হিংসা ও অহংকার

অহংকার দূরীকরণের উপায় সমূহ

অহংকার মানুষের ভিতরে লুক্কায়িত একটা বিষের নাম। একে নিশ্চিহ্ন করা যাবে না। কিন্তু একে দমিয়ে রাখতে হবে, যেন মাথা উঁচু করতে না পারে। যেমন ঝাড়িয়ে সাপের বিষ নামাতে হয়। মনের মধ্যে এই বিষ-এর এর উদয় হ’লেই বুদ্বুদের মত একে হাওয়া করে দিতে হবে। তাই অহংকার দূরীকরণের জন্য কেবল আকাংখাই যথেষ্ট নয়, বরং এ রোগের রীতিমত চিকিৎসা ও প্রতিষেধক প্রয়োজন। নিম্নে এ বিষয়ে বর্ণিত হ’ল।-

১. নিজের সৃষ্টি ও মৃত্যুর কথা সর্বদা স্মরণ করা :

মানুষ তার জন্মের সময় উল্লেখযোগ্য কিছুই ছিল না (দাহর ৭৬/১)। মৃত্যুর পর সে লাশে পরিণত হবে। আর মৃত্যুর ঘণ্টা সর্বদা তার মাথার উপর ঝুলে আছে। হুকুম হলেই তা বেজে উঠবে এবং তার রূহ যার হুকুমে তার দেহে এসেছিল তার কাছেই চলে যাবে। তার প্রাণহীন অসাড় দেহটা পড়ে থাকবে দুনিয়ায় পোকার খোরাক হবার জন্য।

আল্লাহ বলেন,

أَوَلَمْ يَرَ الْإِنْسَانُ أَنَّا خَلَقْنَاهُ مِنْ نُطْفَةٍ فَإِذَا هُوَ خَصِيمٌ مُبِينٌ- وَضَرَبَ لَنَا مَثَلاً وَنَسِيَ خَلْقَهُ قَالَ مَنْ يُحْيِ الْعِظَامَ وَهِيَ رَمِيمٌ- قُلْ يُحْيِيهَا الَّذِي أَنْشَأَهَا أَوَّلَ مَرَّةٍ وَهُوَ بِكُلِّ خَلْقٍ عَلِيمٌ -

‘মানুষ কি দেখে না যে, আমরা তাকে সৃষ্টি করেছি একটি শুক্রাণু হ’তে? অথচ সে এখন হয়ে পড়েছে প্রকাশ্যে বিতর্ককারী’। ‘মানুষ আমাদের সম্পর্কে নানা উপমা দেয়। অথচ সে নিজের সৃষ্টি সম্পর্কে ভুলে যায়। আর বলে, কে এই পচা-গলা হাড়-হাড্ডিকে পুনর্জীবিত করবে’? ‘তুমি বলে দাও, ওকে পুনর্জীবিত করবেন তিনি, যিনি ওটাকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলেন। বস্ত্ততঃ তিনি সকল সৃষ্টি সম্পর্কে সম্যক অবহিত’ (ইয়াসীন ৩৬/৭৭-৭৯)।

তিনি বলেন, أَيْنَمَا تَكُونُوا يُدْرِكْكُمُ الْمَوْتُ وَلَوْ كُنْتُمْ فِي بُرُوجٍ مُشَيَّدَةٍ ‘যেখানেই তোমরা থাক না কেন, মৃত্যু তোমাদেরকে গ্রাস করবেই। যদিও তোমরা সুদৃঢ় দুর্গের মধ্যে অবস্থান কর’ (নিসা ৪/৭৮)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, أَكْثِرُوا ذِكْرَ هَاذِمِ اللَّذَّاتِ يَعْنِى الْمَوْتَ ‘তোমরা স্বাদ ধ্বংসকারী বস্ত্তকে বেশী বেশী স্মরণ কর’ অর্থাৎ মৃত্যুকে।[1]

অতএব মানুষের জন্য অহংকার করার মত কিছু নেই। কেননা সে তার রোগ-শোক. বার্ধক্য-জ্বরা কিছুকেই প্রতিরোধ করতে পারে না। শতবার ঔষধ খেলেও আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত তার রোগ সারে না। শত চেষ্টাতেও আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত তার বিপদ দূরীভূত হয় না। ফলে সে একজন অসহায় ব্যক্তি ছাড়া কিছুই নয়। সুতরাং তার উচিত সর্বদা নিরহংকার ও বিনয়ী থাকা।

২. আখেরাতে জওয়াবদিহিতার ভয়ে ভীত হওয়া :

