যরূরী দো‘আ সমূহ (الأدعية الضرورية )
দো‘আর ফযীলত : আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘মুসলমান যখন অন্য কোন মুসলমানের জন্য দো‘আ করে, যার মধ্যে কোনরূপ গোনাহ বা আত্মীয়তা ছিন্ন করার কথা থাকে না, আল্লাহ উক্ত দো‘আর বিনিময়ে তাকে তিনটির যেকোন একটি দান করে থাকেন : (১) তার দো‘আ দ্রুত কবুল করেন অথবা (২) তার প্রতিদান আখেরাতে প্রদান করার জন্য রেখে দেন অথবা (৩) তার থেকে অনুরূপ আরেকটি কষ্ট দূর করে দেন। একথা শুনে ছাহাবীগণ বললেন, তাহ’লে আমরা বেশী বেশী দো‘আ করব। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, আল্লাহ আরও বেশী দো‘আ কবুলকারী’।[1] অত্র হাদীছে বর্ণিত উপরোক্ত শর্তটির সাথে অন্যান্য ছহীহ হাদীছে বর্ণিত আরও তিনটি শর্ত রয়েছে। যথা : (১) দো‘আকারীর খাদ্য, পানীয় ও পোষাক পবিত্র হওয়া (অর্থাৎ হারাম না হওয়া) (২) দো‘আ কবুল হওয়ার জন্য ব্যস্ত না হওয়া (৩) উদাসীনভাবে দো‘আ না করা এবং দো‘আ কবুলের ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদী থাকা’।[2]
দো‘আ কবুলের স্থান ও সময় : আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব’।[3] এতে বুঝা যায় যে, যে কোন স্থানে যে কোন সময় যে কোন ভাষায় আল্লাহকে ডাকলে তিনি সাড়া দিবেন। তবে ছালাতের মধ্যে আরবী ব্যতীত অন্য ভাষায় দো‘আ করা যাবে না। দো‘আর জন্য হাদীছে বিশেষ কিছু স্থান ও সময়ের ব্যাপারে তাকীদ এসেছে, যেগুলি সংক্ষেপে বর্ণিত হ’ল :
(১) কুরআনী দো‘আ ব্যতিরেকে হাদীছে বর্ণিত দো‘আ সমূহের মাধ্যমে সিজদায় দো‘আ করা (২) শেষ বৈঠকে তাশাহ্হুদ ও সালামের মধ্যবর্তী সময়ে (৩) জুম‘আর দিনে ইমামের মিম্বরে বসা হ’তে সালাম ফিরানো পর্যন্ত সময়কালে (৪) রাত্রির নফল ছালাতে (৫) ছিয়াম অবস্থায় (৬) রামাযানের ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ বেজোড় রাত্রিগুলিতে (৭) ছাফা ও মারওয়া পাহাড়ে উঠে বায়তুল্লাহর দিকে মুখ করে দু’হাত উঠিয়ে (৮) হজ্জের সময় আরাফা ময়দানে দু’হাত উঠিয়ে (৯) মাশ‘আরুল হারাম অর্থাৎ মুযদালিফা মসজিদে অথবা বাইরে স্বীয় অবস্থান স্থলে ১০ই যিলহাজ্জ ফজরের ছালাতের পর হ’তে সূর্যোদয়ের আগ পর্যন্ত (১০) ১১, ১২ ও ১৩ই যিলহাজ্জ তারিখে মিনায় ১ম ও ২য় জামরায় কংকর নিক্ষেপের পর একটু দূরে সরে গিয়ে দু’হাত উঠিয়ে (১১) কা‘বাগৃহের ত্বাওয়াফের সময় রুকনে ইয়ামানী ও হাজারে আসওয়াদের মধ্যবর্তী স্থানে। (১২) ‘কারু পিছনে খালেছ মনে দো‘আ করলে, সে দো‘আ কবুল হয়। সেখানে একজন ফেরেশতা নিযুক্ত থাকেন। যখনই ঐ ব্যক্তি তার ভাইয়ের জন্য দো‘আ করে, তখনই উক্ত ফেরেশতা ‘আমীন’ বলেন এবং বলেন তোমার জন্যও অনুরূপ হৌক’।[4] এতদ্ব্যতীত অন্যান্য আরও কিছু স্থানে ও সময়ে।
আরাফা, মুযদালিফা ও অন্যান্য স্থানে পঠিতব্য দো‘আ সমূহ :
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, শ্রেষ্ঠ দো‘আ হ’ল আরাফার দো‘আ। আর আমি ও আমার পূর্বেকার নবীগণ শ্রেষ্ঠ যে দো‘আ করেছেন, তা হ’ল,
১- لآ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ، لاَشَرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، بِيَدِهِ الْخَيْرُ، يُحْيِىْ وَيُمِيْتُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْئٍ قَدِيْرً-
(১) উচ্চারণ: লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহূ লা শারীকা লাহূ; লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু, বিইয়াদিহিল খাইরু, ইউহ্য়ী ওয়া ইউমীতু ওয়া হুয়া ‘আলা কুল্লে শাইয়িন ক্বাদীর।
