হিংসা ও অহংকার

মুমিনের কর্তব্য

একজন মুসলিমের কর্তব্য হ’ল সর্বদা সাদা মনের অধিকারী থাকা। তার অন্তরে যেন কারু প্রতি হিংসার কালিমা না থাকে। যদি কোন কারণ বশতঃ সেটা কখনো এসেই যায়, তবে বুদ্বুদের মত যেন তা উবে যায়। কচুর পাতার পানির মত যেন তা সঙ্গে সঙ্গে ঝরে যায়। হৃদয় যেন সকলের প্রতি উদার থাকে এবং শত্রু-মিত্র সকলের প্রতি হেদায়াতের আকাংখী থাকে। এমন অবস্থায় নিদ্রা যাবে, যেন তার হৃদয়ের কোণে কারু প্রতি হিংসার কালো মেঘ জমে না থাকে। কেননা এই নিদ্রা তার চিরনিদ্রা হ’তে পারে।

আব্দুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হ’ল শ্রেষ্ঠ মানুষ কে? তিনি বললেন,كُلُّ مَخْمُوْمِ الْقَلْبِ صَدُوْقِ اللِّسَانِ ‘প্রত্যেক শুদ্ধহৃদয় ও সত্যভাষী ব্যক্তি’। লোকেরা বলল, সত্যভাষীকে আমরা চিনতে পারি। কিন্তু শুদ্ধহৃদয় ব্যক্তিকে আমরা কিভাবে চিনব? জবাবে তিনি বললেন, هُوَ التَّقِىُّ النَّقِىُّ لاَ إِثْمَ فِيْهِ وَلاَ بَغْىَ وَلاَ غِلَّ وَلاَ حَسَدَ ‘সে হবে আল্লাহভীরু ও পরিচ্ছন্ন হৃদয়; যাতে কোন পাপ নেই, সত্যদ্রোহিতা নেই, বিদ্বেষ নেই, হিংসা নেই’।[1] তাছাড়া বলা হয়ে থাকে. الْحَسُودُ لاَ يَسُودُ ‘হিংসুক কখনো নেতৃত্ব দিতে পারে না’। অতএব হিংসা ও প্রতিহিংসামূলক ক্রিয়াকলাপ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) অধিকাংশ হাদীছের শুরুতে বলেছেন, وَالَّذِى نَفْسِى بِيَدِهِ ‘আমার জীবন যার হাতে নিহিত’। এর মাধ্যমে তিনি সর্বদা নিজের মৃত্যু ও আল্লাহকে স্মরণ করতেন। আমরাও যদি ভাবি আমাদের জীবনের সুইচ আল্লাহর হাতে। যেকোন সময় তা অফ হয়ে যাবে আল্লাহর হুকুমে। অথবা ভাবি, যেকোন সময়ে আমার চোখের আলো নিভে যাবে ও জীবনের স্পন্দন থেমে যাবে তাঁর হুকুমে, তাহ’লে কি হিংসা-বিদ্বেষ কারু মনে দানা বাঁধতে পারবে? অতএব হিংসার আগুন থেকে আমরা আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন-আমীন!



[1]. ইবনু মাজাহ হা/৪২১৬; মিশকাত হা/৫২২১; ছহীহাহ হা/৯৪৮।