ইক্বামতে দ্বীন পথ ও পদ্ধতি

সার-সংক্ষেপ

উপরোক্ত আলোচনায় সার-সংক্ষেপ হিসাবে কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে যায়। যেমন-

(১) দ্বীন কায়েম হয় মূলতঃ ব্যক্তির আক্বীদা ও আমলে। সমাজে ও রাষ্ট্রে দ্বীন কায়েম হওয়ার সাথে এটি শর্তযুক্ত নয়। তবে তা নিঃসন্দেহে সহায়ক ও পরিপূরক এবং রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তির উপরে ইসলামী বিধান প্রতিষ্ঠা করা তার ঈমানী দায়িত্ব।

(২) দ্বীন কায়েমের একমাত্র লক্ষ্য হবে ‘জান্নাত’। অন্য কিছু নয়। ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম হ’লেও তার লক্ষ্য হবে ‘জান্নাত’। অন্য কিছু নয়। এটি হবে তার দাওয়াতের দুনিয়াবী পুরস্কার অথবা পরীক্ষা।

(৩) দ্বীন কায়েমের জন্য একক প্রচেষ্টা যথেষ্ট নয়। বরং সমবেত প্রচেষ্টা যরূরী। যাকে ‘সংগঠন’ বলা হয়।

(৪) ইসলামী সংগঠন বা জামা‘আত-এর জন্য প্রয়োজন হ’ল আমীর, মামূর, বায়‘আত ও এত্বা‘আত’ অর্থাৎ নেতা, কর্মী, অঙ্গীকার ও আনুগত্য এবং উক্ত জামা‘আতে পুরুষ ও নারী সকলেই শামিল হবেন।

(৫) জান্নাত পাওয়ার লক্ষ্যে শক্তিশালী ও আমানতদার আমীরের অধীনে গঠিত জামা‘আতের নিবেদিতপ্রাণ কর্মীদের নিরন্তর দাওয়াত ও আপোষহীন জিহাদী তৎপরতাই হ’ল সমাজে দ্বীন কায়েমের সঠিক পদ্ধতি।

(৬) শান্তির সময়ে কথা, কলম ও সংগঠনের মাধ্যমে দ্বীন কায়েমের প্রচেষ্টা চালাতে হবে। কিন্তু সশস্ত্র মুকাবিলার সম্মুখীন হ’লে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে রাষ্ট্রীয়ভাবে কিংবা চূড়ান্ত অবস্থায় ব্যক্তিগত ও সাংগঠনিক ভাবে (যেমন ফিলিস্তীন, কাষ্মীর, আফগানিস্তান ও ইরাকে এখন হচ্ছে)।

ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন, আয়াতে বর্ণিত বায়‘আত বা চুক্তিনামার উদ্দেশ্য হাছিলে যারা দন্ডায়মান হবে এবং চুক্তি পূর্ণ করবে, তাদের জন্য থাকবে মহান সফলতা ও চিরস্থায়ী নে‘মত অর্থাৎ জান্নাত।[1] কুরতুবী বলেন, ক্বিয়ামত পর্যন্ত উম্মতে মুহাম্মাদীর মধ্যে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারী প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য জান্নাতের উক্ত সুসংবাদ অবশ্যই রয়েছে’।[2]



[1]. তাফসীর ইবনে কাছীর ২/৪০৬।

[2]. তাফসীরে কুরতুবী ৮/২৬৭।