অর্থ: ‘আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই। তিনি এক, তাঁর কোন শরীক নেই। তাঁরই জন্য সকল রাজত্ব ও তাঁরই জন্য সকল প্রশংসা। তাঁর হাতেই রয়েছে সকল কল্যাণ। তিনিই বাঁচান ও তিনিই মারেন। তিনি সব কিছুর উপরে ক্ষমতাবান’। ত্বাবারাণীর বর্ণনায় দো‘আটি আরাফার দিন সন্ধ্যায় পড়ার কথা এসেছে।[5] অন্য বর্ণনায় এসেছে, যে ব্যক্তি মাগরিব ও ফজরের ছালাতের শেষে সালাম ফিরানোর পরপরই উক্ত দো‘আ দশবার পড়বে, সে ব্যক্তির জন্য প্রতি বারের বিনিময়ে ১০টি নেকী লেখা হবে, ১০টি গোনাহ মুছে দেওয়া হবে এবং তার মর্যাদার স্তর ১০টি করে উন্নীত করা হবে। এতদ্ব্যতীত এটি তার জন্য মন্দ কাজ হ’তে রক্ষাকবচ হবে ও বিতাড়িত শয়তান হ’তে সে নিরাপদ থাকবে এবং কোন পাপ তাকে স্পর্শ করবে না (অর্থাৎ তাকে ধ্বংস করতে পারবে না) শিরক ব্যতীত। অতঃপর সে ব্যক্তি হবে সকলের চাইতে উত্তম আমলকারী’।[6]
২- سُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ لِلّهِ وَلآ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَاللهُ أِكْبَرُ-
(২) উচ্চারণ: সুবহা-নাল্লা-হি ওয়ালহামদুলিল্লা-হি অলা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াল্লা-হু আকবার।
অর্থ: আল্লাহ পবিত্র। সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। আল্লাহ সবার চেয়ে বড়’।[7]
৩- اَللَّهُمَّ إِنِّىْ اَسْئَلُكَ الْعَفْوَ وَالْعَافِيَةَ فِىْ دِيْنِىْ وَ دُنْيَاىَ وَاَهْلِىْ وَ مَالِىْ-
(৩) উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাল ‘আফওয়া ওয়াল ‘আ-ফিয়াতা ফী দ্বীনী ওয়া দুন্ইয়া-য়া ওয়া আহ্লী ওয়া মা-লী।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি আমার দ্বীন ও দুনিয়ায়, আমার পরিবারে ও বিষয়-সম্পদে তোমার ক্ষমা ও নিরাপত্তা প্রার্থনা করছি’।[8]
৪- اَللَّهُمَّ إِنِّىْ اَعُوْذُبِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ وَ الْعَجْزِ وَالْكَسَلِ وَالْجُبْنِ وَالْبُخْلِ وَضَلَعِ الدَّيْنِ وَ غَلَبَةِ الرِّجَالِ-
(৪) উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযানি, ওয়াল ‘আজযি ওয়াল কাসালি, ওয়াল জুবনি ওয়াল বুখ্লি, ওয়া যালা‘ইদ দায়নি ওয়া গালাবাতির রিজা-লি।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ হ’তে, অক্ষমতা ও অলসতা হ’তে, ভীরুতা ও কৃপণতা হ’তে এবং ঋণের বোঝা ও মানুষের যবরদস্তি হ’তে’।[9]
৫- اَللَّهُمَّ إِنِّىْ اَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْجُبْنِ وَ اَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْبُخْلِ وَ اَعُوْذُ بِكَ مِنَ اَرْذَلِ الْعُمُرِ وَ اَعُوْذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الدُّنْيَا وَعَذَابِ الْقَبَرِ-
(৫) উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল জুব্নে, ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিনাল বুখ্লে, ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন আরযালিল ‘উমুরে, ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন ফিৎনাতিদ্দুন্ইয়া ওয়া ‘আযা-বিল ক্বাব্রে।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! (১) আমি তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি ভীরুতা হ’তে (২) আশ্রয় প্রার্থনা করছি কৃপণতা হ’তে (৩) আশ্রয় প্রার্থনা করছি জ্বরাজীর্ণ বয়স হ’তে এবং (৪) আশ্রয় প্রার্থনা করছি দুনিয়ার ফিৎনা হ’তে ও (৫) কবরের আযাব হ’তে’।[10]
