সূরা শরহ
(উন্মুক্ত করা)
সূরা যোহা-এর পরে মক্কায় অবতীর্ণ।
সূরা ৯৪, আয়াত ৮, শব্দ ২৭, বর্ণ ১০২।
بِسْمِ اللہِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ
পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)।
(১) আমরা কি তোমার বক্ষ উন্মুক্ত করিনি? | أَلَمْ نَشْرَحْ لَكَ صَدْرَكَ |
(২) আর আমরা তোমার থেকে বোঝা নামিয়ে দিয়েছি। | وَوَضَعْنَا عَنْكَ وِزْرَكَ |
(৩) যা তোমার পৃষ্ঠকে ভেঙ্গে দিচ্ছিল। | الَّذِي أَنْقَضَ ظَهْرَكَ |
(৪) আর আমরা তোমার আলোচনাকে সমুচ্চ করেছি। | وَرَفَعْنَا لَكَ ذِكْرَكَ |
(৫) অতঃপর নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে। | فَإِنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا |
(৬) নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে। | إِنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا |
(৭) অতএব যখন অবসর পাও, ইবাদতের কষ্টে রত হও। | فَإِذَا فَرَغْتَ فَانْصَبْ |
(৮) এবং তোমার প্রভুর দিকে রুজূ হও। | وَإِلَى رَبِّكَ فَارْغَبْ |
বিষয়বস্ত্ত :
পূর্বের সূরাটির পরপরই অত্র সূরাটি নাযিল হয়েছে এবং দু’টি সূরার বিষয়বস্ত্ত অনেকটা একইরূপ বর্ণিত হয়েছে।
প্রথমে রাসূল (ছাঃ)-এর প্রতি আল্লাহর কয়েকটি নে‘মতের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে (১-৪ আয়াত)। অতঃপর তাঁকে সান্ত্বনা দেয়া হয়েছে (৫-৬ আয়াত)। সবশেষে তাঁকে একান্তভাবে আল্লাহর প্রতি রুজু হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে (৭-৮ আয়াত)।
তাফসীর :
(১) أَلَمْ نَشْرَحْ لَكَ صَدْرَكَ ‘আমরা কি তোমার বক্ষ উন্মুক্ত করিনি?’
شَرَحَ يَشْرَحُ شَرْحًا অর্থ উন্মুক্ত করা, ব্যাখ্যা করা, প্রশস্ত করা ইত্যাদি। إِنْشَرَحَ অর্থ উন্মুক্ত হওয়া। أَلَمْ نَشْرَحْ অর্থ الم نفتح ‘আমরা কি খুলে দেই নি’? এখানে নিশ্চয়তাবোধক অর্থ বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ قد شرحنا ‘অবশ্যই আমরা উন্মুক্ত করেছি’। যেমন أَلَيْسَ اللهُ بِأَحْكَمِ الْحَاكِمِيْنَ ‘আল্লাহ কি বিচারকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম বিচারক নন’? (তীন ৯৫/৮)। অর্থ, তিনিই শ্রেষ্ঠতম বিচারক। একে বলা হয় نفى النفى إثبات ‘না-কে না বললে হ্যাঁ’। এটি استفهام تقرير অর্থাৎ ‘নিশ্চয়তা জ্ঞাপক প্রশ্ন’ যা قد সহ অতীত ক্রিয়ায় আসে। যেমন এসেছে, أَلَيْسَ اللهُ بِكَافٍ عَبْدَهُ ‘আল্লাহ কি তার বান্দার জন্য যথেষ্ট নন’? (যুমার ৩৯/৩৬)। অর্থ قد كفى بالله ‘অবশ্যই আল্লাহ যথেষ্ট’। এখানেও তেমনি অর্থ হবে যে, আল্লাহই তোমার বক্ষকে উন্মুক্ত করেছেন ইসলামের জন্য এবং নবুঅত ও রিসালাতের জন্য।
