জিহাদ ও কিতাল

চরমপন্থী উদ্ভবের কারণ ও প্রতিকার

বর্তমানে বিভিন্ন দেশে ইসলামের নামে চরমপন্থী দলসমূহ উদ্ভবের অন্যতম প্রধান কারণ হ’ল সেইসব সরকারের চরমপন্থী আচরণসমূহ। গণতন্ত্রের নামে ধর্মনিরপেক্ষ সরকারগুলি সচেতন ইসলামী ব্যক্তিত্ব ও সংগঠনসমূহের উপর সর্বত্র নিষ্ঠুর দমননীতি চালাচ্ছে এবং ধার্মিক মুসলমানদেরকে তারা নিজেদের মনগড়া আইনে নির্যাতিত হতে বাধ্য করছে। যেমন প্রায় সকল মুসলিম দেশে সূদী অর্থনীতি চালু রয়েছে। এর মাধ্যমে দেশের মুসলিম নাগরিকদের হারাম খেতে বাধ্য করা হচ্ছে। দেশের আদালতগুলিতে ইহূদী-নাছারাদের তৈরী করা আইনে অথবা তাদের অনুকরণে সরকারের মনগড়া আইনে বিচারের নামে প্রহসন করা হচ্ছে। এতে অধিকাংশেরই অন্যায় বিচারে জেল-ফাঁস হচ্ছে। ইসলামী বিচার ব্যবস্থা ও দন্ডবিধিসমূহকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে। ফলে সমাজবিরোধী ও দুর্নীতিবাজরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছে। অন্যদিকে দলবাজি রাজনীতির তিক্ত ফল হিসাবে যে যাকে প্রতিপক্ষ ভাবছে, তাকেই গুম, খুন, অপহরণ, পুলিশী নির্যাতন, মিথ্যা মামলা প্রভৃতি নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই সাথে বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা ও হাজতের নামে বছরের পর বছর ধরে নিরীহ নির্দোষ মানুষকে কারাগারে ধুঁকে ধুঁকে মরতে হচ্ছে। ক্ষমতায়নের নামে নারীকে পুরুষের পাশাপাশি বসানো হচ্ছে। সাথে সাথে স্বনির্ভরতার নামে তাদেরকে নির্মাণ শ্রমিক, শিল্প শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক প্রভৃতি অমানবিক ও ক্লেশকর কাজে বাধ্য করা হচ্ছে। মুসলিম মেয়েদের পর্দা করা ফরয। অথচ তাদেরকে পর্দাহীনতায় উসকে দেওয়া হচ্ছে এবং ছেলেদের সঙ্গে সহশিক্ষায় ও সহকর্মকান্ডে বাধ্য করা হচ্ছে। এভাবে মুসলমানদেরকে তাদের ধর্মীয় অধিকার থেকে যুগ যুগ ধরে বঞ্চিত রাখা হচ্ছে। অথচ ইসলামের বাইরে সবকিছুই হ’ল ‘জাহেলিয়াত’। যেসবের অনুসরণ করতে তাদেরকে বাধ্য করা হচ্ছে। যা নিঃসন্দেহে মুসলমানদের মৌলিক অধিকারের উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ। আল্লাহ বলেন, أَفَحُكْمَ الْجَاهِلِيَّةِ يَبْغُوْنَ وَمَنْ أَحْسَنُ مِنَ اللهِ حُكْمًا لِقَوْمٍ يُوْقِنُوْنَ ‘তবে কি তারা জাহেলিয়াতের বিধান কামনা করে? অথচ দৃঢ় বিশ্বাসীদের নিকটে আল্লাহর চাইতে বিধান দানে উত্তম আর কে আছে? (মায়েদাহ ৫/৫০)। অতএব ইসলামপন্থীদের চরমপন্থী বলার আগে গণতন্ত্রীদের আল্লাহদ্রোহিতা ও চরমপন্থী আচরণ বন্ধ করা আবশ্যক। সাথে সাথে নামধারী মুসলিম শাসকদের তওবা করে খাঁটি মুসলমান হওয়া প্রয়োজন। নইলে তারা আল্লাহর গযবের শিকার হবেন। যেখান থেকে বাঁচার কোন উপায় তাদের থাকবে না। তারা ইহকাল ও পরকাল দু’টিই হারাবেন।