৬- اَللَّهُمَّ إِنِّىْ اَعُوْذُبِكَ مِنْ زَوَالِ نِعْمَتِكَ وَتَحَوُّلِ عَافِيَتِكَ وَفُجَاءَةِ نِقْمَتِكَ وَجَمِيْعِ سَخَطِكَ-
(৬) উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিন যাওয়া-লি নি‘মাতিকা, ওয়া তাহাউভুলি ‘আ-ফিয়াতিকা, ওয়া ফুজা-আতি নিক্বমাতিকা, ওয়া জামী‘ই সাখাত্বিকা।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি আমার থেকে তোমার নে‘মত চলে যাওয়া হ’তে, তোমার দেওয়া সুস্থতার পরিবর্তন হ’তে, তোমার শাস্তির আকস্মিক আক্রমণ হ’তে এবং তোমার যাবতীয় অসন্তুষ্টি হ’তে।[11]
৭- رَبِّ اَعِنِّىْ وَلاَتُعِنْ عَلَىَّ وَانْصُرْنِىْ وَلاَتَنْصُرْ عَلَىَّ وَاهْدِنِىْ وَيَسِّرِ الْهُدَى لِىْ-
(৭) উচ্চারণ: রবিব আ‘ইন্নী অলা তু‘ইন ‘আলাইয়া, ওয়ানছুরনী অলা তানছুর ‘আলাইয়া, ওয়াহদিনী ওয়া ইয়াসসিরিল হুদা লী।
অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে সহায়তা দাও এবং আমার বিরুদ্ধে সহায়তা করো না। আমাকে সাহায্য কর এবং আমার বিরুদ্ধে সাহায্য করো না। আমাকে হেদায়াত দাও এবং আমার জন্য হেদায়াতকে সহজ করে দাও’।[12]
৮- اَللَّهُمَّ إِنِّىْ اَعُوْذُبِكَ مِنْ جَهْدِ الْبَلاَءِ وَدَرَكِ الشَّقَاءِ وَ سُوْءِ الْقَضَاءِ وَ شَمَاتَةِ الْأَعْدَاءِ-
(৮) উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিন জাহদিল বালা-ই, ওয়া দারাকিশ শাক্বা-ই, ওয়া সূইল ক্বাযা-ই, ওয়া শামা-তাতিল আ‘দা-ই।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি অক্ষমকারী বিপদের কষ্ট হ’তে, দুর্ভাগ্যের আক্রমণ হ’তে, মন্দ ফায়ছালা হ’তে এবং শত্রুর হাসি হ’তে’।[13]
৯- يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوْبِ ثَبِّتْ قَلْبِىْ عَلَى دِيْنِكَ، اَللَّهُمَّ مُصَرِّفَ الْقُلُوْبِ صَرِّفْ قُلُوْبَنَا عَلَى طَاعَتِكَ-
(৯) উচ্চারণ: ইয়া মুক্বাল্লিবাল ক্বুলূবি ছাবিবত ক্বালবী ‘আলা দীনিকা; আল্লা-হুম্মা মুছার্রিফাল ক্বুলূবি ছার্রিফ ক্বুলূবানা ‘আলা ত্বোয়া-‘আতিকা।
অর্থ: হে হৃদয় সমূহের পরিবর্তনকারী! আমার হৃদয়কে তোমার দ্বীনের উপর দৃঢ় রাখো’। ‘হে অন্তর সমূহের রূপান্তরকারী! আমাদের অন্তর সমূহকে তোমার আনুগত্যের দিকে ফিরিয়ে দাও’।[14]
১০- اَللَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّىْ-
(১০) উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নাকা ‘আফুববুন তোহেববুল ‘আফওয়া ফা‘ফু ‘আন্নী।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমি ক্ষমাশীল। তুমি ক্ষমা করতে ভালবাস। অতএব আমাকে ক্ষমা কর’। বিশেষ করে লায়লাতুল ক্বদরে এটা পড়ার জন্য ‘আয়েশা (রাঃ)-কে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) দো‘আটি শিক্ষা দিয়েছিলেন’।[15]
১১- اَللَّهُمَّ إِنِّىْ أَسْأَلُكَ الْهُدَى وَالتُّقَى وَالْعَفَافَ وَالْغِنَى-
(১১) উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাল হুদা ওয়াততুক্বা ওয়াল ‘আফা-ফা ওয়াল গিনা।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট সুপথের নির্দেশনা, পরহেযগারিতা, চারিত্রিক পবিত্রতা এবং সচ্ছলতা প্রার্থনা করছি’।[16]
(১২) সাইয়িদুল ইস্তিগফার বা ক্ষমা প্রার্থনার শ্রেষ্ঠ দো‘আ :
