইছলামী’তে সকল দলের মিলিত হইবার সুযোগ রহিয়াছে, এ-কথা সম্পূর্ণ অলীক। মওদুদী ছাহেব ইছলামের যে ব্যাখ্যা দিয়া  থাকেন, তাহাতে দীক্ষিত না হওয়া পর্যন্ত এবং তাঁহাকে একচ্ছত্র নেতা স্বীকার না করা পর্যন্ত ‘জামাতে ইছলামীর’ দ্বার সকল মুছলমানের জন্য রুদ্ধ। আমি যাহা বলিতেছি তাহার অসত্যতার একটি নযীরও জামাতে ইছলামীর কোন ভক্ত প্রমাণিত করিতে পারিবে না।

আহলেহাদীছ আন্দোলন ইহার সম্পূর্ণ বিপরীত; এই জামাআতে থাকার জন্য ব্যক্তি বিশেষের মতবাদ ও দৃষ্টিভংগীকে স্বীকার করার প্রয়োজন হয় না। কোন ব্যক্তি বিশেষকে আমীর না মানিলে তাহাকে আহলেহাদীছ জামাআত হইতে খারিজ করার উপায় নাই। আহলেহাদীছগণ বুখারীর সমুদয় মর্ফূ ও মুছনদ হাদীছকে অকাট্য বলিয়া বিশ্বাস করেন, তাঁহারা প্রমাণিত ‘খবরে আহাদকে’ অবশ্যপ্রতিপালনীয় মনে করেন। ফকীহদের আসন মোহাদ্দেছীন অপেক্ষা উন্নত মনে করেন না। কোন হাদীছ প্রমাণিত বলিয়া সাব্যস্ত হইলে কোন নির্দিষ্ট ইমাম উহা অনুসরণ করার অনুমতি না দিলেও উক্ত হাদীছের অনুসরণ ওয়াজিব জানেন।

এই বিষয়গুলি মৌলিক না ফরূআত? জামাতে ইছলামীর নেতা উল্লিখিত বিষয়গুলির একটিও মানেন না। এমনকি জানিয়া শুনিয়া হাদীছ প্রত্যাখ্যানকারীকে অনেক ক্ষেত্রে তিনি নিরপরাধ বলিয়াছেন। অন্ধভক্তির পরিবর্তে মওদুদী ছাহেবের মাসিক তর্জমানুল কোরআন এবং ইমাম বুখারী সম্পর্কে লিখিত তাঁহার সাম্প্রতিক প্রবন্ধগুলি, যাহা তাঁহার নিজস্ব মাসিক ও দলীয় দৈনিক ও সাপ্তাহিক উর্দু কাগজগুলিতে প্রকাশিত হইয়াছে, পাঠ করিতে পারিলে আমার উক্তির সত্যতা সহজেই হৃদয়ংগম হইবে। প্রয়োজন হইলে আমিও আমার উক্তির যথার্থতা প্রতিপন্ন করিতে রাযী আছি।

তাঁহার প্রাথমিক লেখাগুলি পাঠ করিয়াই তীক্ষ্ণ ধ্বীশক্তি সম্পন্ন মরহুম আল্লামা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী স্বীয় প্রতিভা বলে যাহা ভবিষ্যদ্বাণী করিয়াছিলেন, আহলেহাদীছগণ তাহাও পাঠ করিয়া দেখিতে পারেন। পাঞ্জাব গোজরানওয়ালার মওলানা মোহাম্মাদ ইসমায়ীল ছলফী, যিনি হারাগাছ আহলেহাদীছ কনফারেন্সেও উপস্থিত ছিলেন, হাদীছ সম্পর্কে জামাতে ইছলামীর দৃষ্টিভংগী (جماعت اسلامى كا نظريه حديث ) নামেও একটি মূল্যবান পুস্তিকা রচনা করিয়াছেন। ফলকথা মওলানা আবুল আলা মওদুদী আর যাহাই হউন, আহলেহাদীছ নন এবং আহলেহাদীছদের সাথে তাঁর যে মতভেদ, তাহা খুঁটিনাটি নয়, অছূলে দ্বীনের মতভেদ!

