ইনসানে কামেল
তিনটি হক আদায়ের তারতম্য
স্বাভাবিক অবস্থায় তিনটি হক সর্বদা সমভাবে আদায় করে যেতে হবে। নইলে ‘ইনসানে কামেল’ থাকা যাবে না। তবে সময় বিশেষে একেকটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। যেমন প্রচন্ড দাবদাহে আপনার জীবন ওষ্ঠাগত। কোনমতেই সহ্য করতে পারছেন না। এ অবস্থায় আপনি ছিয়াম ভেঙ্গে ফেলে ক্বাযা করতে পারেন। এখানে হাক্কুল্লাহর উপরে হাক্কুন নাফ্স প্রাধান্য পেল। পাশেই মসজিদ। অলসতায় ঘরে ফরয ছালাত আদায় করতে মন চাচ্ছে। তা হবে না, আপনাকে মসজিদে গিয়ে জামা‘আতে ছালাত করতে হবে। অনুরূপভাবে মন চাচ্ছে না, তাই আজকে আর ছালাত আদায় করব না বা ছিয়াম পালন করব না। তা হবে না। আপনাকে অবশ্যই ফরয ছালাত ও ছিয়াম আদায় করতে হবে। এখানে হাক্কুন নাফসের উপরে হাক্কুল্লাহ অগ্রাধিকার পাবে। আপনি যাকাত বা ওশরের যোগ্য হয়েছেন। কিন্তু মন চাচ্ছে না দিতে। কিন্তু না, আপনাকে দিতেই হবে যথাযথভাবে ও যথাসময়ে হিসাব করে। এখানে হাক্কুল্লাহ ও হাক্কুল ইবাদ অগ্রাধিকার পাবে। বান্দার আমানত আপনার কাছে রয়েছে, সেটা আদায় করেননি। কাউকে তোহমত দিয়েছেন, গীবত করেছেন, কারু সম্মান নষ্ট করেছেন অথবা আপনার সামনে কেউ বান্দার হক নষ্ট করছে এমতাবস্থায় হাক্কুল্লাহর চাইতে হাক্কুল ইবাদ প্রাধান্য পাবে। মনে রাখতে হবে যে, হাক্কুল ইবাদ নষ্ট করলে বান্দা মাফ না করলে আল্লাহ আপনাকে মাফ করবেন না। তাই নফল ছালাত-ছিয়াম ও হজ্জ-ওমরাহ পালনের চাইতে হাক্কুল ইবাদ আদায় করা অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এইভাবে মানুষ যখন তিনটি হক-এর তারতম্য বুঝে তা সঠিকভাবে আদায় করবে, তখনই সে ‘ইনসানে কামেল’ বা পূর্ণ মানুষ হিসাবে গণ্য হবে।