আহলেহাদীছের বাহ্যিক নিদর্শন (شِعَارُ أَهْلِ الْحَدِيْثِ)
আহলেহাদীছদের বাহ্যিক নিদর্শন বর্ণনা করতে গিয়ে ইমাম আব্দুর রহমান ছাবূনী (৩৭২-৪৪৯ হিঃ) বলেন, (১) কম হউক বেশী হউক সকল প্রকারের মাদকদ্রব্য ব্যবহার হ’তে তারা বিরত থাকেন (২) ফরয ছালাতসমূহ আউয়াল ওয়াক্তে আদায়ের জন্য তারা সদা ব্যস্ত থাকেন (৩) ইমামের পিছনে সূরায়ে ফাতিহা পড়াকে তারা ওয়াজিব মনে করেন (৪) ছালাতের মধ্যে রুকূ-সুজূদ, ক্বিয়াম-কু‘ঊদ ইত্যাদি আরকানকে ধীরে-সুস্থে শান্তির সঙ্গে আদায় করাকে তারা অপরিহার্য বলেন এবং এতদ্ব্যতীত ছালাত শুদ্ধ হয় না বলে তারা মনে করেন (৫) তারা সকল কাজে নবী (ছাল্লাল্লা-হু আলাইহে ওয়া সাল্লাম), ছাহাবায়ে কেরাম ও সালাফে ছালেহীনের কঠোর অনুসারী হয়ে থাকেন (৬) বিদ‘আতীদেরকে তারা ঘৃণা করেন। তারা বিদ‘আতীদের সঙ্গে উঠাবসা করেন না বা তাদের সঙ্গে দ্বীনের ব্যাপারে অহেতুক ঝগড়া করেন না। তাদের থেকে সর্বদা কান বন্ধ রাখেন, যাতে তাদের বাতিল যুক্তিসমূহ অন্তরে ধোঁকা সৃষ্টি করতে না পারে’।[1]
আমরা বলি, আহলেহাদীছের সর্বাপেক্ষা বড় নিদর্শন হ’ল এই যে, তারা হ’লেন আক্বীদার ক্ষেত্রে শিরকের বিরুদ্ধে আপোষহীন তাওহীদবাদী এবং আমলের ক্ষেত্রে বিদ‘আতের বিরুদ্ধে আপোষহীনভাবে সুন্নাতপন্থী। তবে এখানে বলা আবশ্যক যে, আহলেহাদীছ হওয়ার জন্য যেমন আহলেহাদীছ বাপের সন্তান হওয়া শর্ত নয়। তেমনি রক্ত, বর্ণ, ভাষা বা অঞ্চলেরও কোন ভেদাভেদ নেই। বরং যেকোন মুসলমান নিঃশর্তভাবে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের সিদ্ধান্ত মেনে নিলে ও সেই অনুযায়ী নিজের সার্বিক জীবন গড়ে তুলতে সচেষ্ট হ’লেই কেবল তিনি ‘আহলেহাদীছ’ নামে অভিহিত হবেন। নিঃসন্দেহে আহলেহাদীছ-এর প্রকৃত পরিচয় তার নির্ভেজাল আক্বীদা ও আমলের মধ্যে নিহিত। তার পিতৃ পরিচয়, বিদ্যা-বুদ্ধি, অর্থ-সম্পদ বা সামাজিক পদ মর্যাদার মধ্যে নয়।