তালাক ও তাহলীল

সমঝোতার বিধান

তালাকের শারঈ পদ্ধতি হিসাবে কুরআন ও হাদীছে স্বামীকে কমপক্ষে তিন মাস ভাববার অবকাশ দেওয়া হয়েছে। যাতে ইদ্দতের মধ্যেই উভয়ের মধ্যে একটা সমঝোতার পথ বেরিয়ে যায়। এছাড়াও উভয় পরিবারের বা পরিবারের বাইরে এক এক জন প্রতিনিধি নিয়ে সমঝোতা বৈঠক করার নির্দেশও সূরা নিসা ৩৫ আয়াতে দেওয়া হয়েছে। যেমন আল্লাহ বলেন,

وَإِنْ خِفْتُمْ شِقَاقَ بَيْنِهِمَا فَابْعَثُواْ حَكَماً مِّنْ أَهْلِهِ وَحَكَماً مِّنْ أَهْلِهَا إِنْ يُرِيْدَا إِصْلاَحاً يُوَفِّقِ اللّهُ بَيْنَهُمَا إِنَّ اللّهَ كَانَ عَلِيْماً خَبِيْراً -

‘আর যদি তোমরা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক ছিন্ন হবার আশংকা কর, তাহ’লে স্বামীর পরিবার থেকে একজন ও স্ত্রীর পরিবার থেকে একজন শালিস প্রেরণ কর। যদি তারা উভয়ে মীমাংসা কামনা করে, তাহ’লে আল্লাহ তাদেরকে সহায়তা করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও সবকিছু অবহিত’ (নিসা ৪/৩৫)। বস্ত্ততঃ উভয় পক্ষের দূরদর্শী ও আল্লাহভীরু অভিভাবকগণ অথবা কোন শক্তিশালী নিরপেক্ষ সংস্থা এবং সর্বোপরি রাষ্ট্রীয় সংস্থার পক্ষে সরকার এই দায়িত্ব পালন করবেন। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, إنِ اشْتَجَرُوْا فَالسُّلْطَانُ وَلِىٌّ مَّنْ لاَ وَلِىَّ لَهاَ-

‘যদি তারা আপোষে ঝগড়া করে, তাহ’লে শাসনকর্তা অভিভাবক হবেন ঐ ব্যক্তির জন্য, যার কোন অভিভাবক নেই’।[1]

তালাকের উক্ত শারঈ পন্থা অবলম্বন করলে স্বামী-স্ত্রীকে এভাবে চোরাপথ তালাশ করতে হ’ত না। এক বা দুই তালাক দিয়ে রেখে দিলে ইদ্দতের মধ্যে ফিরিয়ে নিয়ে  বা ইদ্দত চলে গেলে নতুন বিবাহের মাধ্যমে তারা পুনরায় মিলিত হ’তে পারত। বস্ত্ততঃ ইসলামের দেওয়া এই বিধানই কেবল যুক্তি সম্মত ও ভদ্রোচিত পন্থা। এক্ষণে প্রশ্ন হ’ল যদি কেউ শারঈ পন্থা বাদ দিয়ে বিদ‘আতী পন্থায় এক মজলিসে তিন তালাক একত্রিতভাবে বা একই তুহরে তিন তালাক পৃথক পৃথকভাবে দিয়ে দেয়, তা’হলে তার স্ত্রী চিরতরে তালাক হবে কি-না।


[1]. ছহীহ আবুদাঊদ হা/১৮৩৫; তিরমিযী, ইবনু মাজাহ প্রভৃতি; ইরওয়া হা/১৮৪০, ৬/২৪৩।