আল্লাহ পাক স্বীয় রাসূলের প্রতি তাঁর অনুগ্রহের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রশ্নের ভঙ্গিতে বলছেন, আমরা কি তোমার বক্ষকে রিসালাত ও দাওয়াতের গুরু দায়িত্ব বহনের জন্য প্রশস্ত করে দেইনি? আমরা কি তোমার বক্ষকে ইসলামের জন্য উন্মুক্ত করে দেইনি? এটি দৈহিক উন্মুক্তকরণ নয়, বরং হৃদিক উন্মুক্তকরণ। যেমন অন্যত্র বলা হয়েছে, فَمَنْ يُّرِدِ اللهُ أَنْ يَّهْدِيَهُ يَشْرَحْ صَدْرَهُ لِلْإِسْلاَمِ- ‘আল্লাহ যাকে সুপথ প্রদর্শনের ইচ্ছা করেন, তার বক্ষকে ইসলামের জন্য উন্মুক্ত করে দেন’ (আন‘আম ৬/১২৫)। আর যাদেরকে আল্লাহ ইসলামের পথ দেখান, তারা জাহেলিয়াতের অন্ধকার থেকে মুক্ত হয়ে আলোকিত পথের অনুগামী হয়ে থাকেন। যেমন আল্লাহ বলেন, أَفَمَنْ شَرَحَ اللهُ صَدْرَهُ لِلْإِسْلاَمِ فَهُوَ عَلَى نُوْرٍ مِّنْ رَّبِّهِ فَوَيْلٌ لِّلْقَاسِيَةِ قُلُوْبُهُمْ مِّنْ ذِكْرِ اللهِ أُوْلَئِكَ فِيْ ضَلاَلٍ مُبِيْنٍ- ‘আল্লাহ যার বক্ষ ইসলামের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন, সে ব্যক্তি তার প্রভুর পক্ষ হ’তে আগত নূরের মধ্যে রয়েছে। পক্ষান্তরে যাদের অন্তর আল্লাহর স্মরণ হ’তে কঠোর, তাদের জন্য দুর্ভোগ। তারা সুস্পষ্ট ভ্রষ্টতার মধ্যে রয়েছে’ (যুমার ৩৯/২২)।
অনেক বিদ্বান আলোচ্য আয়াতের অর্থ করেছেন, ‘আমরা কি তোমার বক্ষ বিদীর্ণ করি নাই’? এর দ্বারা শিশুকালে ধাত্রী হালীমার গৃহে থাকা অবস্থায় রাসূল (ছাঃ)-এর বক্ষ বিদারণ[1] এবং মে‘রাজের রাত্রিতে রাসূল (ছাঃ)-এর বক্ষ বিদারণের ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।[2] অত্র আয়াতের তাফসীরে ইমাম তিরমিযী মালেক বিন ছা‘ছা‘আহ ও আবু যার গিফারী (রাঃ) বর্ণিত আনাস বিন মালেক (রাঃ) প্রমুখাৎ মে‘রাজের বহুল প্রসিদ্ধ ছহীহ হাদীছগুলি এনেছেন।[3] হাফেয ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন, দুইয়ের মধ্যে কোন বিরোধ নেই। কেননা রাসূল (ছাঃ)-এর বক্ষ উন্মুক্ত করার মধ্যে মে‘রাজের রাত্রির বক্ষ বিদারণ এবং নবুঅত ও রিসালাতের গুরুভার বহনের জন্য বক্ষ উন্মুক্ত করণ দুই-ই শামিল হয়েছে (তাফসীর ইবনু কাছীর)।
(২) وَوَضَعْنَا عَنْكَ وِزْرَكَ ‘আর আমরা তোমার থেকে বোঝা নামিয়ে দিয়েছি’।
আবদুল আযীয বিন ইয়াহইয়া এবং আবু ওবায়দাহ বলেন, এর অর্থ হ’ল, নবুঅত ও রিসালাতের গুরু দায়িত্বের বোঝা তোমার উপরে হালকা করে দিয়েছি, যাতে তা তোমার উপরে ভারী মনে না হয়’ (কুরতুবী, তানতাভী)।
(৩) اَلَّذِيْ أَنْقَضَ ظَهْرَكَ ‘যা তোমার পৃষ্ঠকে ভেঙ্গে দিচ্ছিল’।
অর্থাৎ যে দুঃসহ বোঝার চাপে তোমার পিঠ নুইয়ে যাচ্ছিল। এর দ্বারা ‘অহি’ অতরণকালের ভার বহনের কষ্টকর অবস্থার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। বোঝা বহন অসাধ্য হ’লে মুখ দিয়ে অস্ফুট স্বরে যে শব্দ বের হয়, তাকে نقيض বলা হয় (তানতাভী)। সেখান থেকে أَنْقَضَ ক্রিয়াপদ এসেছে। প্রথম দিকে ‘অহির’ ভার বহনে রাসূল (ছাঃ) অনুরূপ দৈহিক কষ্ট অনুভব করতেন। তবে ক্বাসেমী এর দ্বারা রাসূল (ছাঃ)-এর মনোবেদনার কষ্ট বুঝিয়েছেন। কেননা প্রথমদিকে তাঁর দাওয়াত কেউ কবুল করত না। বরং নানাবিধ অপবাদ ও মিথ্যারোপের মাধ্যমে তাঁকে লোকেরা কষ্ট দিত। পরে এই কষ্ট দূর হয়ে যায় (ক্বাসেমী)। আয়াতের প্রকাশ্য অর্থ প্রথম ব্যাখ্যার সাথে সামঞ্জস্যশীল।