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে এই দো‘আ পাঠ করবে, দিবসে পাঠ করে রাতে মারা গেলে কিংবা রাতে পাঠ করে দিবসে মারা গেলে, সে জান্নাতী হবে’ (বুখারী)।-
১২- اَللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّىْ لآ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ خَلَقْتَنِىْ وَ أَنَا عَبْدُكَ وَ أَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَ وَعْدِكَ مَااسْتَطَعْتُ، أَعُوْذُبِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ، أَبُوْءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَىَّ وَ أَبُوْءُ بِذَنْبِىْ فَاغْفِرْلِىْ، فَإِنَّهُ لاَيَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلاَّ أَنْتَ-
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা আনতা রববী লা ইলা-হা ইল্লা আনতা খালাক্বতানী, ওয়া আনা ‘আবদুকা ওয়া আনা ‘আলা ‘আহদিকা ওয়া ওয়া‘দিকা মাস্তাত্বা‘তু। আ‘ঊযুবিকা মিন শার্রি মা ছানা‘তু। আবূউ লাকা বিনি‘মাতিকা ‘আলাইয়া, ওয়া আবূউ বিযাম্বী, ফাগফিরলী। ফাইন্নাহূ লা ইয়াগফিরুয যুনূবা ইল্লা আনতা।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার প্রতিপালক। তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ এবং আমি তোমার দাস। আমি তোমার নিকটে কৃত অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতির উপরে সাধ্যমত দৃঢ় আছি। আমি আমার কৃতকর্মগুলির অনিষ্টকারিতা হ’তে তোমার পানাহ চাচ্ছি। আমার উপরে তোমার অনুগ্রহ স্বীকার করছি এবং আমি আমার পাপসমূহ স্বীকার করছি। অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা কর। কেননা তুমি ব্যতীত ক্ষমা করার কেউ নেই’।[17]
১৩- سُبْحَانَ اللهِ، اَلْحَمْدُ لِلَّهِ، اَللهُ أَكْبَرُ، لآ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَه لاَشَرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَ هُوَ عَلَى كُلِّ شَيْئٍ قَدِيْرٌ-
(১৩) উচ্চারণ: সুবহা-নাল্লা-হি (৩৩ বার), আলহামদুলিল্লা-হি (৩৩ বার), আল্লা-হু আকবার (৩৩ বার), লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহূ লা শারীকা লাহূ, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া ‘আলা কুল্লে শাইয়িন ক্বাদীর (১ বার)। অথবা আল্লা-হু আকবার (৩৪ বার)।
অর্থ: মহা পবিত্র আল্লাহ। যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আল্লাহ সবার চেয়ে বড়। নেই কোন উপাস্য আল্লাহ ব্যতীত; তিনি এক, তাঁর কোন শরীক নেই। তাঁরই জন্য সমস্ত রাজত্ব ও তাঁরই জন্য সমস্ত প্রশংসা। তিনি সকল বস্ত্তর উপরে ক্ষমতাশালী’। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, এই দো‘আ পাঠকারী নিরাশ হবে না’। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি প্রতি ফরয ছালাত শেষে এই দো‘আ পাঠ করবে, তার সমস্ত গোনাহ মাফ করা হবে। যদিও তা সাগরের ফেনা সমতুল্য হয়’।[18]
১৪- سُبْحَانَ اللهِ وَ بِحَمْدِهِ ، سُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيْمِ-
(১৪) উচ্চারণ: সুবহা-নাল্লা-হে ওয়া বিহামদিহী, সুবহানাল্লা-হিল ‘আযীম। অথবা সকালে ও সন্ধ্যায় ১০০ বার করে ‘সুবহা-নাল্লা-হে ওয়া বেহামদিহী’ পড়বেন।
