ইমাম আবু হানীফার নীতি (مسلك أبي حنيفة)
ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) তাঁর রায়-এর তাক্বলীদ বা অন্ধ অনুসরণ করতে তীব্রভাবে নিষেধ করে গিয়েছেন এবং ‘যখন ছহীহ হাদীছ পাওয়া যাবে, তখন সেটাই আমার মাযহাব’ বলে দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা দিয়ে গিয়েছেন (দ্রঃ টীকা ৩)। সেকারণ আব্দুল ওয়াহ্হাব শা‘রানী হানাফী (৮৯৮-৯৭৩ হিঃ) বলেন,
إِنَّهُ لَوْ عَاشَ حَتَّى دُوِّنَتْ أَحَادِيْثُ الشَّرِيْعَةِ .... لَأَخَذَ بِهَا وَ تَرَكَ كُلَّ قِيَاسٍ كَانَ قَاسَهُ وَ كَانَ الْقِيَاسُ قَلَّ فِيْ مَذْهَبِهِ كَمَا قَلَّ فِيْ مَذْهَبِ غَيْرِهِ...
‘যদি (তৃতীয় শতাব্দী হিজরীতে) হাদীছ সংগ্রহ ও সংকলনের স্বর্ণযুগে ইমাম আবু হানীফা বেঁচে থাকতেন, তাহ’লে তিনি সেগুলি গ্রহণ করতেন ও যত ক্বিয়াসী ফৎওয়া দিয়েছেন সবই বাদ দিতেন এবং তাঁর মাযহাবেও ক্বিয়াস কম হ’ত, যেমন অন্যদের মাযহাবে কম হয়েছে। .... যে কথা বলা হয়ে থাকে যে, ইমাম আবু হানীফা ক্বিয়াসকে দলীলের উপরে স্থান দিতেন, এটা তাঁর মুক্বাল্লিদগণের কথা মাত্র। যারা ইমামের ক্বিয়াসের উপরে আমল করাকে অপরিহার্য গণ্য করেছেন এবং হাদীছকে পরিত্যাগ করেছেন যা ইমামের মৃত্যুর পরে ছহীহ প্রমাণিত হয়েছে। এ ব্যাপারে ইমাম দায়ী নন, বরং দায়ী তার অন্ধ অনুসারীবৃন্দ’।[1]
ফলকথা আহলুল হাদীছগণের বিপরীতে আহলুর রায়গণের ক্বিয়াস স্ব স্ব মাযহাবী বিদ্বানদের রচিত ব্যবহারিক আইনসূত্রসমূহ বা উছূলে ফিক্বহের উপরে ভিত্তিশীল, হাদীছের উপরে নয়।