যে সকল হারামকে মানুষ হালকা মনে করে

পালক সন্তান গ্রহণ ও নিজ সন্তানের পিতৃত্ব অস্বীকার করা

কোন মুসলমানের জন্য স্বীয় পিতা ব্যতীত অন্যকে পিতা বলে পরিচয় দেওয়া শরী‘আতে বৈধ নয়। অনুরূপভাবে এক গোত্রের লোক হয়ে নিজেকে অন্য গোত্রের লোক বলে দাবী করাও জায়েয নয়। বস্ত্তগত স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য অনেকে এভাবে অপরকে নিজের পিতা হিসাবে পরিচয় দিয়ে থাকে। সরকারী তালিকায় তাদের মিথ্যা বংশ পরিচয় তুলে ধরে। শৈশবে যে পিতা তাকে ত্যাগ করেছে তার প্রতি বিদ্বেষবশতঃ অনেকে লালন-পালনকারীকে পিতা বলে ডাকে। কিন্তু এসবই হারাম। এর ফলে নানাক্ষেত্রে বিশৃংখলা দেখা দেয়। যেমন মাহরাম পুরুষ, মীরাছ, বিয়ে-শাদী ইত্যাদির বিধানে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়। হযরত সা‘দ ও আবু বাকরা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হতে বর্ণনা করেন,

مَنِ ادَّعَى إِلَى غَيْرِ أَبِيهِ ، وَهُوَ يَعْلَمُ أَنَّهُ غَيْرُ أَبِيهِ ، فَالْجَنَّةُ عَلَيْهِ حَرَامٌ-

‘জেনে-শুনে যে নিজ পিতা ব্যতীত অন্যকে পিতা বলে পরিচয় দেয়, তার উপর জান্নাত হারাম’।[1]

যে সকল নিয়ম ও কাজ বংশকে অর্থহীন করে তোলে কিংবা মিথ্যা সাব্যস্ত করে শরী‘আতে এগুলি সবই হারাম। কেউ আছে, স্ত্রীর সাথে ঝগড়া বাঁধলে একেবারে দিশাহীন হয়ে তার বিরুদ্ধে যিনার অপবাদ আনয়ন করে এবং কোন প্রমাণ ছাড়াই নিজ সন্তানের পরিচয় অস্বীকার করে; অথচ সে ভালমতই জানে যে, সন্তানটি তারই ঔরসে জন্ম নিয়েছে। আবার অনেক মহিলা আছে, যারা স্বামীর আমানতের খেয়ানত করে অন্যের দ্বারা গর্ভবতী হয় এবং সেই জারজকে স্বামীর বৈধ সন্তান হিসাবে তার বংশভুক্ত করে দেয়। এসবই হারাম। এ বিষয়ে কঠোর তিরস্কার উচ্চারিত হয়েছে। লি‘আনের আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,

أَيُّمَا امْرَأَةٍ أَدْخَلَتْ عَلَى قَوْمٍ مَنْ لَيْسَ مِنْهُمْ فَلَيْسَتْ مِنَ اللهِ فِى شَىْءٍ وَلَنْ يُدْخِلَهَا اللهُ جَنَّتَهُ وَأَيُّمَا رَجُلٍ جَحَدَ وَلَدَهُ وَهُوَ يَنْظُرُ إِلَيْهِ احْتَجَبَ اللهُ مِنْهُ وَفَضَحَهُ عَلَى رُءُوسِ الأَوَّلِينَ وَالآخِرِينَ-

‘যে মহিলা কোন সন্তানকে এমন কোন গোত্রভুক্ত করে দেয় যে আসলে ঐ গোত্রভুক্ত নয়, আল্লাহর নিকট তার কোনই মূল্য নেই এবং আল্লাহ তাকে কখনই জান্নাতে প্রবেশ করাবেন না। আর যে পুরুষ জেনে-শুনে নিজ সন্তানের পিতৃত্ব অস্বীকার করবে আল্লাহ তার থেকে পর্দা করে নিবেন এবং পূর্ববর্তী-পরবর্তী সকল লোকের সামনে তাকে অপদস্থ করবেন’।[2]



[1]. বুখারী, মুসলিম; মিশকাত হা/৩৩১৪।

[2]. আবুদাঊদ হা/২২৬৩; মিশকাত হা/৩৩১৬, সনদ যঈফ।