অর্থ: মহাপবিত্র আল্লাহ এবং সকল প্রশংসা তাঁর জন্য। মহাপবিত্র আল্লাহ, যিনি মহান’। এই দো‘আ পাঠের ফলে তার সকল গোনাহ ঝরে যাবে। যদিও তা সাগরের ফেনা সমতুল্য হয়’।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, কালেমা দু’টি উচ্চারণে খুবই হালকা, মীযানের পাল্লায় খুবই ভারী, কিন্তু আল্লাহর নিকটে খুবই প্রিয়’।[19] ইমাম বুখারী (রহঃ) এই দো‘আর হাদীছটি বর্ণনার মাধ্যমে ছহীহ বুখারী শেষ করেছেন।
(১৫) আয়াতুল কুরসী :
১৫- اَللهُ لآ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّوْمُ، لآ تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَّلاَ نَوْمٌ، لَهُ مَا فِى السَّمَاوَاتِ وَمَا فِى الْأَرْضِ، مَنْ ذَا الَّذِىْ يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلاَّ بِإِذْنِهِ، يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيْهِمْ وَ مَا خَلْفَهُمْ وَلاَ يُحِيْطُوْنَ بِشَيْئٍ مِّنْ عِلْمِه إِلاَّبِمَا شَآءَ، وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ، وَلاَيَئُودُهُ حِفْظُهُمَا، وَهُوَ الْعَلِىُّ الْعَظِيْمُ-
উচ্চারণ: আল্লা-হু লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়ুল ক্বাইয়ূম; লা তা’খুযুহু সেনাতুঁ ওয়ালা নাঊম; লাহূ মা ফিস্ সামা-ওয়াতে ওয়ামা ফিল আরয। মান যাল্লাযী ইয়াশ্ফা‘উ ‘ইন্দাহূ ইল্লা বি ইযনিহ; ইয়া‘লামু মা বায়না আয়দীহিম ওয়া মা খালফাহুম, ওয়া লা ইউহীত্বূনা বিশাইয়িম্ মিন ‘ইলমিহী ইল্লা বিমা শা-আ; ওয়াসে‘আ কুরসিইয়ুহুস্ সামা-ওয়া-তে ওয়াল আরযা, ওয়া লা ইয়াউদুহূ হিফযুহুমা, ওয়াহুওয়াল ‘আলিইয়ুল ‘আযীম (বাক্বারাহ ২/২৫৫)।
অর্থ : আল্লাহ তিনি, যিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও বিশ্ব চরাচরের ধারক। কোনরূপ তন্দ্রা ও নিন্দ্রা তাঁকে স্পর্শ করে না। আসমান ও যমীনে যা কিছু আছে সবকিছু তাঁরই মালিকানাধীন। তাঁর অনুমতি ব্যতীত এমন কে আছে যে তাঁর নিকটে সুফারিশ করতে পারে? তাদের সম্মুখে ও পিছনে যা কিছু আছে সবকিছুই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসমুদ্র হ’তে তারা কিছুই আয়ত্ত করতে পারে না, কেবল যতটুকু তিনি দিতে ইচ্ছা করেন। তাঁর কুরসী সমগ্র আসমান ও যমীন পরিবেষ্টন করে আছে। আর এতদুভয়ের তত্ত্বাবধান তাঁকে মোটেই শ্রান্ত করে না। তিনি সর্বোচ্চ ও মহীয়ান’।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, প্রত্যেক ফরয ছালাত শেষে ‘আয়াতুল কুরসী’ পাঠকারীর জান্নাতে প্রবেশ করার জন্য আর কোন বাধা থাকে না মৃত্যু ব্যতীত’ (নাসাঈ)। শয়নকালে পাঠ করলে সকাল পর্যন্ত তার হেফাযতের জন্য একজন ফেরেশতা পাহারায় নিযুক্ত থাকে। যাতে শয়তান তার নিকটবর্তী হ’তে না পারে’।[20]
(১৬) ঋণ মুক্তির দো‘আ :
১৬- أَللَّهُمَّ اكْفِنِىْ بِحَلاَلِكَ عَنْ حَرَامِكَ وَأَغْنِنِىْ بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِوَاكَ-
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মাকফিনী বেহালা-লেকা ‘আন হারা-মেকা ওয়া আগ্নিনী বেফাযলেকা ‘আম্মান সেওয়া-কা।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে হারাম ব্যতীত হালাল দ্বারা যথেষ্ট কর এবং তোমার অনুগ্রহ দ্বারা আমাকে অন্যদের থেকে মুখাপেক্ষীহীন কর’। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, এই দো‘আ পাঠের দ্বারা পাহাড় পরিমাণ ঋণ থাকলেও আল্লাহ তার ঋণমুক্তির ব্যবস্থা করে দেন’।[21]
(১৭) বিপদ ও সংকটকালে দো‘আ :
১৭- يَا حَىُّ يَا قَيُّوْمُ بِرَحْمَتِكَ اَسْتَغِيْثُ-
উচ্চারণ : ইয়া হাইয়ু ইয়া ক্বাইয়ূমু বেরহমাতিকা আস্তাগীছ।