৮। সাত নম্বর জওয়াবে মওলানা মওদুদী আহলেহাদীছ মতবাদের বিরোধী কি না, পত্রলেখকের এ প্রশ্নেরও জওয়াব রহিয়াছে। আর তিনি হানাফী কিনা, এ প্রশ্নের উত্তর আমার পরিবর্তে হানাফী জামাআতের বিদ্বানগণই উত্তমরূপে প্রদান করিতে সক্ষম। আমার নিজের জ্ঞান ও বিশ্বাস মত আমি তাঁহাকে হানাফী জানি, অবশ্য দেওবন্দের মওলানা হুছাইন আহমদ মদনী প্রমুখ বিদ্বানগণ এবং পশ্চিম পাকিস্তানের মওলানা আহমদ আলী, পাঞ্জাবের হানাফী জামাআতের আমীরে শরীআত মওলানা আতাউল্লাহ শাহ বুখারী (১৯২৭ সালে বৃটিশ সরকার যখন আমাকে রাজদ্রোহের অভিযোগে এক বৎসরের জন্য কারাগারে নিক্ষেপ করিয়াছিলেন, তখন ইনি আমার কারা সহচর ছিলেন) প্রভৃতি হানাফী বিদ্বানগণ মওদুদী ছাহেবকে হানাফীও স্বীকার করেন নাই। অন্য যে যাহাই বলুক, আমি মওলানা মওদুদী ছাহেবকে মুল্হিদ, বেদ্বীন ও ইছ্লামের শত্রু বিবেচনা করি না, তাঁহাকে দজ্জালও জানি না। কতকগুলি অছূল ও ফরূআতে তাঁহাকে ভ্রান্ত মনে করিলেও এবং তাঁহাকে আহলেহাদীছ বিরোধী বলিয়া জানিলেও তাঁহার ঈমান, ইছ্লাম ও বিদ্যাবত্তায় আমার সন্দেহ নাই।

হাদীছ শাস্ত্রে বিশেষ পারদর্শী না হইলেও যেহেতু তিনি স্বয়ং ইংরাজী শিক্ষিত, তাই নব্য দলের মনোভাব, দৃষ্টিভঙ্গি ও ভাষা (Mode of  Expression) এবং জগতের বর্তমান গতি ও পরিবেশের সহিত তিনি সুপরিচিত এবং ইছলামের আদর্শ ও শিক্ষার সহিত সেগুলির সামঞ্জস্য বিধানে তাঁহার দক্ষতা রহিয়াছে। এ জন্য তাঁহার দলে ইংরাজী শিক্ষিতরাই আকৃষ্ট হইয়াছে বেশী। যতদিন পর্যন্ত তাঁহার মস্তকে দলীয় পার্লামেন্টারী কার্যক্রমের অভিসন্ধি প্রবেশ করে নাই, ততদিন পর্যন্ত তাঁহার সাহিত্য সাধারণভাবে মনোজ্ঞই ছিল, কিন্তু দলপরস্তি ও ফ্যাসিস্টিক স্বৈরভাব সৃষ্টি হওয়ার পর হইতে তাঁহার লেখনী তার পূর্বকার শক্তি হারাইয়া ফেলিয়াছে। অদূর ভবিষ্যতে তিনি নবুওতের দাবী করিবেন কিনা? এ প্রশ্নের জওয়াব আমার কাছে নাই, কারণ আমি ‘আলিমুল গয়েব’ অর্থাৎ ভবিষ্যদ্বক্তা নই। তবে দীর্ঘকাল ধরিয়া তাঁহার লেখা পড়িয়া এবং অল্প সময়ের জন্য তাঁহাকে দর্শন করিয়া আমার এই ধারণাই জন্মিয়াছে যে, পয়গম্বরীর দাবী তাঁহার পক্ষে সম্ভবপর হইবে না। কারণ কতক লোকের মস্তকে আঘাত হানিবার যোগ্যতা তাঁহার মধ্যে থাকিলেও মানুষের মনে দাগ কাটার ক্ষমতা তাঁহার নাই!

