জিহাদের হাতিয়ার
(أسلحة الجهاد)
ইসলামী পরিভাষায় জিহাদের তাৎপর্য চিরকাল একই থাকবে। তবে জিহাদের পদ্ধতি পরিবর্তনশীল। অসিযুদ্ধ এখুনি নয়। মসীযুদ্ধ অসির চাইতে মারাত্মক। ইমাম ইবনে তায়মিয়াহ (৬৬১-৭২৮ হিঃ/১২৬৩-১৩২৮ খৃঃ)-কে জেলখানায় আটকে রেখেও সরকার নিশ্চিন্ত হ’তে না পেরে তাঁর কাগজ-কলম কেড়ে নিয়েছিল। বাধ্য হয়ে জেলখানার বাবুর্চির সৌজন্যে কিছু কয়লা সংগ্রহ করে তাই দিয়ে নিজ কক্ষের দেওয়াল কুরআন ও সুন্নাহ্র কালি দিয়ে আলোকিত করেছিলেন।
বাতিল শক্তিগুলি যে সব হাতিয়ার নিয়ে হক-কে মিটিয়ে ফেলার চেষ্টায় রত, আমাদেরকে ওহোদের ময়দানের ন্যায় বাতিলের হামলার সেসব অলি-গলিতে সতর্ক প্রহরায় থাকতে হবে। এ যুগে জিহাদের সর্বাপেক্ষা বড় হাতিয়ার হ’ল তিনটি: কথা, কলম ও সংগঠন। আপনাকে অবশ্যই কথা বলা শিখতে হবে। যদি ‘টেবিল টক’-এ পটু হন, সেটা করুন। যদি স্টেজ-এর বক্তৃতায় পারঙ্গম হন, তবে তাই করুন। ইল্মের ডিপো হয়ে বসে থাকলে চলবে না। দাওয়াত দিন। মানুষের নিকট হক-এর আহবান পৌঁছে দিন। যে কোন সমস্যায় কুরআন ও সুন্নাহ থেকে সমাধান নিন। দ্বীনের ব্যাপারে কপোল কল্পিত কোন কথা বলবেন না। কুটতর্কে জড়াবেন না।
লিখুন। আপনার লেখা মানুষের হৃদয়তন্ত্রীতে আঘাত হানুক। সেখানে ঝংকার উঠুক। সমাজ বিপ্লবের অগ্নিশিখা জ্বলে উঠুক। ঘুণে ধরা আক্বীদায় পরিবর্তন আসুক। আপনার বই ছিঁড়ে ফেলুক, দুঃখ নেই। কিন্তু সাথে সাথে হৃদয়ে লালিত জাহেলিয়াতের অন্ধকার যেন ছিঁড়ে খান খান হয়ে যায়। বিদেশী ভাষা শিখুন। কিন্তু মায়ের ভাষায় লিখুন। কেননা আল্লাহ আপনাকে-আমাকে এদেশেই দ্বীন প্রচারের জন্য মনোনীত করেছেন। ফালিল্লা-হিল হাম্দ।
বিচ্ছিন্ন জনগণ যখন একটি আদর্শমূলে একই লক্ষ্যে একই নেতৃত্বের অধীনে সংগঠিত হয়, তখন সেটি একটি জনশক্তিতে পরিণত হয়। আমাদেরকে অবশ্যই একটি সংঘবদ্ধ জনশক্তি হিসাবে, একটি ঐক্যবদ্ধ সামাজিক শক্তি হিসাবে গড়ে উঠতে হবে। এদেশের বাতিলপন্থীরা তাদের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ। হকপন্থীদের তাদের করুণার ভিখারী হয়ে বেঁচে থাকার কোন অবকাশ নেই।