ফিরক্বা নাজিয়াহ

ফিরক্বা নাজিয়াহ-এর পরিচয় : এক নযরে

১. বর্ণিত হাদীছে ফিরক্বা নাজিয়াহ বলতে জাহান্নাম থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত দলকে বুঝানো হয়েছে।

২. ৭৩ ফেরক্বার মধ্যে একটি মাত্র দল শুরু থেকেই জান্নাতী হবে। যারা রাসূল (ছাঃ) ও তাঁর ছাহাবীগণের আক্বীদা ও আমলের যথার্থ অনুসারী হবে। এর দ্বারা বুঝা যায় যে, ‘হক মাত্র একটাই হয়, একাধিক নয়’।

৩. নাজী ফের্কা হ’ল প্রথম যুগে ছাহাবী, তাবেঈ ও তাবে তাবেঈগণের দল এবং তার পরে সর্বযুগে আহলেহাদীছের দল।

৪. তাদের বৈশিষ্ট্য হ’ল সাতটি :

(১) তারা সংস্কারক হবেন (২) আক্বীদার ক্ষেত্রে সর্বদা মধ্যপন্থী হবেন এবং কখনোই চরমপন্থী বা শৈথিল্যবাদী হবেন না (৩) আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর ক্ষেত্রে তারা পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের প্রকাশ্য অর্থের অনুসারী হবেন এবং তারা ছাহাবায়ে কেরাম ও সালাফে ছালেহীনের বুঝ অনুযায়ী শরী‘আত ব্যাখ্যা করেন (৪) তারা জামা‘আতবদ্ধভাবে আল্লাহর রাস্তায় সংগ্রাম করেন এবং কখনোই উদ্ধত ও বিশৃংখলা সৃষ্টিকারী হন না (৫) তারা কুফর ও কুফরী শক্তির বিরুদ্ধে কঠোর ও শক্তিশালী থাকেন এবং নিজেদের মধ্যে সর্বদা রহমদিল ও আল্লাহর প্রতি বিনীত থাকেন (৬) তাঁরা যেকোন মূল্যে সুন্নাতকে অাঁকড়ে থাকেন ও বিদ‘আত হ’তে দূরে থাকেন (৭) তারা সর্বাবস্থায় সমবেতভাবে হাবলুল্লাহকে ধারণ করে থাকেন এবং কখনোই সেখান থেকে বিচ্ছিন্ন হন না। কেউ তাদেরকে ছেড়ে গেলে সে অবস্থায় তারা আল্লাহর উপর ভরসা করেন ও তাঁর গায়েবী মদদ কামনা করেন।

৫. ফের্কাবন্দীর প্রধান কারণ হ’ল প্রবৃত্তিপরায়ণতা। রাসূল (ছাঃ) যাকে কুকুরের বিষের সঙ্গে তুলনা করেছেন। যা দ্রুত সারা দেহে ছড়িয়ে পড়ে ও রোগীকে মেরে ফেলে। প্রবৃত্তিপূজা তেমনি দ্রুত সমাজকে ভেঙ্গে বিনষ্ট করে দেয়।

কুরআন ও হাদীছের উপরে নিজের যুক্তিকে অগ্রাধিকার দেওয়াকেই প্রবৃত্তিপূজা বলা হয়, যাকে কুরআনে ‘উপাস্য’ বলে অভিহিত করা হয়েছে (ফুরক্বান ২৫/৪৩)

৬. ফিরক্বা নাজিয়াহর নিদর্শন ৪টি :

(১) তারা আক্বীদা, ইবাদত ও আচরণে রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের নীতির উপর দৃঢ় থাকেন এবং সর্বদা ছহীহ হাদীছের উপর আমল করেন। তারা মানুষের সাথে সদ্ব্যবহার করেন এবং আপোষে মহববতের সম্পর্ক অটুট রাখেন।

(২) তারা সকল বিষয়ে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের দিকে ফিরে যান এবং সালাফে ছালেহীন ও মুহাদ্দিছ বিদ্বানগণের মাসলাক অনুসরণে যুগ-জিজ্ঞাসার জবাব দেন।

(৩) তারা ব্যাখ্যাগত মতভেদ-কে লঘু করে দেখেন এবং কখনোই তাকে দলীয় বিভক্তিতে পরিণত করেন না।

(৪) তারা সর্বদা উত্তম মুমিন হওয়ার জন্য চেষ্টিত থাকেন এবং এজন্য সর্বদা আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করেন।

-----০০-----