গল্পের মাধ্যমে জ্ঞান

মূর্খ চিকিৎসক

জনৈক মূর্খ চিকিৎসক ভুল চিকিৎসা করে মৃত্যুর বাজার গরম করে ফেলেছিল। এ সত্ত্বেও সে নিজেকে ইবনে সীনা, লোকমান হেকিম ও প্লেটো মনে করতো। আর ঐ শহরেই একজন অভিজ্ঞ নামকরা হেকিম ছিলেন। বয়সের দরুন তার চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে গিয়েছিল। ইতিমধ্যে সে দেশের বাদশাহর ছেলে খুব কঠিন রোগে একেবারে শয্যাশায়ী হয়ে পড়ল। বাদশাহ সেই নামকরা অভিজ্ঞ ডাক্তারকে দরবারে ডাকালেন। সে রোগীর অবস্থা শুনে বলল, এর একমাত্র ঔষধ ‘মুহরান চূর্ণ’। অর্থাৎ কিছু চিনি ও দারুচিনি একসাথে মিশ্রণ করে সেবন করাতে হবে। মুহরান চূর্ণটি আমি বাদশাহী দাওয়াখানায় একটি তালাবদ্ধ রৌপ্যের কৌটায় সংরক্ষিত দেখেছি। আমি চোখে ভালো দেখতে পাই না, তা না হ’লে ঠিকঠাক বের করে আনতে পারতাম। সেই মহামূর্খ হেকিম যে সকল মূর্খের উপর মাতববরী করতো, বাদশাহর লোকজন তার নিকট গিয়ে এ ঘটনা বর্ণনা করল। সব শুনে সে বলল, হতে পারে অন্ধ হেকিম কোন ফাঁকে আমার নিকট থেকে এ নিয়মটি শুনে নিয়েছে। কারণ এ ঔষধ তৈরির নিয়ম-কানুন আমি খুব ভাল করেই জানি। তার এ ধরনের কথাবার্তার খবর বাদশাহর কানেও পৌঁছল। তিনি এসব শুনে খুব খুশি হয়ে তাকে বাদশাহী দাওয়াখানায় পাঠিয়ে দিলেন। সেখানে একই ধরনের অসংখ্য কৌটা দেখতে পেয়ে তার মাথা বিগড়ে গেল। আসলে সে তো মহামূর্খ, তাই কিছু বুঝতে না পেরে নিজের বড়ত্ব যাহির করার জন্য আন্দাজে একটা কৌটা হাতে তুলে নিল। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, সে কৌটায় ছিল মারাত্মক বিষ। সে তাড়াতাড়ি তা খুলে চিনি আর দারুচিনি মিশিয়ে শাহজাদাকে সেবন করিয়ে দিল। সেবন করা মাত্রই শাহজাদা মারা গেল। বাদশাহ এ দুর্ঘটনায় খুবই মর্মাহত হলেন এবং অবশিষ্ট ঔষধ পরীক্ষামূলকভাবে মহামূর্খ হেকিমকে সেবন করিয়ে দিলেন। সে খেতে না খেতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল।

শিক্ষা : না জেনে কাজ করার পরিণতি খুবই মন্দ হয়।