বাদশাহ আমানুল্লাহর বিচক্ষণতা
দুই ভাই আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল শহরে দীর্ঘদিন ধরে কসাইগিরি করে প্রচুর টাকা উপার্জনের পর বাড়ী ফিরছিল। পথে এক ফকীরের সাথে তাদের দেখা হ’ল। ফকীর ও তারা এক গাছের নীচে বসে খাবার খেল। ফকীর তাদের সম্বন্ধে ওয়াকিফহাল হ’ল। ফকীর বলল, তোমরা এত টাকা উপার্জন করে বাড়ী ফিরছ, টাকাগুলি আমাকে একবার দেখাও’। ফকীর টাকাগুলি নিয়ে তার থলেতে পুরে নিল। দু’ভাই তৎক্ষণাৎ ফকীরের কাছ থেকে টাকাগুলি ছিনিয়ে নিল। ফকীর তখন প্রাণপণে চিৎকার শুরু করে দিল। ফকীরের চিৎকারের বিষয় ছিল, ‘আমার টাকা এরা দু’জনে ছিনিয়ে নিয়েছে’।
চিৎকারে বেশকিছু লোক সমবেত হ’ল। ফকীর বর্ণনা দিল, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে রাজধানী শহরে থেকে ভিক্ষা করে টাকাগুলি উপার্জন করেছি। খেতে বসে গল্পে সে কথা প্রকাশ করায় ওরা দু’জনে মিলে আমার টাকাগুলি ছিনিয়ে নিয়েছে’। অপরদিকে দু’ভাইয়ের কথা তো বানিয়ে বলার দরকার নেই। তারা যা ঘটনা তাই বলল। সমবেত লোকজন দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়ে গেল। তারা কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হ’তে পারল না। অগত্যা তারা ফকীর ও দু’ভাইকে বাদশাহ আমানুল্লাহর দরবারে হাযির করল।
বাদশাহ উভয়ের বক্তব্য শুনলেন। তিনি একটা পাতিলে পানি গরম করতে বললেন। পানি গরম হ’লে তিনি টাকাগুলি পানিতে ফেলে দিলেন। পানির স্বাভাবিক রং বদলে গেল। কারণ টাকাগুলিতে কসাইগিরির রক্ত লেগেছিল। বাদশাহ এবং উপস্থিত সকলে বুঝলেন, টাকাগুলির সত্যিকার মালিক দু’ভাই। টাকাগুলি তাদের দিয়ে দেওয়া হ’ল এবং ফকীরকে শাস্তি দেওয়া হ’ল।
শিক্ষা : অনেক সময় উপস্থিত বুদ্ধি বিচারের কাজে সহায়ক হয়।