(৪) وَرَفَعْنَا لَكَ ذِكْرَكَ ‘আর আমরা তোমার আলোচনাকে সমুচ্চ করেছি’।
অর্থাৎ নবুঅত ও রিসালাত প্রদানের মাধ্যমে তোমার সুনাম সর্বত্র ছড়িয়ে দিয়েছি। এতদ্ব্যতীত পূর্ববর্তী নবীগণের কাছ থেকে তোমার ব্যাপারে ওয়াদা নেওয়ার ফলে (আলে ইমরান ৩/৮১) পূর্ব থেকেই তোমার আলোচনা পূর্ববর্তী উম্মতগণের নিকটে যেমন ছিল, তেমনি তোমার জীবদ্দশায় তো বটেই ক্বিয়ামত পর্যন্ত যাতে তোমার নাম সর্বত্র মুখে মুখে সর্বক্ষণ প্রচারিত হয়, তার ব্যবস্থা করেছি। যেমন আযানের মধ্যে, ইক্বামতের মধ্যে, তাশাহহুদের মধ্যে, জুম‘আ ও ঈদায়নের খুৎবায়, হজ্জের খুৎবায়, আইয়ামে তাশরীক্বের দিনগুলিতে, ছাফা-মারওয়ায় ও হজ্জের অন্যান্য অনুষ্ঠানাদিতে, বিবাহের খুৎবায়, এমনকি বক্তৃতা ও ভাষণের শুরুতে হামদ ও দরূদের মাধ্যমে পৃথিবীর এক প্রান্ত হ’তে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত সর্বত্র সর্বদা তোমার প্রশংসিত নাম অত্যন্ত সম্মানের সাথে উচ্চারিত হওয়ার ব্যবস্থা করেছি। যদি একজন ব্যক্তি আল্লাহকে বিশ্বাস করে, কিন্তু মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর নবুঅতকে অস্বীকার করে, সে ব্যক্তি কাফের। তোমার দ্বীন আসার পর বিগত সকল দ্বীন রহিত করা হয়েছে। তোমার দ্বীনকে সকল দ্বীনের উপর বিজয়ী করা হয়েছে। তোমাকে সকল নবীর উপরে শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে। পৃথিবীতে মুমিনের হৃদয়ে তোমাকে সর্বোচ্চ স্থান দেয়া হয়েছে। আখেরাতে তোমাকে সর্বোচ্চ প্রশংসিত স্থান ‘মাক্বামে মাহমূদ’ দান করা হয়েছে। আসমান জগতে সকল ফেরেশতা তোমার প্রশংসায় পঞ্চমুখ থাকে এবং তাদের নিকটে আমরা তোমার আলোচনাকে সমুচ্চ করেছি। এভাবে দুনিয়া ও আখেরাতে হে রাসূল তোমার সুনাম-সুখ্যাতিকে আমরা সর্বদা উচ্চকিত করেছি। এই সৌভাগ্য দুনিয়ার কোন মানুষের হয়নি।
আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস ও মুজাহিদ বলেন, এর দ্বারা ‘আযান’ বুঝানো হয়েছে, যেখানে রাসূল (ছাঃ)-এর নাম উচ্চারিত হয়ে থাকে। রাসূল (ছাঃ)-এর সভাকবি হযরত হাসসান বিন ছাবেত আনছারী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর প্রশংসায় গেয়েছেন,
أَغَرَّ عَلَيْهِ لِلنُّبُوَّةِ خَاتَمٌ + مِنَ اللهِ نُوْرٌ يَلُوْحُ وَيَشْهَدُ
وَضَمَّ الْإِلَهُ اسْمَ النَّبِيِّ إِلَى اسْمِهِ + إِذَا قَالَ فِي الْخَمْسِ الْمُؤَذِّنُ أَشْهَدُ
وَشَقَّ لَهُ مِن اسْمِهِ ليُجِلَّهُ + فَذُو العَرْشِ محمودٌ وهَذا مُحَمَّدُ
(১) তাঁর উপরে ‘মোহরে নবুঅত’ চমকিত হয়। যা আল্লাহর পক্ষ হ’তে নূর স্বরূপ, যা উজ্জ্বলিত হয় ও সাক্ষ্য দেয়।
