যে সকল হারামকে মানুষ হালকা মনে করে

চোগলখুরী করা

মানুষের মাঝে ফেতনা-ফাসাদ সৃষ্টি ও সম্পর্কের অবনতি ঘটানোর মানসে একজনের কথা অন্যজনের নিকটে লাগানোকে চোগলখুরী বলে। চোগলখুরীর ফলে মানুষের সম্পর্কে ফাটল ধরে এবং তাদের মাঝে হিংসা-বিদ্বেষ ও শত্রুতার বহ্নিশিখা জ্বলে ওঠে। চোগলখুরীর নিন্দায় আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেন,

وَلاَ تُطِعْ كُلَّ حَلَّافٍ مَهِينٍ - هَمَّازٍ مَّشَّاءٍ بِنَمِيمٍ-

‘যে অধিক শপথ করে, যে লাঞ্ছিত, যে পশ্চাতে নিন্দা করে, একের কথা অন্যের নিকটে লাগায় আপনি তার আনুগত্য করবেন না’ (ক্বলম ১০-১১)

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَتَّاتٌ ‘চোগলখোর ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না’।[1]

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ مَرَّ النَّبِىُّ صَلىَّ اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِحَائِطٍ مِنْ حِيطَانِ الْمَدِينَةِ، فَسَمِعَ صَوْتَ إِنْسَانَيْنِ يُعَذَّبَانِ فِى قُبُورِهِمَا، فَقَالَ النَّبِىُّ صَلىَّ اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : يُعَذَّبَانِ، وَمَا يُعَذَّبَانِ فِى كَبِيرٍ ، ثُمَّ قَالَ : بَلَى، [وَفِىْ رِوَايَةٍ : وَإِنَّهُ لَكَبِيْرٌ] كَانَ أَحَدُهُمَا لاَ يَسْتَتِرُ مِنْ بَوْلِهِ، وَكَانَ الآخَرُ يَمْشِى بِالنَّمِيمَةِ-

ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) একদা মদীনার একটি খেজুর বাগান দিয়ে যাচ্ছিলেন, তথায় তিনি দু’জন লোকের আহাজারী শুনতে পেলেন। তখন তাদেরকে কবরে শাস্তি দেওয়া হচ্ছিল। নবী করীম (ছাঃ) বললেন, ‘এ দু’জনকে আযাব দেওয়া হচ্ছে। তবে বড় কোন কারণে নয়। অবশ্য এগুলি কবীরা গুনাহ। তাদের একজন পেশাব থেকে পবিত্রতা অর্জন করত না। অন্যজন চোগলখুরী করে বেড়াত’।[2]

চোগলখুরীর একটি নিকৃষ্ট প্রক্রিয়া হ’ল, স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে এবং স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীকে ক্ষেপিয়ে তুলে তাদের সম্পর্কে ফাটল ধরানো। অনুরূপভাবে অনেক কর্মজীবি অফিসের বস কিংবা দায়িত্বশীলের নিকট অন্য কোন কর্মজীবির কথা তুলে ধরে। এতে তার উদ্দেশ্য উক্ত কর্মজীবির ক্ষতি সাধন করা এবং নিজেকে উক্ত দায়িত্বশীলের শুভার্থী বা খয়েরখাঁ হিসাবে তুলে ধরা। এসব কাজ চোগলখুরী হিসাবে গণ্য এবং তা হারাম।


[1]. বুখারী, মুসলিম; মিশকাত হা/৪৮২৩।

[2]. বুখারী হা/৬০৫৫, মুসলিম; মিশকাত হা/৬০৭৫।