ক্বিয়ামতের দিন প্রত্যেকের আমলনামা তার হাতে দিয়ে আল্লাহ বলবেন,اقْرَأْ كِتَابَكَ كَفَى بِنَفْسِكَ الْيَوْمَ عَلَيْكَ حَسِيبًا ‘তোমার আমলনামা তুমি পাঠ কর। আজ তোমার হিসাব নেওয়ার জন্য তুমিই যথেষ্ট’ (ইসরা ১৭/১৪)। অতঃপর যখন তারা স্ব স্ব আমলনামা দেখবে, তখন সে সময়কার অবস্থা সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,

وَوُضِعَ الْكِتَابُ فَتَرَى الْمُجْرِمِينَ مُشْفِقِينَ مِمَّا فِيهِ وَيَقُولُونَ يَا وَيْلَتَنَا مَالِ هَذَا الْكِتَابِ لاَ يُغَادِرُ صَغِيرَةً وَلاَ كَبِيرَةً إِلاَّ أَحْصَاهَا وَوَجَدُوا مَا عَمِلُوا حَاضِرًا وَلاَ يَظْلِمُ رَبُّكَ أَحَدًا-

‘সেদিন উপস্থিত করা হবে প্রত্যেকের আমলনামা। অতঃপর তাতে যা আছে তার কারণে তুমি অপরাধীদের দেখবে আতংকিত। এ সময় তারা বলবে, হায় দুর্ভোগ আমাদের! এটা কেমন আমলনামা যে, ছোট-বড় কিছুই বাদ দেয়নি, সবকিছুই লিখে রেখেছে। তারা তাদের কৃতকর্ম সমূহকে সম্মুখে উপস্থিত দেখতে পাবে। বস্ত্ততঃ তোমার প্রতিপালক কারু প্রতি যুলুম করেন না’ (কাহফ ১৮/৪৯)।

অর্থাৎ আল্লাহ যাকে যে নে‘মত দিয়েছেন ও দুনিয়াবী দায়িত্ব প্রদান করেছেন, আল্লাহর নিকটে তার যথাযথ জওয়াবদিহিতার কথা সর্বদা স্মরণ করতে হবে এবং কিভাবে সে দায়িত্ব আরও সুন্দরভাবে পালন করা যায়, তার জন্য সর্বদা চেষ্টিত থাকতে হবে। কেননা আল্লাহ মানুষের হায়াত ও মঊত সৃষ্টি করেছেন, কে তাদের মধ্যে সুন্দরতম আমল করে, সেটা পরীক্ষা করার জন্য’ (মুল্ক ৬৭/২)। অতএব এই তীব্র দায়িত্বানুভূতি তাকে অহংকারের পাপ হ’তে মুক্ত রাখবে ইনশাআল্লাহ। أَحْسَنَ عَمَلاً ‘সুন্দরতম আমল’ অর্থ ‘শরী‘আতের আলোকে সর্বাধিক শুদ্ধ আমল এবং অন্তরের দিক দিয়ে সর্বাধিক বিশুদ্ধ কর্ম। যা স্রেফ আল্লাহর জন্য নিবেদিত এবং সকল প্রকার রিয়া ও শ্রুতি হ’তে মুক্ত’। উল্লেখ্য যে, এখানে أَكَثَرَ عَمَلاً ‘অধিক আমল’  বলা হয়নি। অতএব শিরক বিমুক্ত এবং ছহীহ সুন্নাহ অনুমোদিত সৎকর্ম সংখ্যায় ও পরিমাণে অল্প হ’লেও তাই-ই ‘সুন্দরতম আমল’ হিসাবে আল্লাহর নিকটে গ্রহণীয় হবে।

(ক) হযরত ওমর (রাঃ) খেলাফতের দায়িত্বে (১৩-২৩/৬৩৪-৬৪৩ খৃঃ) থাকা অবস্থায় বলতেন, لَوْ مَاتَتْ سَخْلَةٌ عَلَى شَاطِئِ الْفُرَاتِ ضَيْعَةً لَخِفْتُ أَنْ أُسْأَلَ عَنْهَا ‘যদি ফোরাত নদীর কূলে একটি ভেড়ার বাচ্চাও হারানো অবস্থায় মারা যায়, তাতে আমি ভীত হই যে, সেজন্য আমাকে কিয়ামতের দিন জিজ্ঞাসিত হ’তে হবে’।[2]

