ফিরক্বা নাজিয়াহ

বিদ্বানগণের বক্তব্য

(১) হিজরী পঞ্চম শতকের মুজাদ্দিদ ইমাম আবু মুহাম্মাদ আলী ইবনু হাযম আন্দালুসী (৩৮৪-৪৫৬ হিঃ) বলেন,

وَأَهْلُ السُّنَّةِ الَّذِيْنَ نَذْكُرُهُمْ أَهْلَ الْحَقِّ وَمَنْ عَدَاهُمْ فَأَهْلُ الْبَاطِلِ فَإِنَّهُمُ الصَّحَابَةُ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمْ وَ كُلُّ مَنْ سَلَكَ نَهْجَهُمْ مِنْ خِيَارِ التَّابِعِيْنَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِمْ ثُمَّ أَهْلُ الْحِدِيْثِ وَمَنْ تَبِعَهُمْ مِنَ الْفُقَهَاءِ جَيْلاً فَجَيْلاً إِلىَ يَوْمِنَا هذَا وَمَنِ اقْتَدَى بِهِمْ مِنَ الْعَوَامِ فِىْ شَرْقِ الْأَرْضِ وَغَرْبِهَا رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِمْ –

‘আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত- যাদেরকে আমরা হকপন্থী ও তাদের বিরোধীদের বাতিলপন্থী বলেছি, তাঁরা হ’লেন (ক) ছাহাবায়ে কেরাম (খ) তাঁদের অনুসারী শ্রেষ্ঠ তাবেঈগণ (গ) আহলেহাদীছগণ (ঘ) ফক্বীহদের মধ্যে যারা তাঁদের অনুসারী হয়েছেন যুগে যুগে আজকের দিন পর্যন্ত এবং (ঙ) প্রাচ্য ও প্রতীচ্যের ঐ সকল ‘আম জনসাধারণ, যারা তাঁদের অনুসারী হয়েছেন’।[1]

(২) ‘বড় পীর’ বলে খ্যাত শায়খ আব্দুল কাদের জীলানী (৪৯১-৫৬১ হিঃ) বলেন,

وَأَمَّا الْفِرْقَةُ النَّاجِيَةُ فَهِيَ أَهْلُ السُّنَّةِ وَالْجَمَاعَةِ قَالَ: وَأَهْلُ السُّنَّةِ لاَ إِسْمٌ لَهُمْ إِلاَّ إِسْمٌ وَّاحِدٌ وَّهُوَ أَصْحَابُ الْحَدِيْثِ–

‘অতঃপর ফের্কা নাজিয়া হ’ল আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত। আর আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের অন্য কোন নাম নেই একটি নাম ব্যতীত। সেটি হ’ল ‘আহলুল হাদীছ’।[2]

(৩) শাহ অলিউল্লাহ দেহলভী (১১১৪-১১৭৬ হিঃ/১৭০৩-১৭৬২ খৃঃ) বলেন,

اَلْفِرْقَةُ النَّاجِيَةُ هُمُ الآخِذُوْنَ فِي الْعَقِيْدَةِ وَالْعَمَلِ جَمِيْعًا بِمَا ظَهَرَ مِنَ الْكِتَابِ وَالسُّنَّةِ وَجَرَي عَلَيْهِ جُمْهُوْرُ الصَّحَابَةِ وَالتَّابِعِيْنَ،  وَإِن اخْتلفُوا فِيمَا بَينَهُمْ فِيمَا لَم يَشْتَهِرْ فيه نَصٌّ، ولاَ ظَهَرَ مِن الصَّحَابَة اتِّفَاقٌ عَلَيْهِ اسْتِدْلاَلاً مِنْهُم بِبَعْضِ مَا هُنَالِكَ أَو تَفْسِيرًا لِمُجْمَلِهِ- وَغيرُ النَّاجِيةِ كلُّ فِرْقَةٍ اِنْتَحَلَتْ عَقِيدةً خِلاَفَ عَقِيْدَةِ السَّلَف أَو عَمَلاً دُونَ أَعْمَالِهِمْ-

‘ফের্কা নাজিয়াহ তারাই যারা আক্বীদা ও আমলের সকল বিষয়ে কিতাব ও সুন্নাতের প্রকাশ্য অর্থের এবং যার উপরে জমহূর ছাহাবা ও তাবেঈনের আমল জারি আছে, তার অনুসারী। যদিও তাঁদের মধ্যে মতভেদ থাকে যেসব বিষয়ে কোন দলীল প্রসিদ্ধি লাভ করেনি এবং ছাহাবীগণের মধ্যে ঐক্যমত প্রকাশিত হয়নি, তাঁদের থেকে দলীল গ্রহণের ক্ষেত্রে অথবা সংক্ষিপ্ত বিষয় ব্যাখ্যা করার ক্ষেত্রে। পক্ষান্তরে নাজী ফের্কা নয় ঐসব দল, যারা সালাফী আক্বীদা অথবা আমলের বিপরীত আক্বীদা বা আমল গ্রহণ করে’।[3] এ বক্তব্যে পরিষ্কার যে, তারা আহলুল হাদীছ।


[1]. আলী ইবনু হাযম আন্দালুসী, কিতাবুল ফিছাল ফিল মিলাল ওয়াল আহওয়া ওয়ান নিহাল (বৈরূত : মাকতাবা খাইয়াত্ব ১৩২১/১৯০৩) শাহরাস্তানীর ‘মিলাল’ সহ ২/১১৩ পৃঃ; কিতাবুল ফিছাল (বৈরূত : দারুল কুতুবিল ইলমিয়াহ, ২য় সংস্করণ ১৪২০/১৯৯৯) ১/৩৭১ পৃঃ ‘ইসলামী ফের্কাসমূহ’ অধ্যায়।

[2]. আব্দুল ক্বাদির জীলানী, কিতাবুল গুনিয়াহ ওরফে গুনিয়াতুত ত্বালেবীন (মিসর : ১৩৪৬ হিঃ) ১/৯০ পৃঃ।

[3]. হুজ্জাতুল্লাহিল বালেগাহ (কায়রো : দারুত তুরাছ; ১৩৫৫হিঃ/১৯৩৬ খৃঃ) ১/১৭০ পৃঃ।