(২) আল্লাহ স্বীয় নবীর নামকে নিজের নামের সাথে যুক্ত করেছেন। যখন মুওয়াযযিন পাঁচ ওয়াক্তের আযানে ‘আশহাদু’ বলে।
(৩) আল্লাহ তাঁর নামের সাথে রাসূলের নামকে যুক্ত করেছেন তাঁর মর্যাদা বৃদ্ধি করার জন্য। অতএব আরশের মালিক হ’লেন ‘মাহমূদ’ (প্রশংসিত) এবং ইনি হ’লেন ‘মু হাম্মাদ’ (প্রশংসিত)’।[4]
ছারছারী (রহঃ) কতই না সুন্দর বলেছেন,
لاَ يَصِحُّ الأذانُ فِي الفَرْضِ إِلاَّ + باسمِه العَذْبِ فِي الْفَمِ الْمَرْضَي
‘ফরয ছালাতের আযান শুদ্ধ হবে না, সমুতষ্টচিত্ত মুওয়াযযিনের মুখে তাঁর মিষ্ট নামের উচ্চারণ ব্যতীত’। তিনি আরও বলেন,
ألَم تَرَ أنَّا لاَ يَصِحُّ أذانُنَا + وَلا فَرْضُنا إنْ لَمْ نُكَرِّرْهُ فِيْهِمَا
‘তুমি কি দেখ না আমাদের আযান ও আমাদের ফরয ছালাত শুদ্ধ হয় না, যদি না আমরা সেখানে তাঁর (রাসূলের) নাম বারবার উচ্চারণ করি’? (ইবনু কাছীর)।
(৫-৬) فَإِنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْراً، إِنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْراً ‘অতঃপর নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে’। ‘নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে’।
এ আয়াত দ্বারা আল্লাহ পাক স্বীয় রাসূলকে ও তাঁর উম্মতকে সান্ত্বনা দিয়েছেন এবং একই কথা পরপর দু’বার বলে বিষয়টিকে যোরদার ও তাকীদপূর্ণ করেছেন। এটা আরবদের অন্যতম বাকরীতি (কুরতুবী)। দু’টি আয়াতেই الْعُسْرِ এসেছে معرفة বা নির্দিষ্টবাচক এবং يُسْراً এসেছে نكره বা অনির্দিষ্টবাচক। যার অর্থ একটি কষ্টের বিনিময়ে একাধিক স্বস্তি। অতএব একটি কষ্ট কখনো একাধিক স্বস্তির উপরে জয়লাভ করে না। বুঝা গেল যে, কষ্টের পরে স্বস্তি অবশ্যম্ভাবী এবং তা হবে একাধিক। যেমন মক্কা থেকে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) একাকী আবুবকরকে নিয়ে হিজরত করেছিলেন কষ্টের সাথে। কিন্তু মক্কা বিজয়ের দিন তিনি সেখানে ফিরে এসেছিলেন দশ হাযার মুসলমানকে সাথে নিয়ে উচ্চতম মর্যাদা ও পাহাড় প্রমাণ সম্মান নিয়ে। এটির উদাহরণ ইবাদতেও রয়েছে। যেমন, ছালাতের ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে তুমি দাঁড়িয়ে ছালাত আদায় কর। না পারলে বসে, না পারলে কাৎ হয়ে। ছিয়ামের ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে, ছিয়াম রাখ। অসুখে বা কষ্টবোধ করলে ছেড়ে দাও। সফরে গিয়ে ছিয়াম ছেড়ে দাও ইত্যাদি। অতঃপর এটি স্বাভাবিক (حسّى) জীবনেও রয়েছে। যেমন দারিদ্রে্যর পরে সচ্ছলতা, রোগমুক্তির পর সুস্থতা, বিপদমুক্তির পর স্বস্তি বহু আনন্দের বারতা নিয়ে হাযির হয়। বিষয়টি মানসিক জীবনেও (معنوى) হ’তে পারে। যেমন কষ্টে ছবর করার যে অসীম ক্ষমতা আল্লাহ মানুষকে দান করেছেন, তা মানুষকে দৃঢ় মনোবলের অধিকারী করে এবং যেকোন বিপদ হাসিমুখে মোকাবিলা করার শক্তি দান করে। যা তার বিপদকে সহজ করে দেয়।