(খ) খলীফা হারূনুর রশীদ (১৭০-১৯৩ হিঃ), যিনি প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ব্যাপী বিশাল ইসলামী খেলাফতের অধিকারী ছিলেন, তিনি একদিন রাস্তায় চলছিলেন। এমন সময় জনৈক ইহূদী তার সাথে সাক্ষাৎ করল। সে তাকে বলল, ‘হে আমীরুল মুমিনীন! আল্লাহকে ভয় করুন’। তখন খলীফা ঘোড়া থেকে নামলেন ও মাটিতে সিজদা করলেন। অতঃপর ইহূদীটিকে বললেন, তোমার প্রয়োজন কি বল? সে বলল এবং তিনি তার প্রয়োজন মিটালেন। অতঃপর যখন তাকে বলা হ’ল, আপনি একজন ইহূদীর জন্য সওয়ারী থেকে নামলেন? জবাবে তিনি বললেন, তার কথা শুনে আমার নিম্নোক্ত আয়াতটি স্মরণ হ’ল, যেখানে আল্লাহ বলেছেন,وَإِذَا قِيلَ لَهُ اتَّقِ اللهَ أَخَذَتْهُ الْعِزَّةُ بِالْإِثْمِ فَحَسْبُهُ جَهَنَّمُ وَلَبِئْسَ الْمِهَادُ ‘যখন তাকে বলা হয় ‘আল্লাহকে ভয় কর’ তখন তার আত্মসম্মান তাকে পাপে স্ফীত করে তোলে। অতএব তার জন্য জাহান্নামই যথেষ্ট। আর অবশ্যই তা নিকৃষ্টতম ঠিকানা’।[3]

একজন সাধারণ ইহূদী প্রজার সাথে ক্ষমতাধর খলীফা হারূণ যদি এরূপ নম্র আচরণ করতে পারেন, তাহ’লে অন্যদের সাথে তিনি কেমন নিরহংকার আচরণ করতেন, সেটা সহজে অনুমেয়। এই ঘটনায় ইসলামী খেলাফতে অমুসলিম নাগরিকদের প্রতি সর্বোত্তম সদাচরণের প্রমাণ পাওয়া যায়। যা কথিত গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রগুলিতে মুসলমানদের প্রতি কল্পনাও করা যায় না।

৩. নিজেকে জানা ও আল্লাহকে জানা :

প্রথমেই নিজের সৃষ্টি সম্পর্কে জানতে হবে যে, প্রাণহীন শুক্রাণু থেকে সে জীবন পেয়েছে। আবার সে মারা যাবে। অতএব তার কোন অহংকার নেই। অতঃপর আল্লাহ সম্পর্কে জানবে যে, তিনিই তাকে অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বে এনেছেন। তিনিই তাকে শক্তি দিয়ে মেধা দিয়ে পূর্ণ-পরিণত মানুষে পরিণত করেছেন। তাঁর দয়ায় তার সবকিছু। অতএব প্রতি পদে পদে আল্লাহর দাসত্ব ব্যতীত তার কিছুই করার নেই। আল্লাহ বলেন, وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلاَّ لِيَعْبُدُونِ ‘আমি জিন ও ইনসান  সৃষ্টি করেছি কেবলমাত্র আমার দাসত্ব করার জন্য’ (যারিয়াত ৫১/৫৬)। অতএব নিজেকে সর্বদা আল্লাহর দাস মনে করার মধ্যেই লুকিয়ে আছে অহংকার দূর করার প্রধান ঔষধ।

৪. যেসব বিষয় মনের মধ্যে অহংকার সৃষ্টি করে, সেগুলিকে তুচ্ছ মনে করা : যেমন বংশের অহংকার, ধনের অহংকার, পদমর্যাদার অহংকার, বিশেষ কোন নে‘মতের অহংকার। এগুলি সবই আল্লাহর দান। তিনি যেকোন সময় এগুলি ফিরিয়ে নিতে পারেন। আমরা হর-হামেশা এগুলো দেখতে পাচ্ছি যে, বহু জ্বালাময়ী বক্তা সুস্থ থেকেও নির্বাক হয়ে আছেন, বহু লেখক লুলা হয়ে গেছেন, বহু ধনী নিঃস্ব হয়েছেন, বহু নেতা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন। বহু শক্তিমান পুরুষ প্যারালাইজড হয়ে বা স্ট্রোক হয়ে বা বার্ধক্যে জরজর হয়ে বিছানায় পড়ে আছেন। তাদের অসহায় চেহারাগুলি চিন্তা করলেই নিজের মধ্য থেকে অহংকার নিমেষে হারিয়ে যাবে।

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,انْظُرُوا إِلَى مَنْ أَسْفَلَ مِنْكُمْ وَلاَ تَنْظُرُوا إِلَى مَنْ هُوَ فَوْقَكُمْ فَهُوَ أَجْدَرُ أَنْ لاَ تَزْدَرُوا نِعْمَةَ اللهِ عَلَيْكُمْ (যদি তুমি সুখী হতে চাও), তাহ’লে যে ব্যক্তি তোমার চেয়ে নীচু, তার দিকে তাকাও। কখনো উপরের দিকে তাকিয়ো না। তাহ’লে তোমাকে দেওয়া আল্লাহর নে‘মত সমূহকে তুমি হীন মনে করবে না’।[4] অহংকার দূরীকরণে এটি একটি মহৌষধ।

