ফিরক্বা নাজিয়াহ

নাজী কারা?

এর জবাবে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) থেকে তিনটি বক্তব্য এসেছে। এক- مَا أَنَا عَلَيْهِ وَأَصْحَابِيْ ‘যার উপরে আমি ও আমার ছাহাবীগণ আছি’। অর্থাৎ এখানে কেবল তরীকা ও বৈশিষ্ট্যের কথা বলা হয়েছে। দুই- وَهِيَ الْجَمَاعَةُ ‘সেটি হ’ল জামা‘আত’।[1] যার অর্থ جماعة الصحابة ‘ছাহাবীগণের জামা‘আত’। প্রশস্ত অর্থে, الموافقون لجماعة الصحابة والآخذون بعقائدهم والمتمسكون بطريقتهم ‘ছাহাবীগণের জামা‘আতের অনুগামী, তাঁদের আক্বীদাসমূহের ধারণকারী এবং তাঁদের তরীকার সনিষ্ঠ অনুসারী’। তিন- السَّوَادُ الأَعْظَمُ ‘বড় দল’।[2] অর্থাৎ বড় দল ব্যতীত ছোট দল সব জাহান্নামী হবে। অথচ সংখ্যায় বড় দল হওয়ার কোন গুরুত্ব ইসলামে নেই। কেননা আল্লাহ বলেন, وَإِنْ تُطِعْ أَكْثَرَ مَنْ فِي الْأَرْضِ يُضِلُّوكَ عَنْ سَبِيلِ اللهِ إِنْ يَتَّبِعُونَ إِلاَّ الظَّنَّ وَإِنْ هُمْ إِلاَّ يَخْرُصُونَ ‘যদি তুমি অধিকাংশ লোকের অনুসরণ করো, তাহ’লে ওরা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করে ফেলবে। কেননা ওরা কেবল ধারণার অনুসরণ করে এবং অনুমান ভিত্তিক কথা বলে’ (আন‘আম ৬/১১৬)। সে কারণ ছাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন مَنِ السَّوَادُ الْأَعْظَمُ يَا رَسُوْلَ اللهِ؟ ‘বড় দল কোনটি হে আল্লাহর রাসূল’? জবাবে তিনি বললেন, مَنْ كَانَ عَلىَ مَا أَنَا عَلَيْهِ وَأَصْحَابِيْ ‘যে ব্যক্তি আমি ও আমার ছাহাবীগণ যার উপরে আছি, তার অনুসারী হবে’।[3] অর্থাৎ এখানে ‘বড়’ সংখ্যায় নয়, বরং মর্যাদায় বড়। কেননা আল্লাহ বলেন, وَقَلِيلٌ مِنْ عِبَادِيَ الشَّكُورُ ‘আমার কৃতজ্ঞ বান্দার সংখ্যা কম হবে’ (সাবা ৩৪/১৩)। ফলে দেখা যাচ্ছে যে, বর্ণিত তিনটি বক্তব্যের সারমর্ম একটাই। আর তা হ’ল, যে দল রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের আক্বীদা ও আমলের এবং তাঁদের গৃহীত তরীকা ও রীতি-পদ্ধতির অনুসারী হবে, সে দল হ’ল ফের্কায়ে নাজিয়াহ বা মুক্তিপ্রাপ্ত দল।

নিঃসন্দেহে তারা হ’লেন ‘আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আহ’ অর্থাৎ যথার্থভাবেই নবীর সুন্নাত ও ছাহাবীগণের জামা‘আতের অনুসারী ব্যক্তি বা দল। এ বিষয়ে বিদ্বানগণের কিছু বক্তব্য নিম্নে উদ্ধৃত হ’ল।-


[1]. ইবনু মাজাহ হা/৩৯৯২; আহমাদ আবুদাঊদ হা/৪৫৯৭; মিশকাত হা/১৭২।

[2]. মুসনাদে আবী ইয়া‘লা হা/৩৯৪৪, আলবানী সনদ যঈফ; মিশকাত হা/১৭৪।

[3]. ত্বাবারাণী কাবীর হা/৭৬৫৯ সনদ যঈফ; সৈয়ূত্বী, জাম‘উল জাওয়ামে‘ হা/৫৬৯।