(৭-৮) فَإِذَا فَرَغْتَ فَانْصَبْ، وَإِلَى رَبِّكَ فَارْغَبْ ‘অতএব যখন অবসর পাও, ইবাদতের কষ্টে রত হও’ ‘এবং তোমার প্রভুর দিকে রুজূ হও’।
অর্থাৎ যখনই তুমি দুনিয়াবী ঝামেলা থেকে মুক্ত হবে, তখনই আল্লাহর ইবাদতে রত হও এবং একান্ত মনে তোমার প্রভুর সন্তুষ্টি কামনায় তার দিকে রুজূ হও।
এখানে فَانْصَبْ বলা হয়েছে, যা نَصَبٌ থেকে এসেছে। যার অর্থ কষ্ট করা, চেষ্টা করা। অতএব فَانْصَبْ -এর অর্থ হবে فاتعب فى العبادة شكرًا لأنعمه ‘ইবাদতের কষ্টে রত হও তাঁর নে‘মত সমূহের শুকরিয়া আদায়ের জন্য’। দুনিয়াবী আকর্ষণ থেকে আল্লাহর দিকে মুখ ফিরানোটাই মূলতঃ কষ্টের বিষয়। নফসের তাবেদার যারা, তারা এটা পারে না। যারা প্রবৃত্তির গলায় লাগাম দিতে পারে এবং নফসের চাহিদাকে দমন করতে পারে, কেবলমাত্র তারাই দুনিয়ার আকর্ষণ থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে আল্লাহর ইবাদতে রত হ’তে পারে।
ফরয ইবাদতের পরে শ্রেষ্ঠ ইবাদত হ’ল রাতের ছালাত, যা তাহাজ্জুদ নামে পরিচিত। এটি রাসূল (ছাঃ)-এর উপরে অতিরিক্ত কর্তব্য ছিল। নিঃসন্দেহে এটা ছিল আরও কষ্টকর। সারা দিন কাফির-মুশরিকদের ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের মুকাবিলা, এরপর ভীত-সন্ত্রস্ত রাত্রির শেষভাগে উঠে আল্লাহর ইবাদতে রত হওয়া সন্দেহাতীতভাবে ছিল অতীব ক্লেশকর। মাক্কী জীবনে সাধারণ মুসলমানদের অবস্থা ছিল আরও করুণ। এই কষ্ট ও তার পুরস্কার বিষয়ে মাক্কী সূরা সাজদায় আল্লাহ বলেন,
تَتَجَافَى جُنُوْبُهُمْ عَنِ الْمَضَاجِعِ يَدْعُوْنَ رَبَّهُمْ خَوْفاً وَّطَمَعاً وَّمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنْفِقُوْنَ، فَلاَ تَعْلَمُ نَفْسٌ مَّا أُخْفِيَ لَهُم مِّنْ قُرَّةِ أَعْيُنٍ جَزَاءً بِمَا كَانُوْا يَعْمَلُوْن-
‘তাদের পার্শ্বদেশ শয্যা থেকে আলাদা থাকে। এমতাবস্থায় তারা তাদের পালনকর্তাকে ডাকে ভয়ে ও আকাংখায় এবং আমরা তাদের যে রিযিক দিয়েছি, তা থেকে তারা ব্যয় করে’। ‘অতঃপর কেউ জানে না নেক আমলের প্রতিদান স্বরূপ তাদের জন্য চক্ষু শীতলকারী কি কি বস্ত্ত লুক্কায়িত রয়েছে’ (সাজদাহ ৩২/১৬-১৭)।
এটাতো হ’ল সাধারণ মুমিন-মুত্তাক্বী ইবাদতগুযার নর-নারীর জন্য। এক্ষণে রাসূল (ছাঃ)-এর জন্য বিশেষভাবে কি পুরস্কার রয়েছে? সে বিষয়ে আল্লাহ বলেন, وَمِنَ اللَّيْلِ فَتَهَجَّدْ بِهِ نَافِلَةً لَّكَ عَسَى أَن يَّبْعَثَكَ رَبُّكَ مَقَاماً مَّحْمُوْدًا- ‘রাতের কিছু অংশ তাহাজ্জুদ ছালাতে রত থাক। এটা তোমার জন্য অতিরিক্ত। সত্বর তোমার প্রভু তোমাকে ‘প্রশংসিত স্থানে’ পৌঁছাবেন’ (বনী ইস্রাঈল ১৭/৭৯)। ‘মাক্বামে মাহমূদে’ দাঁড়িয়ে রাসূল (ছাঃ) আল্লাহর অনুমতিক্রমে সমগ্র মানবজাতির জন্য শাফা‘আত করবেন। আর এই শাফা‘আতের পরেই আল্লাহ বিচারকার্য শুরু করবেন। যাকে ‘শাফা‘আতে কুবরা’ বলা হয়। এই মহা সম্মান কেবল মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কেই দেয়া হবে, অন্য কোন নবীকে নয়। কারণ তিনিই একমাত্র বিশ্বনবী। ফরয ছাড়াও অতিরিক্ত রাতের ইবাদতের প্রতিদান স্বরূপ এটা ছিল রাসূল (ছাঃ)-এর জন্য জান্নাত ছাড়াও অতিরিক্ত মহা সম্মান।