৫. ইচ্ছাকৃতভাবে হীনকর কাজ করা :

হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন,

كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْصِفُ نَعْلَهُ وَيَخِيطُ ثَوْبَهُ وَيَعْمَلُ فِى بَيْتِهِ كَمَا يَعْمَلُ أَحَدُكُمْ فِى بَيْتِهِ وقالت : كَانَ بَشَراً مِنَ الْبَشَرِ يَفْلِى ثَوْبَهُ وَيَحْلُبُ شَاتَهُ وَيَخْدُمُ نَفْسَهُ-

‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নিজের জুতা নিজে ছাফ করতেন, কাপড় সেলাই করতেন ও বাড়ির নানাবিধ কাজ করতেন, যেমন তোমরা করে থাক। তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) অন্যান্য মানুষের ন্যায় একজন মানুষ ছিলেন। তিনি কাপড়ের উকুন বাছতেন, ছাগী দোহন করতেন এবং নিজের অন্যান্য কাজ করতেন।[5] মসজিদে নববী নির্মাণের সময়, খন্দকের যুদ্ধে পরিখা খননের সময় তিনি নিজে মাটি কেটেছেন ও পাথর বহন করেছেন। বিভিন্ন সফরে তিনি ছাহাবীদের সঙ্গে বিভিন্ন কাজে অংশ নিয়েছেন।

তাঁর অনুসরণে ছাহাবায়ে কেরামও এরূপ করতেন। যেমন আব্দুল্লাহ বিন সালাম (রাঃ) একদিন কাঠের বোঝা মাথায় নিয়ে বাজার অতিক্রম করছিলেন। এ দৃশ্য দেখে জনৈক ব্যক্তি বললেন, হে আব্দুল্লাহ! আল্লাহ কি আপনাকে এ কাজ করা থেকে মুখাপেক্ষীহীন করেননি? (অর্থাৎ আপনার তো যথেষ্ট পরিমাণ সম্পদ রয়েছে! আপনি কেন একাজ করছেন?) জবাবে তিনি বললেন, بَليَ، وَلَكِن أَرَدْتُ أَنْ أَدْفَعَ الْكِبْرَ ‘হ্যাঁ! কিন্তু আমি এ কাজের মাধ্যমে আমার অহংকার দূর করতে চাই। কেননা আমি রাসূল (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, ‘যার অন্তরে কণা পরিমাণ অহংকার রয়েছে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না’।[6]

অতএব সাধ্যে কুলায় এমন যেকোন হীনকর কাজ করার মানসিকতা অর্জন করতে পারলে মনের মধ্য থেকে সহজে অহংকার দূর হয়ে যাবে। যেমন আপনি অফিসের বস। টেবিলের ধূলা নিজে মুছলেন, মাকড়সার জালগুলো নিজে দূর করলেন, প্রয়োজনে টয়লেট ছাফ করলেন, এমনকি ঘরটা ঝাড়ু দিলেন। এসব ছোটখাট কাজ হলেও এগুলির মাধ্যমে অহংকার দূর হয়। সঙ্গে সঙ্গে অন্যের নিকট সম্মান বৃদ্ধি পায়। সর্বোপরি নিজের কাজ নিজে করায় রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাত অনুসরণের ছওয়াব পাওয়া যায়। লোকেরা আপনাকে সামনে নিয়ে মিছিল করতে চায়, আপনার ছবি তুলতে চায়, আপনার নামে প্রশংসামূলক শ্লোগান দিতে চায়, আপনার সামনে আপনার নামে অভিনন্দন পত্র পাঠ করতে চায়, আপনি সুযোগ দিবেন না অথবা এড়িয়ে যাবেন।

৬. আল্লাহ সবকিছু দেখছেন ও শুনছেন, সবসময় একথা মনে রাখা :

আল্লাহ বলেন, إِذْ يَتَلَقَّى الْمُتَلَقِّيَانِ عَنِ الْيَمِينِ وَعَنِ الشِّمَالِ قَعِيدٌ- مَا يَلْفِظُ مِنْ قَوْلٍ إِلاَّ لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ ‘মনে রেখ দু’জন গ্রহণকারী ফেরেশতা মানুষের ডানে ও বামে বসে সর্বদা তার কর্ম লিপিবদ্ধ করে’। ‘সে মুখে যে কথাই উচ্চারণ করে তা লিপিবদ্ধ করার জন্য সদা তৎপর প্রহরী তার নিকটেই অবস্থান করে’ (ক্বাফ ৫০/১৭-১৮)।

