উৎপত্তির প্রত্যক্ষ কারণ
‘ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ’ প্রতিষ্ঠার প্রত্যক্ষ কারণ হিসাবে গণ্য হয়েছে ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পাশ্চাত্যের খ্রিষ্টান ধর্মযাজকদের ধর্মের নামে সীমাহীন বাড়াবাড়ি। তাদের সমস্ত অপতৎপরতা ও লাম্পট্যকে ধর্মের লেবাসেই তারা সিদ্ধ করে নিয়েছিল। ফলে জনগণ তাদের ধর্মযাজকদের উপরে ক্ষিপ্ত হবার সাথে সাথে খ্রিষ্টান ধর্মসহ সকল ধর্মের উপরে খড়গহস্ত হয়ে ওঠে। অবশেষে ধর্মকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক তথা বৈষয়িক জীবনের সকল অঙ্গন থেকে বাদ দিয়ে ব্যক্তি জীবনের ক্ষুদ্র গন্ডীতে আবদ্ধ রাখার মাধ্যমে একটি আপোষ রফা করা হয়। আর এটাই হল আধুনিক যুগের কথিত ‘ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ’। খ্রিষ্টান জগতের ধর্মীয় নেতা জন পোপ পল বিপুল শ্রদ্ধা ও ভক্তির পাত্র হলেও বাস্তব জীবনে তার নিকট থেকে মানুষের কিছুই চাওয়া-পাওয়ার নেই। তাই চরম ধূর্তামী ও প্রকাশ্য লাম্পট্য সত্ত্বেও খ্রিষ্টান রাষ্ট্রগুলি দুষ্ট নেতাদেরকেই জাতির কর্ণধার হিসাবে বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছে। ধর্মহীন গণতন্ত্রে এটাই স্বাভাবিক। এই সিস্টেমে অধার্মিক লোকদেরই জয়জয়কার। ভাগ্যক্রমে কোন সৎ ও ধার্মিক লোক সেখানে ঢুকে পড়লেও তাকে হয় সবকিছু দেখেও না দেখার ভান করতে হয়। নতুবা অনিচ্ছা সত্ত্বেও আপোষ করে চলতে হয়। কেননা বাস্তব জীবনে আইনগতভাবে ধর্মীয় বিধি-বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনার কোন সুযোগ ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদে নেই। ফলে এই মতবাদ পুরোপুরি একটি কুফরী মতবাদ এবং ইসলামের সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক।
১৮৩২ সালে আন্দোলনটি জোরদার রূপ ধারণ করে। জেকব হালেক, চার্লস সাউথওয়েল, থামস কুপার, থামস পিয়ারসন, স্যার ব্রেড্লে প্রমুখ ছিলেন তখনকার সময়ে এই আন্দোলনের পুরোধা।
মূলতঃ ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ এবং কম্যুনিজম ও সমাজতন্ত্র একই ধর্মবিরোধী বস্ত্তবাদী চেতনা হতে উদ্ভূত। উভয়েরই শেষ লক্ষ্য ধর্মকে মানুষের জীবন থেকে নির্বাসন দেওয়া। বাংলাদেশে উভয় মতবাদের পিছনে পরাশক্তি সমূহের নিয়মিত মদদ রয়েছে। কখনো তারা আপোষে লড়ছে বটে। কিন্তু ইসলামের বিরুদ্ধে পৃথিবীর অন্যান্য স্থানের ন্যায় বাংলাদেশেও তারা একমত হয়ে কাজ করছে।