তালাক ও তাহলীল

৩য় দলের দলীল সমূহ

এই দল বলেন, সহবাসকৃত নারীর উপরে তিন তালাক বর্তাবে ও সহবাসহীন নারীর উপরে এক তালাক বর্তাবে। তাঁদের দলীল নিম্নরূপ :

(১) আবুদাঊদ বর্ণিত আবুছ ছাহবা প্রমুখাৎ ইবনু আববাসের হাদীছ, যেখানে বলা হয়েছে-

أَنَّ الرَّجُلَ كَانَ إَِذَا طَلَّقَ إِمْرَأَتَهُ ثَلاَثًا قَبْلَ أْنْ يَدْخُلَ بِهَا جَعَلُوْهَا وَاحِدَةً عَلَى عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَبِىْ بَكْرٍ وَصَدْرًا مِّنْ إِمَارَةِ عُمَرَ، فَلَمَّا رَأى عُمَرُ النَّاسَ قَدْ تَتَابَعُوْا فِيْهَا قَالَ: أجِيْزُوْهُنَّ عَلَيْهِمْ-

অর্থাৎ ‘কোন ব্যক্তি যখন তার স্ত্রীকে সহবাসের পূর্বেই তিন তালাক দিত, লোকেরা তাকে এক তালাক গণ্য করত। এই নিয়ম জারি ছিল রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর যামানায় এবং আবু বকর (রাঃ)-এর যামানায় ও ওমর (রাঃ)-এর যামানার প্রথম দিকে। অতঃপর যখন ওমর উক্ত ব্যাপারে লোকদের ব্যস্ততা দেখতে পান, তখন বলেন, একত্রিত তিন তালাককে ওদের উপরে জারি করে দাও’।[1]

জবাব : উক্ত হাদীছে একটি কথা বর্ধিতভাবে এসেছে, قَبْلَ أنْ يَّدْخُلَ بِهَا অর্থাৎ ‘ঐ স্ত্রী যার সাথে স্বামী এখনও সহবাস করেনি’। আলবানী বলেন যে, এই অংশটি ‘মুনকার’ এবং ছহীহ মুসলিম-এর রেওয়াতের বিপরীত। অতএব এর অর্থ হ’ল এই যে, সহবাসকৃত হউক বা না হউক সকল বিবাহিতা নারীর ক্ষেত্রে সে যুগে একত্রিত তিন তালাককে এক তালাক গণ্য করা হ’ত।[2]

(২) ওমর (রাঃ) কর্তৃক তিন তালাককে তিন তালাক গণ্য করায় সিদ্ধান্তটি সহবাসকৃত নারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য এবং আবুছ ছাহবা প্রমুখাৎ ইবনু আববাস বর্ণিত হাদীছটি সহবাসহীন নারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এভাবেই উভয় হাদীছের মধ্যে সমন্বয় করা সম্ভব এবং এটাই ক্বিয়াসের অনুকুলে’।

জবাব : ইবনু আববাস বর্ণিত আবুদাঊদের হাদীছের উক্ত অংশটি ‘মুনকার’। যা ইতিপূর্বে উল্লেখিত হয়েছে। অতঃপর ওমর ফারূক (রাঃ)-এর সিদ্ধান্তটি ইজতেহাদী। যা কুরআন ও সুন্নাহ প্রদত্ত শারঈ তালাক বিধানকে বাতিল করতে পারে না। অতএব এই দলের বক্তব্য দলীল সম্মত নয়। বিশুদ্ধ ক্বিয়াসেরও অনুকূলে নয়।


[1]. আবুদাঊদ হা/২১৯৯।

[2]. সিলসিলা যাঈফাহ হা/১১৩৩; ইরও’য়া ৭/১২২।