হাদীছে জিব্রীলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, أَنْ تَعْبُدَ اللهَ كَأَنَّكَ تَرَاهُ ، فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ فَإِنَّهُ يَرَاكَ তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদত কর, যেন তুমি তাকে দেখছ। যদি তা না পারো, তবে এমনভাবে যেন তিনি তোমাকে দেখছেন’।[7]

৭. গরীব ও ইয়াতীমদের সঙ্গে থাকা ও রোগীর সেবা করা :

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, তোমরা আমাকে দুর্বলদের মধ্যে তালাশ কর’।[8] অর্থাৎ তাদের প্রতি সদাচরণের মাধ্যমে আমার সন্তুষ্টি অন্বেষণ কর। জনৈক ব্যক্তি রাসূল (ছাঃ)-কে তার অন্তর কঠিন হওয়ার অভিযোগ পেশ করলে তিনি তাকে বললেন, امْسَحْ رَأْسَ الْيَتِيمِ وَأَطْعِمِ الْمِسْكِينَ ‘তুমি ইয়াতীমের মাথায় হাত বুলাও এবং অভাবগ্রস্তকে খাদ্য দান কর।[9] তিনি বলেন,إِنَّ الْمُسْلِمَ إِذَا عَادَ أَخَاهُ الْمُسْلِمَ لَمْ يَزَلْ فِى خُرْفَةِ الْجَنَّةِ حَتَّى يَرْجِعَ একজন মুসলমান যখন অন্য একজন মুসলমান রোগীর সেবা করে, তখন সে জান্নাতের বাগিচায় অবস্থান করে, যতক্ষণ না সে ফিরে আসে’।[10] তিনি বলেন, কিয়ামতের দিন আল্লাহ বলবেন, হে আদম সন্তান! আমি পীড়িত ছিলাম। কিন্তু তুমি আমার সেবা করোনি। বান্দা বলবে, হে আমার প্রতিপালক! কিভাবে আমি আপনার সেবা করব? অথচ আপনি বিশ্বচরাচরের পালনকর্তা। তখন আল্লাহ বলবেন, তুমি কি জানতে না যে, আমার অমুক বান্দা পীড়িত ছিল, অথচ তুমি তার সেবা করোনি? যদি তুমি তাকে সেবা করতে, তাহ’লে তুমি আমাকে সেখানে পেতে’।[11]

বস্ত্ততঃ যেকোন সেবামূলক কাজ যদি নিঃস্বার্থ হয় এবং পরকালীন লক্ষ্যে হয়, তবে সেগুলি অহংকার চূর্ণ করার মহৌষধ হিসাবে আল্লাহর নিকটে গৃহীত হয় এবং বান্দা জাহান্নাম থেকে বেঁচে যায়। যেমন আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, জনৈক তৃষ্ণার্ত ব্যক্তি মরুভূমিতে একটি কূয়ায় নেমে পানি পান শেষে উঠে দেখেন যে, একটি তৃষ্ণার্ত কুকুর পিপাসায় মরণাপন্ন হয়ে জিভ বের করে মাটিতে মুখ ঘষছে। তখন লোকটি পুনরায় কূয়ায় নেমে নিজের চামড়ার মোযা ভরে পানি এনে কুকুরটিকে পান করান এবং আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেন। ফলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন এবং তাকে জান্নাতে প্রবেশ করান’। অন্য বর্ণনায় এসেছে বনু ইস্রাঈলের জনৈকা বেশ্যা মহিলা একটি কুকুরকে তৃষ্ণার্ত অবস্থায় কূয়ার চারপাশে ঘুরতে দেখে নিজের ওড়নায় মোযা বেঁধে কূয়া থেকে পানি তুলে তাকে পান করায়। ফলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন’।[12] 

৮. নিজের সৎকর্মগুলি আল্লাহর নিকটে কবুল হচ্ছে কি-না সেই ভয়ে সর্বদা ভীত থাকা :

হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে নিম্নোক্ত আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম, وَالَّذِينَ يُؤْتُونَ مَا آتَوْا وَقُلُوبُهُمْ وَجِلَةٌ أَنَّهُمْ إِلَى رَبِّهِمْ رَاجِعُونَ- أُولَئِكَ يُسَارِعُونَ فِي الْخَيْرَاتِ وَهُمْ لَهَا سَابِقُونَ ‘আর যারা তাদের যা দান করার তা দান করে ভীত-কম্পিত অন্তরে। এজন্য যে, তারা তাদের প্রতিপালকের কাছে ফিরে যাবে’। ‘তারা দ্রুত সম্পাদন করে তাদের সৎকর্ম সমূহ এবং তারা সেদিকে অগ্রগামী হয়’ (মুমিনূন ২৩/৬০-৬১)। আমি বললাম, এরা কি তারাই যারা মদ্যপান করে ও চুরি করে? তিনি বললেন,