বস্ত্ততঃ আল্লাহর প্রতি নিবেদিতপ্রাণ হওয়া ব্যতীত মানুষের মানবিক মূল্যবোধ তার প্রবৃত্তির উপরে জয়লাভ করতে পারে না। ইসলাম সেই প্রশিক্ষণই দিয়েছিল তার অনুসারীদের। তাই হাযারো নির্যাতনেও মুসলমানগণ পুনরায় কুফরীতে ফিরে যায়নি। বরং তাদের সর্বোচ্চ মানবিক মূল্যবোধ তৎকালীন প্রবৃত্তিপরায়ণ সমাজনেতাদের উপরে সহজে জয়লাভ করে এবং তা বিশ্বজয়ী ইসলামী খেলাফতের সূচনা করে। অতএব জনশক্তি বা অস্ত্রশক্তি নয় বরং প্রধানতঃ নৈতিক ও আদর্শিক শক্তির জোরেই ইসলাম সেযুগে জয় লাভ করেছিল। এ যুগেও জয়লাভ করতে পারে সকল পার্থিব শক্তির উপরে।
লক্ষণীয় বিষয় এই যে, শত নির্যাতনের মধ্যেও রাসূল (ছাঃ)-কে পাল্টা নির্যাতন প্রতিরোধের পথ বেছে নেবার হুকুম দেয়া হয়নি। বরং তাঁকে ও তাঁর সাথী নির্যাতিত-নিপীড়িত নও মুসলিমদেরকে খালেছ অন্তরে আল্লাহর প্রতি রুজূ হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সমাজ বিপ্লবের মৌলিক দর্শন এর মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে। দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষ যা থেকে শিক্ষা নিতে পারেন। তবে এটি ছিল মাক্কী জীবনের ঘটনা। যখন তিনি প্রতিরোধে সক্ষম ছিলেন না। অতঃপর মাদানী জীবনে সক্ষমতা অর্জন করলে তাঁকে সশস্ত্র জিহাদের অনুমতি দেওয়া হয় (হজ্জ ২২/৩৯) এবং শত্রুদের বিরুদ্ধে সাধ্যমত শক্তি সঞ্চয়ের নির্দেশ দেওয়া হয় (আনফাল ৮/৬০)। এর দ্বারা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, সশস্ত্র যুদ্ধের জন্য সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ ও বস্ত্তগত সক্ষমতা অপরিহার্য। নইলে সর্বদা ইসলামের বিজয়ের জন্য ঈমানী শক্তিই মুখ্য। বৈষয়িক শক্তি হ’ল ঢালস্বরূপ। যাকে কখনোই মুখ্য হিসাবে গণ্য করা হয়নি।
وَإِلَى رَبِّكَ فَارْغَبْ বাক্যের মধ্যে এ ইঙ্গিত স্পষ্ট যে, হে মুহাম্মাদ! কাফেরদের লোভনীয় প্রস্তাবসমূহে কর্ণপাত করো না এবং তাদের দেওয়া কষ্ট ও নির্যাতনে ভীত ও দুর্বল হয়ে পড়ো না। কারু কাছে কিছু চেয়ো না। বরং আল্লাহর কাছেই সবকিছু চাও এবং তাঁর দিকেই একান্তভাবে মনঃসংযোগ কর। কারণ তোমাকে সাহায্য করার ক্ষমতা কেবলমাত্র আল্লাহর হাতেই নিবদ্ধ। তিনিই তোমাকে ও তোমার সাথীদেরকে কষ্টের পরে স্বস্তি দেবেন। পরকালীন পুরস্কার ছাড়াও পার্থিব বিজয় ও স্বস্তিলাভ কেবল আল্লাহর ইচ্ছার উপরেই নির্ভর করে। অতএব সবদিক থেকে মুখ ফিরিয়ে কেবল তোমার পালনকর্তা আল্লাহর দিকে রুজূ হও।
পিতা ইবরাহীম (আঃ) ছিলেন মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর চাইতে অধিক অসহায়। স্ত্রী সারা ও ভাতিজা লূত ব্যতীত তাঁর প্রকাশ্য সাথী কেউ ছিল না। নমরূদের মত দুর্ধর্ষ শাসক ও একটি প্রতিষ্ঠিত রাজশক্তির বিরুদ্ধে একাই তাঁকে লড়াই করতে হয়েছে আদর্শিকভাবে। শত নির্যাতনের মুখেও তিনি সেদিন বলেছিলেন,
