ইহসান ইলাহী যহীর

চরিত্র-মাধুর্য

আদর্শ মানুষ হিসাবে আল্লামা যহীরের চরিত্রে নানামুখী গুণের সম্মিলন ঘটেছিল। তিনি অত্যন্ত দানশীল, নম্র ও ভদ্র ছিলেন। আল্লাহর রাস্তায় অর্থ ব্যয়, গরীব-দুঃখী ও বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় তিনি সর্বদা সামনের সারিতে থাকতেন। অসংখ্য মসজিদ নির্মাণে তিনি নিজে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছেন এবং অন্যদেরকেও এ ব্যাপারে উৎসাহিত করেছেন। সত্যবাদিতা, আমানতদারিতা ও ক্ষমাশীলতা ছিল তাঁর চরিত্রের ভূষণ। কারো চাটুকারিতা ও মোসাহেবি করা ছিল তাঁর চিরাচরিত স্বভাববিরুদ্ধ। যতবড় ব্যক্তিই হোক না কেন তাকে ভয় করতেন না। বরং তার মধ্যে খারাপ কিছু দেখলে সঙ্গে সঙ্গে তা প্রকাশ করতেন।

তিনি মিশুক, রসিক ও প্রশস্ত হৃদয়ের অধিকারী ছিলেন। দ্রুত রেগে যেতেন। তাঁর মধ্যে কিছুটা কঠোরতা ছিল। তবে বক্তব্য প্রদানের সময় তাঁর অন্তর নরম হয়ে যেত। শ্রোতাদেরকে কাঁদাতেন ও তাদের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করতেন। একবার এক মজলিসে রাফেযীদের আক্বীদা ও ছাহাবীগণকে তাদের গালি-গালাজ সম্পর্কে আলোচনা করছিলেন। প্রতীক্ষিত মাহদী সম্পর্কে রাফেযীদের আক্বীদা হল, তাদের কল্পিত ইমাম মাহদী যখন আবির্ভূত হবেন, তখন ইফকের ঘটনার জন্য তিনি আয়েশা (রাঃ)-কে বেত্রাঘাত করবেন ও তাঁর ওপর হদ জারি করবেন। একথা বলার পর আল্লামা যহীর ছাহাবায়ে কেরাম ও উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রাঃ)-এর প্রতি ভালবাসায় অঝোর নয়নে কাঁদতে থাকেন।[1]

ব্যক্তিগতভাবে তিনি কারো সাথে শত্রুতা পোষণ করতেন না। যাদের সাথে তাঁর বিভিন্ন ধর্মীয় বিষয়াদি নিয়ে মতভেদ ছিল, তাদের সাথেও তিনি সদাচরণ করতেন। কখনো কারো গীবত, চোগলখুরী ও অকল্যাণ করতেন না।[2]



[1]. মুমতায ডাইজেস্ট, বিশেষ সংখ্যা-১, পৃঃ ১১৮; ড. যাহরানী, প্রাগুক্ত, পৃঃ ৫৯, ৬১।

[2]. মুমতায ডাইজেস্ট, বিশেষ সংখ্যা-১, পৃঃ ১১৮।