অর্থ : হে চিরঞ্জীব! হে বিশ্ব চরাচরের ধারক! আমি তোমার রহমতের আশ্রয় প্রার্থনা করছি’। আনাস (রাঃ) বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর উপর কোন কাজ কঠিন হয়ে দেখা দিত, তখন তিনি এ দো‘আটি পড়তেন’।[22]
অথবা দো‘আয়ে ইউনুস :
لآ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّىْ كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِيْنَ-
উচ্চারণ : লা ইলা-হা ইল্লা আনতা সুবহা-নাকা ইন্নী কুন্তু মিনায যোয়ালেমীন’ (আম্বিয়া ২১/৮৭)।
অর্থ: তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই, তুমি মহা পবিত্র। নিশ্চয়ই আমি সীমালংঘনকারীদের অন্তর্ভুক্ত’। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, মাছের পেটে ইউনুস এই দো‘আ পড়ে আল্লাহকে ডেকেছিলেন (এবং মুক্তি পেয়েছিলেন)। এক্ষণে যদি কোন মুসলিম কোন বিপদে পড়ে এ দো‘আ পাঠ করে, আল্লাহ তা কবুল করবেন’।[23]
(১৮) তওবার দো‘আ :
১৮- اَسْتَغْفِرُ اللهَ الّذِىْ لآ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّوْمُ وَ أَتُوْبُ إِلَيْهِ-
উচ্চারণ: আস্তাগফিরুল্লা-হাল্লাযী লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়ুল ক্বাইয়ূমু ওয়া আতূবু ইলাইহে’।
অর্থ: ‘আমি আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। যিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও বিশ্ব চরাচরের ধারক এবং আমি তাঁর দিকে ফিরে যাচ্ছি বা তওবা করছি’। এই দো‘আ পড়লে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন, যদিও সে জিহাদের ময়দান থেকে পলায়নকারী হয়।[24] রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, হে জনগণ! তোমরা আল্লাহর নিকট তওবা কর। কেননা আমি তাঁর নিকট দৈনিক একশ’ বার করে তওবা করি’।[25]
(১৯) জান্নাত প্রার্থনা ও জাহান্নাম থেকে বাঁচার দো‘আ :
১৯- اَللَّهُمَّ أَدْخِلْنِى الْجَنَّةَ وَأَجِرْنِىْ مِنَ النَّارِ-
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা আদখিলনিল জান্নাতা ওয়া আজিরনী মিনান্না-র (৩ বার)।
অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও এবং জাহান্নাম থেকে পানাহ দাও’। এই দো‘আ পড়লে জান্নাত বলে, হে আল্লাহ! তুমি তাকে জান্নাতে দাও। অন্যদিকে জাহান্নাম বলে, হে আল্লাহ! তুমি তাকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাও![26]
زيارة المسجد النبوي r
মসজিদে নববীর যিয়ারত
এটি হজ্জ বা ওমরাহর কোন অংশ নয়। এটা না করলে হজ্জের নেকীর কোন ঘাটতি হয় না। তবে হজ্জের আগে বা পরে মসজিদে নববীর যিয়ারত এবং সেখানে ছালাত আদায়ের অশেষ নেকী হাছিলের উদ্দেশ্যে মদীনায় গমন করা যায়। শুধু মাত্র রাসূল (ছাঃ)-এর কবর যেয়ারতের উদ্দেশ্যে গমন করা জায়েয নয়। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেছেন,
لاَ تُشَدُّ الرِّحَالُ إِلاَّ إِلَى ثَلاَثَةِ مَسَاجِدَ: مَسْجِدِ الْحَرَامِ وَالْمَسْجِدِ الْأَقْصَى وَ مَسْجِدِىْ هَذَا، متفق عليه-
‘তিনটি মসজিদ ব্যতীত (নেকীর উদ্দেশ্যে) সফর করা যাবে না; মাসজিদুল হারাম, মাসজিদুল আক্বছা ও আমার এই মসজিদ’।[27] মসজিদে নববীতে একবার ছালাত আদায় বায়তুল্লাহ ছাড়া অন্য মসজিদে এক হাযার ছালাতের চাইতে উত্তম।[28]
