ফিরক্বা নাজিয়াহর নিদর্শন সমূহ
১. তারা আক্বীদা, ইবাদত ও আচরণে রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের নীতির উপর দৃঢ় থাকেন এবং সর্বদা ছহীহ হাদীছের উপর আমল করেন। তারা মানুষের সাথে সদ্ব্যবহার করেন এবং আপোষে মহববতের সম্পর্ক অটুট রাখেন।
২. তারা সকল বিষয়ে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের দিকে ফিরে যান এবং সালাফে ছালেহীন ও মুহাদ্দিছ বিদ্বানগণের মাসলাক অনুসরণে যুগ-জিজ্ঞাসার জবাব দেন।
৩. তারা ব্যাখ্যাগত মতভেদ-কে লঘু করে দেখেন এবং কখনোই তাকে দলীয় বিভক্তিতে পরিণত করেন না।
যেমন খন্দকের যুদ্ধ থেকে ফিরেই জিব্রীল (আঃ) বললেন দ্রুত বনু কুরায়যার বিরুদ্ধে অভিযানে বের হবার জন্য। তখন রাসূল (ছাঃ) সবাইকে নির্দেশ দিলেন বনু কুরায়যায় পৌছে আছর পড়ার জন্য। ইতিমধ্যে আছরের ওয়াক্ত হয়ে গেলে কেউ মদীনা থেকেই আছর পড়ে বের হলেন। কেউ বনু কুরায়যায় পৌঁছে ওয়াক্ত শেষে আছর পড়লেন। বুঝের এই ভিন্নতার কারণে রাসূল (ছাঃ) কাউকে তিরষ্কার করলেন না। কেননা কেউ এই নির্দেশকে প্রকাশ্য অর্থে বুঝেছিলেন, কেউ একে দ্রুত যাওয়ার অর্থে নিয়েছিলেন। উভয়ে সঠিক ছিলেন।
বস্ত্ততঃ ব্যাখ্যাগত মতভেদের কারণে কেউ ফিরক্বা নাজিয়াহ থেকে বের হবে না। যতক্ষণ না সেখানে যিদ, অহংকার ও দলাদলি সৃষ্টি হয়। কিন্তু আক্বীদাগত বিভ্রান্তি হ’লে বেরিয়ে যাবে। তাই তার ব্যবহারিক আচরণ যতই সুন্দর হৌক না কেন? এমতাবস্থায় নাজী ফের্কা থেকে কেউ বেরিয়ে গেলে তার বিষয়টি আল্লাহর উপর ছেড়ে দিতে হবে এবং নিজেকে সত্যের উপর দৃঢ় রাখতে হবে।
৪. তারা সর্বদা উত্তম মুমিন হওয়ার জন্য চেষ্টিত থাকেন এবং এজন্য সর্বদা আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করেন।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, এক মুসলমান অপর মুসলমানের ভাই। সে তার উপর যুলুম করবে না, তাকে লজ্জিত করবে না ও তাকে হীন মনে করবে না। ‘আল্লাহভীতি এখানে’- একথা বলে রাসূল (ছাঃ) তিনবার নিজের বুকের দিকে ইশারা করেন। অতঃপর তিনি বলেন, কোন ব্যক্তির মন্দ কাজের জন্য এটুকুই যথেষ্ট যে, সে তার কোন মুসলিম ভাইকে তুচ্ছ জ্ঞান করে। আর এক মুসলমানের জন্য অপর মুসলমানের উপর হারাম হ’ল তার রক্ত, তার মাল ও তার ইযযত’।[1] সে সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী হবে’।[2][1]. মুসলিম হা/২৫৬৪; মিশকাত হা/৪৯৫৯ ‘শিষ্টাচার সমূহ’ অধ্যায় ১৫ অনুচ্ছেদ।
[2]. মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৫০৭৫ ‘শিষ্টাচার সমূহ’ অধ্যায় ১৯ অনুচ্ছেদ।