لاَ يَا بِنْتَ الصِّدِّيقِ وَلَكِنَّهُمُ الَّذِينَ يَصُومُونَ وَيُصَلُّونَ وَيَتَصَدَّقُونَ وَهُمْ يَخَافُونَ أَنْ لاَ يُقْبَلَ مِنْهُمْ أُولَئِكَ الَّذِينَ يُسَارِعُونَ فِى الْخَيْرَاتِ وَهُمْ لَهَا سَابِقُونَ-

‘না হে ছিদ্দীকের কন্যা! বরং এরা হ’ল তারাই যারা ছিয়াম রাখে, ছালাত আদায় করে ও ছাদাক্বা করে এবং তারা সর্বদা ভীত থাকে এ ব্যাপারে যে, তাদের উক্ত নেক আমলগুলি কবুল হচ্ছে কি-না। তারাই সৎকর্ম সমূহের প্রতি দ্রুত ধাবমান হয়’।[13]

৯. ভুলক্রমে বা উত্তেজনা বশে অহংকার প্রকাশ পেলে সাথে সাথে বান্দার কাছে, অতঃপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া :

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,مَنْ كَانَتْ لَهُ مَظْلَمَةٌ لأَحَدٍ مِنْ عِرْضِهِ أَوْ شَىْءٍ فَلْيَتَحَلَّلْهُ مِنْهُ الْيَوْمَ، قَبْلَ أَنْ لاَ يَكُونَ دِينَارٌ وَلاَ دِرْهَمٌ، ‘যদি কেউ তার ভাইয়ের সম্মানহানি করে বা অন্য কোন বস্ত্তর ব্যাপারে তার প্রতি যুলুম করে, তবে সে যেন তা আজই মিটিয়ে নেয়। সেদিন আসার আগে, যেদিন কোন দীনার ও দিরহাম তার সঙ্গে থাকবে না...।[14]

অন্যতম জ্যেষ্ঠ তাবেঈ মুত্বার্রিফ বিন আব্দুল্লাহ (মৃঃ ৯৫ হিঃ) হাজ্জাজ বিন ইউসুফের পক্ষ হ’তে নিযুক্ত খোরাসানের গভর্ণর মুহাল্লাব বিন আবূ ছুফরাকে একদিন দেখলেন রাস্তা দিয়ে খুব জাঁক-জমকের সাথে যেতে। তিনি সামনে গিয়ে বললেন, হে আল্লাহর বান্দা! কিভাবে তুমি রাস্তায় চলছ, যা আল্লাহকে ক্রুদ্ধ করে? একথা শুনে মুহাল্লাব বললেন, আপনি কি আমাকে চিনেন? তাবেঈ বিদ্বান বললেন, نعم، أَوَّلُكَ نُطْفَةٌ مَذِرَةٌ، وَآخِرُكَ جِيفَةٌ قَذِرَةٌ، وَأَنْتَ فِيمَا بَيْنَ ذَلِكَ تَحْمِلُ الْعَذِرَةَ ‘অবশ্যই চিনি। তোমার শুরু হ’ল একটি নিকৃষ্ট শুক্রাণু থেকে এবং শেষ হ’ল একটি মরা লাশ হিসাবে। আর তুমি এর মধ্যবর্তী সময়ে বহন করে চলেছ পায়খানার ময়লা’। একথা শুনে মুহাল্লাব জাঁক-জমক ছেড়ে সাধারণভাবে চলে গেলেন।[15]

১০. অহংকারী পোষাক ও চাল-চলন পরিহার করা :

পোষাক স্বাভাবিক ও সুন্দর এবং পরিচ্ছন্ন হ’তে হবে। কেননা আল্লাহ সুন্দর, তিনি সৌন্দর্য পসন্দ করেন’[16] এবং তিনি বান্দার উপর তাঁর নে‘মতের নিদর্শন দেখতে ভালবাসেন’।[17] কিন্তু স্বাভাবিক পোষাকের বাইরে অপ্রয়োজনে আড়ম্বরপূর্ণ কোন পোষাক পরিধান করা ‘রিয়া’-র পর্যায়ে পড়ে যাবে। যা কবীরা গোনাহের অন্তর্ভুক্ত। যাতে অনেকে ফেৎনায় পড়েন ও তার মধ্যে অহংকার সৃষ্টি হয়। অনেক মসজিদে বিশেষ মুছল্লীদের জন্য বিশেষ স্থান ও জায়নামায দেখা যায়। এমনকি কারু জন্য বিশেষ দরজাও নির্দিষ্ট থাকে। যেগুলি নিঃসন্দেহে অহংকারের পর্যায়ভুক্ত।