এখানে তাঁর মসজিদের কথা বলা হয়েছে, কবরের কথা নয়। সাধারণভাবে যেকোন সময়ে রাসূল (ছাঃ)-এর কবর যেয়ারত করা যাবে। কিন্তু কেবল উক্ত উদ্দেশ্যে ঘর হ’তে বের হওয়া এবং সফর করা নিষিদ্ধ। ‘যে ব্যক্তি আমার কবর যেয়ারত করবে, তার জন্য আমার শাফা‘আত ওয়াজিব হবে’ বা ‘আমি তার জন্য ক্বিয়ামতের দিন সাক্ষী হব’ ইত্যাদি মর্মে যে সমস্ত হাদীছ বলা হয়ে থাকে, তার সবগুলিই জাল ও বাজে (كلها واهية)।[29]
² মসজিদে নববীতে প্রবেশ ও বের হওয়ার দো‘আ এবং মাসজিদুল হারামে প্রবেশ ও বের হওয়ার দো‘আ একই। অতএব সেখানে দেখে নিন।
মসজিদে নববীতে প্রবেশের পর দু’রাক‘আত ‘তাহিইয়াতুল মাসজিদ’ ছালাত আদায় করবেন। তবে জামা‘আত চলতে থাকলে কোনরূপ নফল বা সুন্নাত না পড়ে সরাসরি জামা‘আতে যোগ দিবেন। সময় পেলে ইচ্ছামত নফল ছালাত আদায় করা যাবে। এটা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর বাসগৃহ (বর্তমানে কবর) ও মিম্বরের মধ্যবর্তী ‘রওযা’র মধ্যে পড়াই উত্তম। এ স্থানটিকে হাদীছে ‘রওযাতুল জান্নাহ’ বা জান্নাতের বাগিচা বলা হয়েছে।[30] স্থানটি সবুজ রংয়ের খাম্বা দ্বারা বেষ্টিত।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর কবর যেয়ারত :
‘রওযাতুল জান্নাহ’ থেকে একটু সামনে এগিয়ে বামে দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হয়ে প্রথমে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর কবর বরাবর গিয়ে এভাবে সালাম দিবেন-
اَلسَّلاَمُ عَلَيْكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ وَ رَحْمَةُ اللهِ وَ بَرَكَاتُهُ-
(১) উচ্চারণ: আসসালা-মু ‘আলায়কা ইয়া রাসূলাল্লাহ ওয়া রহমাতুল্লা-হে ওয়া বারাকা-তুহু।
অর্থ: ‘হে আল্লাহর রাসূল! আপনার উপর শান্তিবর্ষিত হউক এবং আল্লাহর রহমত ও বরকত সমূহ নাযিল হউক’!!
অতঃপর একটু এগিয়ে আবুবকর (রাঃ)-এর কবর বরাবর গিয়ে তাঁর উপর সালাম প্রদান করবেন।-
اَلسَّلاَمُ عَلَيْكَ يَا أَبَابَكْرٍ وَ رَحْمَةُ اللهِ وَ بَرَكَاتُهُ-
(২) উচ্চারণ: আসসালা-মু ‘আলায়কা ইয়া আবা বাকরিন ওয়া রহমাতুল্লা-হে ওয়া বারাকা-তুহু।
অর্থ: ‘হে আবুবকর! আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হউক এবং আল্লাহর রহমত ও বরকত সমূহ নাযিল হউক’!!
অতঃপর একটু এগিয়ে ওমর (রাঃ)-এর কবর বরাবর গিয়ে তাঁর উপরে সালাম প্রদান করবেন।-
اَلسَّلاَمُ عَلَيْكَ يَا عُمَرُ وَ رَحْمَةُ اللهِ وَ بَرَكَاتُهُ-
(৩) উচ্চারণ: আসসালা-মু ‘আলায়কা ইয়া ‘ওমারো ওয়া রহমাতুল্লা-হে ওয়া বারাকা-তুহু।
অর্থ: ‘হে ওমর! আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হউক এবং আল্লাহর রহমত ও বরকত সমূহ নাযিল হউক’!![31]
বাক্বী‘ গোরস্থান যিয়ারত : মসজিদে নববীর পূর্বদিকে ‘বাক্বী‘উল গারক্বাদ’ কবরস্থান যিয়ারত করা সুন্নাত। এখানে বহু ছাহাবী, তাবেঈ ও মুসলিম বিদ্বানমন্ডলীর কবর রয়েছে। তবে কবরের কোন চিহ্ন নেই এবং চিহ্ন তালাশ করাও উচিত নয়। এ সময় কবরবাসীদের উদ্দেশ্যে দু’হাত তুলে নিম্নোক্ত দো‘আ পড়বেন-
السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ دَارَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ وَأَتَاكُمْ مَا تُوعَدُونَ غَدًا مُؤَجَّلُونَ وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللهُ بِكُمْ لاَحِقُونَ اَللَّهُمَّ اغْفِرْ لأَهْلِ بَقِيعِ الْغَرْقَدِ -
উচ্চারণ: আসসালা-মু ‘আলায়কুম দারা ক্বাওমিন মু’মিনীন, ওয়া আতা-কুম মা তূ‘আদূনা গাদান মুআজ্জালূনা; ওয়া ইন্না ইনশা-আল্লা-হু বিকুম লা-হেকূন; আল্লা-হুম্মাগফির লিআহলি বাক্বী‘ইল গারক্বাদ।
