ইহসান ইলাহী যহীর

ফারেগ হওয়ার পূর্বেই মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের

সার্টিফিকেট লাভ :একটি বিস্ময়কর ঘটনা

মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে আল্লামা যহীর ‘আল-কাদিয়ানিয়াহ : দিরাসাত ওয়া তাহলীল’ (القاديانية دراسات وتحليل) নামে একটি গ্রন্থ রচনা করেন। মূলত এগুলি ছিল তাঁর ঐসব লেকচারের সমাহার, যেগুলি তিনি ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের সামনে প্রদান করতেন। কারণ তখন কাদিয়ানীদের ব্যাপারে আরব শিক্ষকদের জ্ঞান ছিল একেবারেই সীমিত। সেজন্য তিনি ধর্মতত্ত্ব ক্লাসে ছাত্রদেরকে এ বিষয়ে লেকচার প্রদান করতেন এবং এগুলি সমৃদ্ধাকারে আরবী পত্র-পত্রিকায় প্রবন্ধাকারে প্রকাশ করতেন।

উক্ত গ্রন্থটি প্রকাশের সময় প্রকাশক যহীরকে বলেন, যদি লেখকের পরিচয়ে ‘মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র’র (طالب الجامعة الإسلامية بالمدينة المنورة) পরিবর্তে ‘মদীনা বিশ্ববিদ্যালয় ফারেগ’ (خريج الجامعة الإسلامية بالمدينة المنورة) লেখা হয়, তাহ’লে এ বইয়ের গুরুত্ব ও গ্রহণযোগ্যতা বেড়ে যাবে। যহীর বলেন, ‘আমি প্রকাশকের এই আগ্রহের কথা মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (তৎকালীন) ভাইস চ্যান্সেলর শায়খ আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায-এর কাছে ব্যক্ত করলাম। উনি বিষয়টি ইউনিভার্সিটির গভর্ণিং বডির কাছে উপস্থাপন করলে আমার বইয়ের গুরুত্ব বিবেচনা করে গভর্ণিং বডি এই সিদ্ধান্ত নেন যে, আমার বইয়ে আমার নামের সাথে ‘মদীনা বিশ্ববিদ্যালয় ফারেগ’ লেখার অনুমতি দেয়া যায় এবং আমাকে এই অনুমতি প্রদানও করা হ’ল। আমার প্রথম গৌরব এটা ছিল যে, আমি আমার ক্লাসে শিক্ষকদের পরিবর্তে ছাত্রদেরকে কাদিয়ানী মতবাদের উপর লেকচার প্রদান করেছি এবং আমার এই লেকচারসমগ্র বই আকারে আমার ছাত্র জীবনেই প্রকাশিত হয়েছে। আর আমার দ্বিতীয় গৌরব এটা ছিল যে, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো উঁচু মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ফাইনাল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পূর্বেই আমাকে ‘ফারেগ’ সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়েছিল। আমার স্মরণ আছে, যখন আমাকে এই সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়েছিল তখন আমি ভাইস চ্যান্সেলর মহোদয়কে একদিন রসিকতা করে বলেছিলাম, ‘মাননীয় শায়খ! যদি আমি ফাইনাল পরীক্ষায় ফেল করি তাহলে এই সার্টিফিকেটের কী হবে’? ভাইস চ্যান্সেলর মুচকি হেসে উত্তর দিয়েছিলেন, ‘যদি ইহসান ইলাহী যহীর ফেল করে তাহ’লে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ই বন্ধ করে দিব’। মূলত এটা আমার যোগ্যতা সম্পর্কে তাঁর আস্থার বহিঃপ্রকাশ ছিল এবং নিজেকে আমি এই আস্থার যোগ্য প্রমাণ করতে কখনো কার্পণ্য করিনি’।[1]



[1]. মুমতায ডাইজেস্ট, বিশেষ সংখ্যা-১, পৃঃ ৪৪-৪৫।