১১. গোপন আমল করা :

নিরহংকার ও রিয়ামুক্ত হওয়ার অন্যতম পন্থা হ’ল গোপন আমল করা। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,

سَبْعَةٌ يُظِلُّهُمُ اللهُ تَعَالَى فِى ظِلِّهِ يَوْمَ لاَ ظِلَّ إِلاَّ ظِلُّهُ ... وَرَجُلٌ تَصَدَّقَ بِصَدَقَةٍ  فَأَخْفَاهَا حَتَّى لاَ تَعْلَمَ شِمَالُهُ مَا تُنْفِقُ يَمِينُهُ، وَرَجُلٌ ذَكَرَ اللهَ خَالِيًا فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ-

‘কিয়ামতের দিন সাত শ্রেণীর লোক আল্লাহর আরশের নীচে ছায়া পাবে, যেদিন তাঁর ছায়া ব্যতীত কোন ছায়া থাকবে না। তাদের মধ্যে একজন হ’ল ঐ ব্যক্তি ... যে গোপনে ছাদাক্বা করে এমনভাবে যে ডান হাত যা ব্যয় করে, বাম হাত তা জানতে পারে না এবং ঐ ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে, অতঃপর দু’চোখ বেয়ে অবিরল ধারে অশ্রু প্রবাহিত হয়’।[18]

এজন্য তাহাজ্জুদের ছালাত রাত্রির শেষ প্রহরে একাকী নিরিবিলি পড়তে বলা হয়েছে (মুযযাম্মিল ৭৩/২-৩, ২০)।  

১২. আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন করা :

যদি কেউ আল্লাহর ভয়ে কাঁদতে পারে, তবে তার চোখের পানিতে অহংকার ধুয়ে-মুছে ছাফ হয়ে যাবে। আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, لاَ يَلِجُ النَّارَ رَجُلٌ بَكَى مِنْ خَشْيَةِ اللهِ حَتَّى يَعُودَ اللَّبَنُ فِى الضَّرْعِ ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর ভয়ে কাঁদে, সে ব্যক্তি জাহান্নামে যাবে না। যেমন দুধ পুনরায় পালানে প্রবেশ করে না’।[19] তিনি বলেন, যার হাতে আমার জীবন তার কসম করে বলছি, আমি যা জানি তোমরা যদি তা জানতে, তাহ’লে তোমরা কাঁদতে বেশী, হাসতে কম।[20] তিনি বলেন, আল্লাহর কসম আমি জানি না। আল্লাহর কসম আমি জানিনা। অথচ আমি আল্লাহর রাসূল; কি হবে সেদিন আমার ও কি হবে সেদিন তোমাদের’।[21] হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, তোমরা তোমাদের অনেক পাপকে চুলের চাইতে সূক্ষ্ম মনে কর। অথচ রাসূল (ছাঃ)-এর যামানায় আমরা সেগুলিকে ধ্বংসকারী মনে করতাম’।[22] এক্ষণে অহংকারের মত মহাপাপ হৃদয়ে জাগ্রত হ’লে সেটাকে দ্রুত দমন করতে হবে, যা সহজেই অনুমেয়।

১৩. মানুষকে ক্ষমা করা ও সর্বদা নম্রতা অবলম্বন করা :

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, مَا زَادَ اللهُ عَبْدًا بِعَفْوٍ إِلاَّ عِزًّا وَمَا تَوَاضَعَ أَحَدٌ لِلَّهِ إِلاَّ رَفَعَهُ اللهُ ‘বান্দা কাউকে ক্ষমা করলে আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। আর যখন সে কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বিনয় অবলম্বন করে, তখন তিনি তার মর্যাদাকে সমুন্নত করেন’।[23] তিনি বলেন,إِنَّ الرِّفْقَ لاَ يَكُونُ فِى شَىْءٍ إِلاَّ زَانَهُ وَلاَ يُنْزَعُ مِنْ شَىْءٍ إِلاَّ شَانَهُ ‘কোন বস্ত্ততে নম্রতা থাকলে সেটি তার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে এবং তা প্রত্যাহার করা হ’লে সেটি দোষযুক্ত হয়ে পড়ে’।[24]

এর দ্বারা বুঝা যায় যে, বিনয় ও আনুগত্য মানুষকে উঁচু ও সম্মানিত করে। পক্ষান্তরে অহংকার ও আত্মগর্ব মানুষকে নীচু ও লাঞ্ছিত করে।

১৪. নিরহংকার হওয়ার জন্য আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করা :