إِنِّيْ وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِيْ فَطَرَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ حَنِيْفاً وَّمَا أَنَاْ مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ-
‘আমি আমার চেহারাকে সেই সত্তার দিকে ফিরিয়ে দিয়েছি একনিষ্ঠভাবে, যিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন এবং আমি অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত নই’ (আন‘আম ৬/৭৯)। মুহাম্মাদ (ছাঃ) ছিলেন ইবরাহীমের বংশধর এবং শ্রেষ্ঠ রাসূল। অতএব তাঁকেও একইরূপ নির্দেশ দিয়ে বলা হয়েছে, وَإِلَى رَبِّكَ فَارْغَبْ সবদিক থেকে মুখ ফিরিয়ে ‘তোমার প্রতিপালকের দিকে রুজূ হও’। সুবহানাল্লাহি ওয়া বেহামদিহী।
এখানে وَإِلَى رَبِّكَ আগে আনা হয়েছে, যেটা পরে হওয়ার কথা। অর্থাৎ فَارْغَبْ إِلَى رَبِّكَ (তুমি রুজূ হও তোমার প্রভুর দিকে)। কিন্তু আগে আনার উদ্দেশ্য আল্লাহকে নির্দিষ্ট (الحصر) করা। إِلَى رَبِّكَ لاَ اِلَى غَيْرِهِ ‘কেবল তোমার প্রভুর দিকে রুজূ হও, অন্যদিকে নয়’। অতএব কোন কাজের পূর্বে প্রথমে আল্লাহর নিকট সাহায্য চাইতে হবে, অন্যের কাছে নয়। কেননা কেবল তিনিই কাজটি সহজ করে দিতে পারেন, অন্য কেউ নয়।
আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, একদিন আমি রাসূল (ছাঃ)-এর সওয়ারীর পিছনে বসা ছিলাম। তখন তিনি আমাকে বললেন, يَا غُلاَمُ احْفَظِ اللهَ يَحْفَظْكَ احْفَظِ اللهَ تَجِدْهُ تُجَاهَكَ إِذَا سَأَلْتَ فَاسْأَلِ اللهَ وَإِذَا اسْتَعَنْتَ فَاسْتَعِنْ بِاللهِ হে বৎস! আল্লাহর বিধানসমূহ যথাযথভাবে মেনে চল, তিনিই তোমাকে নিরাপদে রাখবেন। আল্লাহর বিধানসমূহ মেনে চল, তাহ’লে তুমি তাঁকে সর্বদা তোমার সম্মুখে পাবে। তুমি কিছু চাইলে আল্লাহর নিকটেই চাইবে। যখন তুমি সাহায্য চাইবে, তখন আল্লাহর নিকটেই চাইবে।[5]
বস্ত্ততঃ প্রাথমিক যুগে মুসলমানদের বিশ্বজয়ের মূল শক্তি ছিল আল্লাহর উপরে অটুট নির্ভরতা। তৎকালীন পরাশক্তি রোম সেনাপতি বারবার পরাজিত হয়ে ১৩ হিজরীতে ইয়ারমূকের পূর্বে আজনাদাইন যুদ্ধের এক পর্যায়ে তার এক দুঃসাহসী ও উন্নত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আরব খিষ্টান গুপ্তচরকে মুসলিম বাহিনীর অবস্থা প্রত্যক্ষ করার জন্য প্রেরণ করেন। গুপ্তচর মুসলিম সেনা শিবিরে কয়েকদিন অবস্থান শেষে ফিরে গিয়ে যে রিপোর্ট দেয়, তা ছিল নিম্নরূপ :هُمْ بِاللَّيْلِ رُهْبَانٌ وَبِالنَّهَارِ فُرْسَانٌ وَلَوْ سَرَقَ ابْنُ مَلَكِهِمْ قَطَعُوْا يَدَهُ وَلَوْ زَنَى رَجَمُوْهُ- ‘তারা রাতের বেলায় ইবাদতগুযার ও দিনের বেলায় ঘোড় সওয়ার। আল্লাহর কসম! যদি তাদের শাসকপুত্র চুরি করে, তাহ’লে তারা তার হাত কেটে দেয়। অথবা যদি যেনা করে, তবে তাকে প্রস্তরাঘাতে মাথা ফাটিয়ে হত্যা করে ফেলে’। একথা শুনে সেনাপতি ক্বায়কুলান বলে ওঠেন, وَللهِ لَئِنْ كُنْتَ صَادِقًا لَبَطْنُ الْاَرْضِ خَيْرٌ لَنَا مِنْ ظَهْرِهَا ‘আল্লাহর কসম! যদি তোমার কথা সত্য হয়, তাহ’লে ভূগর্ভ আমাদের জন্য উত্তম হবে ভূপৃষ্ঠের চাইতে’। অর্থাৎ আমাদের মরে যাওয়াই উত্তম হবে।