অর্থ: কবরবাসী মুমিনগণ! আপনাদের উপরে শান্তি বর্ষিত হৌক! আগামীকাল (ক্বিয়ামতের দিন) আপনারা লাভ করবেন যা আপনাদেরকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। আর আমরাও আল্লাহ চাহেন তো সত্বর আপনাদের সাথে মিলিত হ’তে যাচ্ছি। হে আল্লাহ! আপনি ‘বাক্বী‘উল গারক্বাদ’-এর অধিবাসীদের ক্ষমা করুন’।[32]
অথবা নিম্নের দো‘আটি পড়বেন, যা শোহাদায়ে ওহোদ সহ সকল কবরস্থানে পড়া যায়।-
اَلسَّلاَمُ عَلَى أَهْلِ الدِّيَارِ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ وَالْمُسْلِمِيْنَ، وَإِنَّا إِنْ شَآءَ اللهُ بِكُمْ لَلاَحِقُوْنَ، نَسْأَلُ اللهَ لَنَا وَلَكُمُ الْعَافِيَةَ-
উচ্চারণ: আসসালা-মু ‘আলা আহলিদ্দিয়া-রি মিনাল মু’মিনীনা ওয়াল মুসলিমীনা; ওয়া ইন্না ইনশা-আল্লা-হু বিকুম লালা-হেকূন; নাসআলুল্লা-হা লানা ওয়া লাকুমুল ‘আ-ফিয়াতা’।
অর্থ: মুমিন ও মুসলিম কবরবাসীগণ! আপনাদের উপরে শান্তি বর্ষিত হৌক! আর আমরাও আল্লাহ চাহেন তো অবশ্যই আপনাদের সাথে মিলিত হ’তে যাচ্ছি। আমাদের ও আপনাদের জন্য আমরা আল্লাহর নিকটে কল্যাণ প্রার্থনা করছি’।[33]
[1]. আহমাদ, মিশকাত হা/২২৫৯ ‘দো‘আ সমূহ’ অধ্যায়।
[2]. মুসলিম, মিশকাত হা/২৭৫৯, ২২২৭; তিরমিযী, আহমাদ, মিশকাত হা/২২৪১।
[3]. গাফের/মুমিন ৪০/৬০।
[4]. মুসলিম, মিশকাত হা/২২২৮, ‘দো‘আ সমূহ’ অধ্যায়-৯।
[5]. তিরমিযী, মিশকাত হা/২৫৯৮; ত্বাবারাণী, ছহীহাহ হা/১৫০৩।
[6]. আহমাদ, মিশকাত হা/৯৭৫, সনদ হাসান।
[7]. মুসলিম, মিশকাত হা/২২৯৫।
[8]. আবুদাঊদ, মিশকাত হা/২৩৯৭।
[9]. মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/২৪৫৮।
[10]. বুখারী, মিশকাত হা/৯৬৪।
[11]. মুসলিম, মিশকাত হা/২৪৬১।
[12]. তিরমিযী, আবুদাঊদ, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/২৪৮৮।
[13]. মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/২৪৫৭।
[14]. তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১০২; মুসলিম, মিশকাত হা/৮৯।
[15]. আহমাদ, ইবনু মাজাহ, তিরমিযী, মিশকাত হা/২০৯১।
[16]. মুসলিম, মিশকাত হা/২৪৮৪।
[17]. বুখারী, মিশকাত হা/২৩৩৫।
[18]. মুসলিম, মিশকাত হা/৯৬৬, ৯৬৭।
[19]. মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/২২৯৬-৯৮।
[20]. বুখারী, নাসাঈ, সিলসিলা ছহীহাহ হা/৯৭২; মুসলিম, বুখারী, মিশকাত হা/২১২২-২৩।
[21]. তিরমিযী, বায়হাক্বী, মিশকাত হা/২৪৪৯।
[22]. তিরমিযী, মিশকাত হা/২৪৫৪।
[23]. আহমাদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/২২৯২।
[24]. তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/২৩৫৩; ছহীহাহ হা/২৭২৭।
[25]. মুসলিম, মিশকাত হা/২৩২৫।
[26]. তিরমিযী, নাসাঈ, মিশকাত হা/২৪৭৮।
[27]. মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৬৯৩; আহমাদ, সিলসিলা যঈফাহ হা/৪৭-এর ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য।
[28]. মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৬৯২।
[29]. আলবানী, সিলসিলা যঈফাহ ওয়াল মওযূ‘আহ হা/৪৭,২০৩, ১০২১; ইরওয়াউল গালীল হা/১১২৭-২৮ প্রভৃতি।
[30]. মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৬৯৪।
[31]. বায়হাক্বী হা/১০০৫১, ৫/২৪৫; আলবানী, মানাসিকুল হাজ্জ পৃঃ ৬১ টীকা ১৩১; আল-মিনহাজ্জ লিল মু‘তামির ওয়াল হাজ্জ (রিয়াদ : ২য় সংস্করণ ১৪১৫ হিঃ), পৃঃ ১০৯।
[32]. মুসলিম, মিশকাত হা/১৭৬৬।
[33]. মুসলিম, মিশকাত হা/১৭৬৪।