আহলেহাদীছ আন্দোলন কি ও কেন?

আহলেহাদীছের ইস্তিদলালী পদ্ধতি (طريق الاستدلال لأهل الحديث)

শাহ অলিউল্লাহ দেহলভী (রহঃ) ইসলামী বিধান প্রণয়নে আহলেহাদীছ বিদ্বানদের অনুসৃত ‘ইস্তিদলালী পদ্ধতি’ বা দলীল গ্রহণের নীতিমালা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, ‘(১) কোন বিষয়ে কুরআনের স্পষ্ট নির্দেশ পেলে তাঁরা তাই গ্রহণ করেন। অন্যদিকে মুখ ফিরানোকে তাঁরা জায়েয মনে করেন না (২) কোন বিষয়ে কুরআনের কোন নির্দেশ অস্পষ্ট হ’লে সেক্ষেত্রে ‘সুন্নাহ’ ফায়ছালাকারী হবে। উক্ত হাদীছ সর্বত্র প্রচারিত থাকুক বা না থাকুক, তার উপরে ছাহাবীগণ বা ফক্বীহগণ আমল করুন বা না করুন। কোন বিষয়ে ‘হাদীছ’ পাওয়া গেলে তার বিপরীতে কোন ছাহাবীর ‘আছার’ কিংবা কোন মুজতাহিদের ‘ইজতিহাদ’ গ্রহণযোগ্য হবে না (৩) সার্বিক প্রচেষ্টার পরেও কোন বিষয়ে হাদীছ না পাওয়া গেলে আহলেহাদীছগণ ছাহাবী ও তাবেঈগণের যেকোন একটি জামা‘আতের সিদ্ধান্ত অনুসরণ করেন। এক্ষেত্রে তাঁরা কোন একটি দল, শহর বা এলাকার অধিবাসীকে নির্দিষ্টভাবে অগ্রগণ্য মনে করেন না (৪) যদি কোন বিষয়ে খুলাফায়ে রাশেদীন ও ফক্বীহগণ একমত হন, তবে  তাকেই তাঁরা যথেষ্ট মনে করেন (৫) কিন্তু যদি সেখানে মতভেদ থাকে, তবে তাঁদের মধ্যে যিনি সর্বাধিক বিদ্বান, পরহেযগার ও স্মৃতিধর তাঁর কথা অথবা তাঁদের মধ্যকার সর্বাধিক প্রসিদ্ধ কথাটি গ্রহণ করেন (৬) যখন কোন বিষয়ে সমশ্রেণীভুক্ত দু’টি বক্তব্য পাওয়া যায়, তখন সেক্ষেত্রে তাঁরা দু’টিকেই গ্রহণযোগ্য মনে করেন (৭) কিন্তু যখন সেটিতেও ব্যর্থ হন, তখন তাঁরা কিতাব ও সুন্নাতের সাধারণ নির্দেশ ও ইঙ্গিতসমূহ এবং উদ্দেশ্যাবলী অনুধাবন করেন। অতঃপর উক্ত বিষয়ে তাঁরা প্রচলিত কোন উছূল বা ব্যবহারিক আইন সূত্রের অনুসরণ করেন না। বরং যে কথাটি তাঁরা উত্তমরূপে বুঝতে পারেন ও যা তাঁদের হৃদয়কে সুশীতল করে, তারই অনুসরণ করেন’।[1]



[1]. শাহ অলিউল্লাহ, ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ (কায়রো : দারুত তুরাছ, ১ম সংস্করণ ১৩৫৫/১৯৩৬), ১/১৪৯ পৃঃ, ‘আহলুল হাদীছ ও আহলুর রায়-এর পার্থক্য’ অনুচ্ছেদ।