উল্লেখ্য যে, যুদ্ধে উক্ত সেনাপতি নিহত হন এবং মুসলিম বাহিনী জয়লাভ করে। পরবর্তীতে ১৬ হিজরীতে শাম থেকে নিরাশ হয়ে রাজধানী কনস্টান্টিনোপলে ফিরে গিয়ে রোম সম্রাট হেরাক্লিয়াস তাঁর এক গুপ্তচরকে মুসলমানদের বিজয়ের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, هُمْ فُرْسَانٌ بِالنَّهَارِ وَرُهْبَانٌ بِاللَّيْلِ، لاَ يَأْكُلُونَ فِي ذِمَّتِهِمْ إِلاَّ بِثَمَنٍ، وَلاَ يَدْخُلُونَ إِلاَّ بِسَلاَمٍ، يَقِفُوْنَ عَلَى مَنْ حَارَبُوْهُ حَتَّى يَأْتُوا عَلَيْهِ. ‘তারা দিনের বেলায় ঘোড় সওয়ার ও রাতের বেলায় ইবাদতগুযার। তারা তাদের যিম্মায় থাকা কোন বস্ত্ত মূল্য না দিয়ে খায় না এবং শান্তির বার্তা ব্যতীত কোন স্থানে প্রবেশ করে না। যারা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, তারা তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যায়, যতক্ষণ না তারা পরাজিত হয়ে তাদের কাছে ফিরে আসে’। একথা শুনে রোম সম্রাট বলে ওঠেন, لَئِنْ كُنْتَ صَدَقْتَنِيْ لَيَمْلِكُنَّ مَوْضِعَ قَدَمَيَّ هَاتَيْنِ ‘যদি তুমি আমাকে সত্য বলে থাক, তাহ’লে ওরা অবশ্যই আমার দু’পায়ের নীচের এই সিংহাসনটারও মালিক হয়ে যাবে’।[6] তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী সত্য হয়েছিল এবং হযরত ওমর ও ওছমান (রাঃ)-এর খেলাফতকালে রোমক ও পারসিক সাম্রাজ্য ইসলামী খেলাফতের অধীনস্ত হয়েছিল।
আলোচ্য আয়াতের মাধ্যমে সেই অতুল্য নৈতিক শক্তি অর্জনের জন্য রাসূল (ছাঃ)-কে আল্লাহর প্রতি সিজদাবনত হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সারকথা :
আল্লাহ যখন কাউকে দিয়ে বড় কোন খিদমত নিতে চান ও করাতে চান, তখন উক্ত কাজের জন্য তার বক্ষকে উন্মুক্ত করে দেন এবং তাকে সর্বাবস্থায় আল্লাহর প্রতি অনুগত রাখেন।[1]. আর-রাহীক্ব পৃ: ৫৬-৫৭; সীরাতে ইবনে হিশাম ১/১৬৪-৬৫; আলবানী, ছহীহ আস-সীরাতুন নববিইয়াহ পৃ: ১৬, সনদ জাইয়িদ ও শক্তিশালী; মুসলিম হা/১৬২, মিশকাত হা/৫৮৫২ ‘নবুঅতের নিদর্শনসমূহ’ অনুচ্ছেদ-৫।
[2]. মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৫৮৬২, ৫৮৬৪ ‘ফাযায়েল ও শামায়েল’ অধ্যায়, ‘মি‘রাজ’ অনুচ্ছেদ-৬।
[3]. তিরমিযী হা/৩৩৪৬ ‘তাফসীর’ অধ্যায়, ৮৩ অনুচ্ছেদ।
[4]. দীওয়ানে হাসসান পৃঃ ৪৭।
[5]. আহমাদ হা/২৭৩৬, তিরমিযী হা/২৫১৬; মিশকাত হা/৫৩০২।
[6]. ইবনু জারীর, তারীখু ত্বাবারী ২/২১৫; ইবনু কাছীর, আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ৭/৭, ৫৪।