যে সকল হারামকে মানুষ হালকা মনে করে

পোশাক-পরিচ্ছদ ও কথা-বার্তায় নারী-পুরুষ পরস্পরের বেশ ধারণ

পুরুষকে আল্লাহ তা‘আলা যে পুরুষালী স্বভাবে সৃষ্টি করেছেন তাকে তা বজায় রাখা এবং নারীকে যে নারীত্ব দিয়ে সৃষ্টি করেছেন তাকে তা ধরে রাখাই আল্লাহর বিধান। এটা এমনি এক ব্যবস্থা, যা না হলে মানব জীবন ঠিকঠাক চলবে না। পুরুষের নারীর বেশ ধারণ এবং নারীর পুরুষের বেশ ধারণ স্বভাববিরুদ্ধ কাজ। এর ফলে অশান্তির দুয়ার খুলে যায় এবং সমাজে উচ্ছৃংখলতা ও বেলেল্লাপনা ছড়িয়ে পড়ে। শরী‘আতে এ জাতীয় কাজকে হারাম গণ্য করা হয়েছে। কোন ব্যক্তিকে যে আমল করার দরুন শারঈ দলীলে অভিশাপ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে সেই দলীলই প্রমাণ করে যে উক্ত কাজ হারাম ও কবীরা গুনাহ। ইবনু আববাস (রাঃ) হতে বর্ণিত,

لَعَنَ رَسُولُ اللهِ صَلىَّ اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمُتَشَبِّهِينَ مِنَ الرِّجَالِ بِالنِّسَاءِ، وَالْمُتَشَبِّهَاتِ مِنَ النِّسَاءِ بِالرِّجَالِ-

‘রাসূল (ছাঃ) পুরুষদের মধ্যে নারীর বেশ ধারণকারীদের এবং নারীদের মধ্যে পুরুষের বেশ ধারণকারিণীদের অভিশাপ দিয়েছেন’।[1] ইবনু আববাস (রাঃ) হতে আরও বর্ণিত আছে,

لَعَنَ النَّبِىُّ صَلىَّ اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمُخَنَّثِينَ مِنَ الرِّجَالِ ، وَالْمُتَرَجِّلاَتِ مِنَ النِّسَاءِ

‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নারীবেশী পুরুষদেরকে এবং পুরুষবেশী নারীদেরকে অভিশাপ দিয়েছেন’।[2]

এই অনুকরণ উঠাবসা, চলাফেরা, কথাবার্তা ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। যেমন দৈহিকভাবে মেয়েলী বেশ ধারণ করা, কথাবার্তা ও চলাফেরায় মেয়েলীপনা অবলম্বন করা কিংবা পুরুষের বেশ ধারণ করা ইত্যাদি।

পোশাক ও অলংকার পরিধানেও অনুকরণ রয়েছে। সুতরাং পুরুষের জন্য গলার হার, হাতের চুড়ি, পায়ের মল, কানের দুল পরা চলবে না। অনুরূপভাবে মহিলারাও পুরুষদের জামা, পাজামা, প্যান্ট, শার্ট, পাঞ্জাবী পরতে পারবে না। নারীদের পোশাকের ডিজাইন পুরুষদের থেকে ভিন্নতর হবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,لَعَنَ رَسُولُ اللهِ صَلىَّ اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الرَّجُلَ يَلْبَسُ لِبْسَةَ الْمَرْأَةِ وَالْمَرْأَةَ تَلْبَسُ لِبْسَةَ الرَّجُلِ- ‘আল্লাহ তা‘আলার লা‘নত সেই পুরুষের উপর যে মেয়েলী পোশাক পরিধান করে এবং সেই নারীর উপর, যে পুরুষের পোশাক পরিধান করে’।[3]

সুতরাং উভয়ের কারো জন্যই স্ব স্ব বেশভূষা বদল করা জায়েয হবে না।


[1]. বুখারী; মিশকাত হা/৪৪২৯।

[2]. বুখারী; মিশকাত হা/৪৪২৮।

[3]. আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪৪৬৯।