গল্পের মাধ্যমে জ্ঞান

পান্থশালা

আল্লাহ পাক সময় সময় দুনিয়ার ধন-সম্পদে বিভোর মানুষকে ধন-সম্পদের মোহ হ’তে ফিরানোর জন্য কিছু অসীলা করে থাকেন। বলখী বাদশাহ ইবরাহীম বিন আদম প্রথম জীবনে আল্লাহওয়ালাই ছিলেন। কিন্তু পরে ধন-সম্পদের মোহে তিনি সে পথ হ’তে কিছুটা সরে যান। একদিন তাঁর রাজদরবারে এক অপরিচিত ব্যক্তির আগমন ঘটে। লোকটি রাজদরবারে উপস্থিত হয়ে বললেন, আমি এই পান্থশালায় রাত্রি যাপন করতে চাই। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর কথার প্রতিবাদ এল- ‘আপনি সম্ভবতঃ ভুল করছেন, এটা রাজদরবার, পান্থশালা নয়’। আগন্তুক ব্যক্তি বললেন, ‘অবশ্যই এটা পান্থশালা’। এমন সময় বাদশাহ দরবারে এসে বিতর্ক শুনলেন। তিনি একটু ধমকের সুরে আগন্তুককে বললেন, ‘এটা রাজদরবার, কস্মিনকালেও পান্থশালা নয়’।

আগন্তুক বললেন, ‘আপনার আগে এখানে কে বাস করতেন’? উত্তর এল, ‘আমার আববা’। আপনার পরে কে বাস করবে’? উত্তর এল, ‘আমার ছেলে’?

এবার আগন্তুক ব্যক্তি বললেন, ‘তাহ’লে এখানে কেউই স্থায়ী হয়ে বাস করতে পারছেন না। আপনার আগে আপনার পিতা বাস করেছেন, এখন আপনি বাস করছেন, পরে আপনার ছেলে বাস করবে। অতএব এটা অবশ্যই পান্থশালা’। এবার বাদশাহর চৈতন্যোদয় হ’ল। তিনি বুঝলেন, সকলেই পান্থশালার বাসিন্দা। এরপর তিনি এক রাতে রাজপ্রাসাদ ত্যাগ করে অজানার  পথে পা বাড়ালেন।

শিক্ষা : পার্থিব জগত ক্ষণিকের নীড়। কেউ এখানে চিরস্থায়ীভাবে থাকবে না। একদিন সবাইকে চলে যেতে হবে এ জগতের মায়া-মরীচিকা ছেড়ে না ফেরার দেশে। সুতরাং দুনিয়াবী শান-শওকত নিয়ে মদমত্ত থাকার কোন অর্থই হয় না। ক্ষণিকের এই সময়টুকু পরকালীন সঞ্চয়ে ব্যয় করাই আমাদের একমাত্র কর্তব্য।