গল্পের মাধ্যমে জ্ঞান

ওমর বিন আব্দুল আযীয (রহঃ)-এর সাদাসিধে জীবনযাপন

খলীফা ওমর বিন আব্দুল আযীয (রাঃ) আড়াই বছর খেলাফতে থাকার পর মাত্র সাড়ে ৩৯ বছর বয়সে শক্রদের বিষ প্রয়োগে শাহাদত বরণ করেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হ’ল যে, তিনি দুটি বদ্ধ ঘরে সোনা-দানা ভর্তি করে রেখে গিয়েছেন, যার সবই রাষ্ট্রীয় বায়তুল মাল থেকে তিনি আত্মসাৎ করেছেন। পরবর্তী খলীফা ইয়াযীদ বিন আব্দুল মালেক অভিযোগকারীকে সাথে নিয়ে ওমরের বাড়ীতে গিয়ে উক্ত কক্ষ দু’টি খুললেন। দেখা গেল সেখানে আছে কেবল একটি চামড়ার চেয়ার, একটি পিতলের বদনা, ৪টি পানির কলসি। অন্য ঘরে  আছে একটি খেজুর পাতার চাটাই, যা মুছাল্লা হিসাবে রাখা হয়েছে। আর আছে ছাদের সঙ্গে ঝুলানো একটি শিকল। যার নীচে গোলাকার একটি বেড়ী রয়েছে, যার মধ্যে মাথা ঢুকানো যায়। ইবাদতে রাত কাটানোর সময় কাহিল হয়ে পড়লে বা ঝিমুনি আসলে এটা তিনি মাথায় ঢুকিয়ে দিতেন, যাতে ঘুমিয়ে না পড়েন। সেখানে একটি সিন্দুক পেলেন, যার মধ্যে একটি টুকরী পেলেন। যাতে ছিল একটি জামা ও একটি ছোট পাজামা।

আর তাঁর পরিত্যক্ত বস্ত্তর মধ্যে তাঁর স্ত্রীর কাছ থেকে পেলেন, তালি দেওয়া একটা জামা ও একটি মোটা জীর্ণশীর্ণ চাদর। এ অবস্থা দেখে খলীফা কেঁদে ফেললেন এবং অভিযোগকারী ভাতিজা ওমর ইবনে ওয়ালীদ ইবনে আব্দুল মালেক লজ্জিত হয়ে বললেন, ‘আসতাগফিরুল্লাহ’। আমি কেবল লোকমুখে শুনেই অভিযোগ করেছিলাম (আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ৯/২২৩)

শিক্ষা : ইসলামী খিলাফতের খলীফাগণ এমনই মহত্তম দৃষ্টান্ত পৃথিবীবাসীর জন্য রেখে গেছেন, যা শত্রু-মিত্র সকলের জন্য এক চিরন্তন শিক্ষা বহন করে।