উপসংহার
পরিশেষে বলা যায়, আল্লামা ইহসান ইলাহী যহীর (রহঃ) বিংশ শতকে আল্লাহর পথে দাওয়াতের ময়দানে নিয়োজিত এক নিবেদিতপ্রাণ অকুতোভয় সিপাহসালার ছিলেন। পাকিস্তানে কুরআন ও ছহীহ হাদীছের ঝান্ডা উড্ডীন করার দৃপ্ত শপথ নিয়ে তিনি ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। অগ্নিঝরা বক্তৃতা, ক্ষুরধার লেখনী ও সাংগঠনিক তৎপরতার মাধ্যমে তিনি পাকিস্তানে আহলেহাদীছ আন্দোলনের প্রচার-প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ঘুমন্ত আহলেহাদীছ জামা‘আতকে অল্প সময়ের মধ্যেই জাগিয়ে তুলে তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ও আত্মোপলব্ধির বীজ বপন করতে সক্ষম হন।
শী‘আ, কাদিয়ানী, ব্রেলভী, বাহাইয়া, বাবিয়া প্রভৃতি বাতিল ফিরকাগুলো ইসলামের শ্বেত-শুভ্র রূপকে কালিমালিপ্ত করার যে অপপ্রয়াস চালাচ্ছিল, তার বিরুদ্ধে আল্লামা যহীর গবেষণালব্ধ বই-পত্র লিখে বিশ্বের কাছে তাদের স্বরূপ উন্মোচন করেছিলেন। এসব পথভ্রষ্ট ফিরকার আক্বীদা-বিশ্বাস তাদের লিখিত গ্রন্থ থেকে উদ্ধৃত করে শক্তিশালী দলীল ও যুক্তির আলোকে এমনভাবে খন্ডন করতেন যে, তারা তার মুকাবিলা করার দুঃসাহস দেখাত না। তাঁর বই-পুস্তক পড়ে এসব ফিরকার অনেকেই তওবা করে সঠিক পথে ফিরে এসেছেন। ফালিল্লাহিল হামদ।
‘খতীবে মিল্লাত’ ‘খতীবে কওম’ রূপে বরিত আল্লামা যহীর ছিলেন সময়ের সেরা বাগ্মী। তাঁর অগ্নিঝরা বক্তৃতা হকপিয়াসীদের মনে কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলো প্রজ্বলিত করত, আর বাতিলপন্থীদের বুকে থরথর কম্পন সৃষ্টি করত। তাঁর বলিষ্ঠ চ্যালেঞ্জের কাছে বিদ‘আতী, কবরপূজারী ও পথভ্রষ্ট ফিরকার লোকজন ছিল অসহায়-নিরুপায়। আল্লাহর পথে দাওয়াতে অন্তঃপ্রাণ এই বিরল আহলেহাদীছ প্রতিভা খ্যাতির শীর্ষে দেদীপ্যমান থাকা অবস্থায় কুচক্রীদের বোমার আঘাতে মাত্র ৪২ বছর বয়সে ১৯৮৭ সালের ৩০ মার্চ দপ করে নিভে যান। মহান আল্লাহ তাঁকে তাঁর রহমতের বারিধারায় সিক্ত করুন এবং জান্নাতুল ফেরদৌসে স্থান দিয়ে সম্মানিত করুন! আমীন!!
পরবর্তী পৃষ্ঠা |