খরগোশ ও শিয়াল
এক নেকড়ে বাঘ একটি ঘুমন্ত খরগোশের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। বেচারা নিদ্রা থেকে জেগে দেখল, সে মৃত্যুর কবলে। তার অন্তরাত্মা শুকিয়ে গেল। সে তখন অনুনয়-বিনয় করে বলতে লাগল, আমি খুব ভালো করেই জানি, আমার মতো এত দুর্বল প্রাণী জাঁহাপনার ক্ষুধা মেটাতে পারবে না। যদি জাঁহাপনা এই এক লোকমার আশা ত্যাগ করেন, তাহলে এক শিয়ালকে আমি দেখিয়ে দিতে পারি, যা শিকার করলে জাঁহাপনার তৃপ্তি হবে। আর যদি তা না হয়, তাহলে বানদাতো জাঁহাপনার খেদমতে হাযির আছেই।
কথাটা নেকড়ে বাঘের মনঃপূত হ’ল। সে খরগোশের সাথে রওয়ানা হ’ল। কাছেই শিয়ালের একটি গর্ত ছিল। খরগোশের সঙ্গে তার অনেক দিনের শত্রুতা। খরগোশ গর্তের কাছে গিয়ে বলল, জনাবের নির্জন বাস ও ধার্মিকতার খ্যাতি শুনে একজন জ্ঞানী সাক্ষাৎ করতে এসেছেন। যদি অবসর থাকে, তাহ’লে এখনি সাক্ষাতের সুযোগ দিন; নতুবা আপনার সুবিধা মতো খেদমতে হাযির হবেন।
শিয়াল ওর মিষ্টি কথায় প্রতারণার আভাস পেয়ে উল্টো ধোঁকা দেওয়ার জন্য বলল, সৌভাগ্য যে, এমন বুযুর্গব্যক্তি আমার মতো নাচীযের সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। কিন্তু কিছুক্ষণ বিলম্ব করতে হবে। কারণ আমি ঘরটিকে ঝেড়ে-মুছে জনাবের বসার উপযুক্ত না করে বাইরে আসতে পারছি না। খরগোশ নেকড়ে বাঘকে এ সংবাদ জানাল এবং সে একথা শুনে খুব খুশি হ’ল। শিয়াল পূর্ব থেকে গর্তে ঢোকার রাস্তায় একটি গভীর কূপ খনন করে রেখেছিল। তাই নতুন করে লতা-পাতা দিয়ে ঐ গর্তটি ঢেকে দিল। খরগোশ নেকড়ে বাঘকে নিয়ে সেই অন্ধকার গর্তে ঢুকতে গেল এবং দিশা না পেয়ে সেই গভীর কূপে পড়ে গেল। নেকড়ে বাঘ এ ঘটনাকে খরগোশের চালাকি মনে করে তৎক্ষণাৎ তাকে মেরে ফেলল।
শিক্ষা : বুদ্ধিমানকে কখনো ধোঁকা দেয়া যায় না।