পত্রলেখক আমাকে জামাতে ইছলামীতে দীক্ষা গ্রহণ করার জন্য যে আমন্ত্রণ জানাইয়াছিলেন, তজ্জন্য অশেষ ধন্যবাদ! আমার পক্ষে এবং কোন আহলেহাদীছের পক্ষে এ আমন্ত্রণ স্বীকার করার উপায় নাই কেন, তাহার জওয়াব দিতে গিয়া তর্জুমানের কয়েক পৃষ্ঠাই নিঃশেষিত হইল। সুতরাং আহলেহাদীছ জামাআত ও আন্দোলনের দোষত্রুটি ধরিয়া পত্রলেখক আমাকে যে সকল প্রশ্ন করিয়াছেন, সেগুলি স্বতন্ত্রভাবেই ইনশাঅল্লাহ আলোচনা করিব।

এস্থলে সংক্ষেপে এইটুকু বলিব যে, আহলেহাদীছ পার্লামেন্টারী তৎপরতার আন্দোলন নয়, ইহা তাহার অনুসারীদিগকে ‘‘আহলেহাদীছ পার্টির’’ পক্ষ হইতে মনোনয়ন প্রদান করে না। ইহার প্রচার পদ্ধতি খৃষ্টান বা কাদিয়ানী মিশনের মত নয়। বাহিরে আড়ম্বর দেখাইয়া লোক টানা ইহার নীতি নয়। সুতরাং ইহার কলা-কৌশল সবসময় পরিবর্তনশীলও নয়। আহলেহাদীছ আন্দোলনের ভিতরে ও বাহিরে আর জম্ঈয়তে আহলেহাদীছের কর্মসূচিতে অথবা কর্মীদলে কোন দোষত্রুটি নাই, এরূপ কথা কেহই বলে না। মূলনীতিকে ঠিক রাখিয়া সমস্তই সংশোধিত ও পরিবর্তিত হইতে পারে। ইহার মধ্যে ডিক্টেটর-শিপ নাই। কাহারও মুজাদ্দেদীয়ত ও ইমামতের অভিমানও নাই। গণতান্ত্রিক[5] ‘শূরার’ অনুসরণ করিয়া নূতন পরিচালক, নূতন কমিটি সহজেই গঠন করা যাইতে পারে। অতএব কোন আহলেহাদীছের পক্ষে ইহার ত্রুটি বিচ্যুতির জন্য আহলেহাদীছ জামাআত পরিত্যাগ করা এবং অন্য জামাতে ভর্তি হওয়া অবৈধ ও অন্যায়- ওয়াছ্ছালাম।

আহ্কর

মোহাম্মদ আব্দুল্লাহেল কাফী আল্-কোরায়শী



[1]. মাননীয় লেখক কর্তৃক সম্পাদিত অধুনালুপ্ত মাসিক তর্জুমানুল হাদীছ ফেব্রুয়ারী ১৯৫৭, ৭ম  বর্ষ ৩য় সংখ্যা (ফাল্গুন ১৩৬৩) পৃঃ ১৪৩-১৪৮ হইতে সংকলিত। -প্রকাশক।

[2]. আহলেহাদীছ কোন মতবাদ নয়, এটি একটি পথের নাম। যা পবিত্র কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহ দ্বারা পরিচালিত। -পরিচালক হা.ফা.বা।

[3]. এখানে ক্রমিক সংখ্যা ৪ হওয়া উচিত ছিল।

[4]. আলবানী বলেন, হাদীছটি মরফূ সূত্রে বর্ণিত হ’লেও মওকূফ হওয়াটাই অধিক সামঞ্জস্যশীল। ছাহাবী আবুদ্দারদা (রাঃ) হ’তে আবুদাঊদ বর্ণিত অত্র হাদীছটি যঈফ। -মিশকাত হা/৪৯০৮; সিলসিলা যঈফাহ হা/১৮৬৮। -পরিচালক হা.ফা.বা।

[5]. গণতান্ত্রিক শূরা কথাটি ঠিক নয়। কেননা সেখানে যোগ্য-অযোগ্য নির্বিশেষে অধিকাংশের মতামতই চূড়ান্ত বলে গৃহীত হয়। এতদ্ব্যতীত সেখানে দলাদলি, ঝগড়া ও দর কষাকষি অপরিহার্য। পক্ষান্তরে ইসলামী শূরায় অহি-র বিধানই চূড়ান্ত। যোগ্য সদস্যগণ সেখানে আল্লাহর বিধানের পক্ষে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। -পরিচালক হা.ফা.বা।