অহংকার থেকে মুক্ত থাকার জন্য নিম্নের দো‘আটি পাঠ করা যেতে পারে।-

اللهُ أَكْبَرُ كَبِيراً وَالْحَمْدُ لِلَّهِ كَثِيراً وَسَبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ بُكْرَةً وَأَصِيلاً- اللَّهُمَّ إِنِّى أَعُوذُ بِكَ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ مِِنْ هَمْزِهِ وَنَفْخِهِ وَنَفْثِهِ-

অর্থ : আল্লাহ সর্বোচ্চ, আল্লাহর জন্য যাবতীয় প্রশংসা, সকালে ও সন্ধ্যায় তাঁর প্রশংসাসহ আল্লাহর জন্য সকল পবিত্রতা। আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি বিতাড়িত শয়তান হ’তে এবং তার প্ররোচনা, তার ফুঁক ও তার কুমন্ত্রণা হ’তে। উক্ত হাদীছে نَفْخُهُ বা ‘শয়তানের ফুঁক’-এর অর্থ সম্পর্কে রাবী ‘আমর বিন মুর্রা বলেন, সেটা হ’ল الْكِبْرُ অর্থাৎ ‘অহংকার’।[25]

এছাড়াও সূরা ফালাক্ব ও নাস পড়া উচিৎ। কেননা রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘কোন প্রার্থনাকারী প্রার্থনা করতে পারে না এবং কোন আশ্রয়প্রার্থী আশ্রয় চাইতে পারে না এ দু’টি সূরার তুলনায় অন্য কিছুর মাধ্যমে’।[26]


[1]. তিরমিযী হা/২৩০৭, মিশকাত হা/১৬০৭।

[2]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান হা/৭৪১৫, তারীখু ত্বাবারী ৪/২০২; সনদ হাসান লিগাইরিহী।

[3]. কুরতুবী, সূরা বাক্বারাহ ২০৬ আয়াতের তাফসীর দ্রষ্টব্য।

[4]. বুখারী হা/৬৪৯০, মুসলিম হা/২৯৬৩, মিশকাত হা/৫২৪২।

[5]. বুখারী হা/৬৭৬; আহমাদ হা/২৫৩৮০, ২৬২৩৭, মিশকাত হা/৫৮২২।

[6]. ত্বাবারাণী হা/৩৬৩; সিলসিলা ছহীহাহ হা/৩২৫৭।

[7]. বুখারী হা/৫০, মুসলিম হা/৮, মিশকাত হা/২।

[8]. আবুদাঊদ হা/২৫৯৪; ছহীহাহ হা/৭৭৯; মিশকাত হা/৫২৪৬।

[9]. আহমাদ, ত্বাবারাণী; ছহীহাহ হা/৮৫৪; মিশকাত হা/৫০০১।

[10]. মুসলিম হা/২৫৬৮, মিশকাত হা/১৫২৭।

[11]. মুসলিম হা/২৫৬৯, মিশকাত হা/১৫২৮।

[12]. বুখারী হা/৩৪৬৭; মুসলিম হা/২২৪৪।

[13]. তিরমিযী হা/৩১৭৫; ছহীহাহ হা/১৬২; মিশকাত হা/৫৩৫০ ‘ক্রন্দন ও আল্লাহভীতি’ অনুচ্ছেদ।

[14]. বুখারী হা/২৪৪৯; মিশকাত হা/৫১২৬ ‘যুলুম’ অনুচ্ছেদ।

[15]. কুরতুবী, তাফসীর সূরা মা‘আরিজ ৩৯ আয়াত।

[16]. মুসলিম হা/৯১, মিশকাত হা/৫১০৮।

[17]. তিরমিযী হা/২৮১৯, আহমাদ হা/১৯৯৪৮; মিশকাত হা/৪৩৫০, ৪৩৭৯।

[18]. বুখারী হা/১৪২৩, মুসলিম হা/১০৩১; মিশকাত হা/৭০১।

[19]. তিরমিযী হা/১৭৩৩; মিশকাত হা/৩৮২৮।

[20]. বুখারী হা/৬৬৩১; মিশকাত হা/৫৩৩৯।

[21]. বুখারী হা/৩৯১৯; মিশকাত হা/৫৩৪০।

[22]. বুখারী হা/৬৪৯২; মিশকাত হা/৫৩৫৫।

[23]. মুসলিম হা/২৫৮৮; মিশকাত হা/১৮৮৯।

[24]. মুসলিম হা/২৫৯৪; মিশকাত হা/৫০৬৮।

[25]. ছহীহ ইবনু হিববান হা/১৭৭৭; আলবানী, সনদ ছহীহ লিগাইরিহী।

[26]. নাসাঈ হা/৫৪৩৮; সনদ হাসান ছহীহ।