নাছিরুদ্দীন হোজা ও এক দুঃখবিলাসী
একবার নাছিরুদ্দীন হোজা এক লোককে পথের ওপর খুব বিমর্ষ হয়ে বসে থাকতে দেখল। কি হয়েছে জিজ্ঞেস করতেই লোকটি বলল, তার অনেক ধন-সম্পত্তি। খাওয়া-পরা নিয়ে কোনো ভাবনা নেই। কিন্তু তার কিছুই ভালো লাগে না। জীবনের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। ঘর-বাড়ী, স্ত্রী-সন্তান কোনোকিছুই আর তাকে আকর্ষণ করে না। এ অস্থিরতা সইতে না পেরে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে এসেছে সে।
হোজা মনোযোগ দিয়ে তার কথা শুনলেন। হঠাৎ কিছু না বলেই পাশে রাখা লোকটির কাপড়ের ব্যাগটি নিয়ে দিলেন দৌড় এবং নিমেষেই হাওয়া হয়ে গেলেন। বিস্ময়ের ঘোর কাটতেই লোকটিও পিছু ধাওয়া করল। কিন্তু হোজাকে পায় কে? অনেকদূর যাওয়ার পর রাস্তার ওপর এক জায়গায় ব্যাগটি রেখে গাছের আড়ালে অপেক্ষা করতে লাগলেন হোজা। এদিকে ছুটতে ছুটতে ক্লান্ত, অবসন্ন, উদ্বিগ্ন লোকটি যখন এখানে এসে তার ব্যাগটি খুঁজে পেল, আনন্দে চিৎকার করে সে বলে উঠল, পেয়েছি! পেয়েছি! এইতো আমার ব্যাগ। বহুদিন সে এত খুশি হতে পারেনি। হোজা আড়াল থেকে হেসে বললেন, দুঃখবিলাসীদের এভাবেই শায়েস্তা করতে হয়।
শিক্ষা : لَيْسَ الْغِنَى عَنْ كَثْرَةِ الْعَرَضِ ، وَلَكِنَّ الْغِنَى غِنَى النَّفْسِ ‘সম্পদের প্রাচুর্য প্রকৃত প্রাচুর্য নয়। বরং অন্তরের প্রাচুর্যই প্রকৃত প্রাচুর্য’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫১৭০)।